মালদা, 9 নভেম্বর : জামাই-শ্বশুরের পুরোনো বিবাদে প্রাণ গেল এক ব্যক্তির ৷ ওই ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগ উঠেছে শ্বশুর-সহ 3 জনের বিরুদ্ধে ৷ মালদার বৈষ্ণবনগর থানার সুকদেবপুর গ্রামের ঘটনা ৷ ঘটনায় মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে 3 জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ৷ আজ মালদা মেডিকেলে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে ৷ মৃতের নাম তপন রায় (45) ৷ তিনি সুকদেবপুর গ্রামেরই বাসিন্দা ৷ পেশায় কৃষক ছিলেন ৷ তপনবাবুর দীর্ঘদিনের বন্ধু ওই গ্রামের পলাশ ত্রিবেদী ৷ এই পলাশবাবুকে নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত ৷
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, পঙ্কজবাবুর সঙ্গে ওই গ্রামেরই দ্বিজেন্দ্রনাথ দুবের মেয়ে পিঙ্কির বিয়ে হয়েছিল ৷ তবে বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে তাঁদের মধ্যে কোনও বনিবনা নেই ৷ বর্তমানে স্বামী-স্ত্রী আলাদা থাকেন ৷ যদিও তাঁদের এখনও আইনি বিচ্ছেদ হয়নি ৷ সম্প্রতি, দ্বিজেন্দ্রনাথ নিজেদের একটি জমি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয় ৷ সেই জমি তপনবাবু কিনতে চান ৷ তিনি গতকাল রাতে জমি কেনার প্রস্তাব নিয়ে দ্বিজেন্দ্রনাথের বাড়ি গেছিলেন ৷ কিন্তু পলাশের বন্ধু হওয়ায় তাকে জমি বিক্রি করতে চায়নি দ্বিজেন্দ্রনাথ ৷
অভিযোগ, সেই সময় দ্বিজেন্দ্রনাথ তার মেয়ে-সহ আরও একজন বাঁশ দিয়ে তপনবাবুকে বেধড়ক মারধর করে ৷ তার মাথাতেও আঘাত করা হয় ৷ রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তপনবাবু ৷ গ্রামবাসী ও পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে তাকে তড়িঘড়ি স্থানীয় গোলাপগঞ্জ স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পরে মালদা মেডিকেলে নিয়ে আসেন ৷ মেডিকেল থেকে রাতেই তপনবাবুকে কলকাতায় রেফার করে দেওয়া হয় ৷ তবে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তার ৷ এরপর মৃতদেহ মাঝরাস্তা থেকে গ্রামে ফিরিয়ে আনা হয় ৷ পরে বৈষ্ণবনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় ৷ এরপর পুলিশ দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেলে পাঠায় ৷
এবিষয়ে তপনবাবুর ভাইপো বিক্রম রায় বলেন, " দ্বিজেন্দ্রনাথ দুবে কিংবা পিঙ্কি ত্রিবেদীর সঙ্গে কাকার কোনও ঝামেলা ছিল না ৷ গতকাল রাতে কাকা বাইক নিয়ে যাচ্ছিল ৷ পথে দ্বিজেন্দ্রনাথের বাড়ির সামনে বাইক দাঁড় করিয়ে তাদের সঙ্গে জমি কেনার প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলছিল ৷ তখনই পিঙ্কি, দ্বিজেন্দ্রনাথরা কাকাকে বাঁশ দিয়ে মারধর করতে শুরু করে ৷ পরে তাকে আমরা গোলাপগঞ্জ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসকরা মালদা মেডিকেলে রেফার করে দেন ৷ সেখান থেকে তাকে কলকাতা রেফার করে দেওয়া হয় ৷ কিন্তু কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয় ৷ আমরা বৈষ্ণবনগর থানায় দ্বিজেন্দ্রনাথ দুবে, পিঙ্কি ত্রিবেদী ও আনন্দ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছি ৷ ইতিমধ্যে পুলিশ দ্বিজেন্দ্রনাথকে গ্রেপ্তার করেছে ৷ তবে বাকি দু’জন এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে ৷ "
বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় ইতিমধ্যে দ্বিজেন্দ্রনাথ দুবেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৷ তবে পিঙ্কি ত্রিবেদী ও আনন্দ সরকার পলাতক ৷ তাদের খোঁজ চলছে ৷ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে ৷ তার রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে ৷