মালদা, 14 জুলাই : হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের মৃত্যুর তদন্তে নেমে মালদার দুই ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে ৷ মালদার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়াকে ফোন করে উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার জানান, এই ঘটনার তদন্তে ওই দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন ৷ আজ ভোরে তাদের মধ্যে একজনকে আটক করা হয় ৷ পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । আর একজন পলাতক ৷
মালদা পুলিশ সূত্রে খবর, বিধায়কের মৃত্যুর ঘটনায় রায়গঞ্জ পুলিশ এই জেলার যে দু’জনের খোঁজ করছে তাদের একজনের নাম নিলয় সিংহ ৷ সে মালদা শহরের মকদুমপুর এলাকার একটি আবাসনের বাসিন্দা ৷ আর একজনের নাম মাবুদ আলি ৷ তার বাড়ি চাঁচল 1 ব্লকের মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দারিয়াপুর গ্রামে ৷ নিলয় সিংহ রায়গঞ্জের একটি সমবায় ব্যাঙ্কের কর্মী ৷ তার স্ত্রী মালদা শহরের একটি বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষিকা ৷ গতকাল রাত দেড়টা নাগাদ ইংরেজবাজার থানার পুলিশ তাদের আবাসনে হানা দেয় ৷ কিন্তু সেই সময় নিলয় নিজের ফ্ল্যাটে ছিল না ৷ পুলিশ তার স্ত্রীকে জানিয়ে আসে, নিলয় ফিরলেই যেন থানায় খবর দেওয়া হয় ৷ অবশেষে খবর পেয়ে আজ ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ নিলয়কে তার ফ্ল্যাট থেকে আটক করে পুলিশ ৷ তদন্তে নেমে জেলা পুলিশ জানতে পেরেছে , নিলয় যে ব্যাঙ্কে কাজ করে সেখানকার পরিচালন কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন দেবেন্দ্রনাথ রায় ৷ বিধায়ক কয়েকজনকে ঋণ পাইয়ে দিয়েছিলেন ৷ নিলয়ের মাধ্যমেই সেই সব ঋণ অনুমোদিত হয়েছিল ৷ তার সঙ্গে ভালো যোগাযোগ রয়েছে চাঁচলের মাবুদ আলির ৷ চাঁচল থানার পুলিশ সূত্রে খবর, মাবুদের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে । বর্তমানে সে রায়গঞ্জেই বেশি থাকত ৷ সেখানে সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে অনেককে ঋণ পাইয়ে দিয়েছে ৷ তাদের থেকে মোটা কমিশনও আদায় করত সে ৷ গতকাল রাতে চাঁচল থানার পুলিশ তার বাড়িতে হানা দেয় ৷ কিন্তু বিকেলের পর তাকে এলাকায় কেউ দেখতে পায়নি ৷ পুলিশের সন্দেহ, বিধায়কের দেহ উদ্ধারের পরই গা ঢাকা দিয়েছে মাবুদ ৷
জেলা পুলিশের সন্দেহ, ঋণের কমিশনে মাবুদের সঙ্গে যোগ রয়েছে নিলয়েরও ৷ তবে এর মধ্যে বিধায়ক কী করে ঢুকলেন তা এখনও জানতে পারেনি পুলিশ ৷ বিষয়টি নিয়ে মালদার পুলিশ সুপার কিংবা কোনও পুলিশ আধিকারিক সরাসরি কিছু বলতে রাজি নন ৷ তাঁদের বক্তব্য, এই বিষয়ে রায়গঞ্জ পুলিশই যা বলার বলবে ৷ রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, "বিধায়কের পকেট থেকে যে সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে তাতে মালদা জেলার দু'জনের নাম রয়েছে ৷ এই দু'জনকে আমরা হাতে পেতে চাই ৷ তার জন্য মালদা জেলা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে ৷"
নিলয় সিংহ বলে, "এই ঘটনায় আমার নাম কেন জড়াল বুঝতে পারছি না ৷ আমি এই ঘটনার সঙ্গে কোনওভাবেই যুক্ত নই ৷ মাবুদ দোষ করেছে ৷ আর নাম জড়িয়েছে আমার ৷ "