মালদা, 8 অক্টোবর : 300 বছরের প্রাচীন রীতি মেনে আজও প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় লণ্ঠনের আলোয় নদীঘাটের পথ দেখান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ ৷ পুরোনো প্রথা মেনেই চাঁচলের পাহাড়পুর এলাকায় চলে আসছে এই নিয়ম ৷
পাহাড়পুর দুর্গামন্দির থেকে প্রতিমাকে নিয়ে যাওয়া হয় 200 মিটার দূরে মরা মহানন্দায় ৷ দুই সম্প্রদায়ের মানুষের উপস্থিতিতে দেবীমূর্তিতে নদীতে নিরঞ্জন দেওয়া হয় ৷ 300 বছরেরও আগে চণ্ডীরূপে দুর্গাপুজোর প্রচলন শুরু করেছিলেন চাঁচলের রাজা শরৎচন্দ্র রায়চৌধুরি ৷ এখানে দেবী চতুর্ভূজা ৷ প্রথমে পাহাড়পুর সংলগ্ন নদীঘাটে একটি অস্থায়ী মন্দিরে দেবীর পুজো হত ৷ রাজবাড়ি থেকে চণ্ডীমূর্তি আনা হত সেই মন্দিরে ৷ পরে পাহাড়পুরে দেবীর স্থায়ী মন্দির নির্মিত হয় ৷
মাটির প্রতিমা তৈরি করে সেখানে পুজো দেওয়ার পাশাপাশি মহাষষ্ঠীতে রাজবাড়ি থেকে এখনও আনা হয় কষ্টিপাথরের চণ্ডীমূর্তি ৷ তবে পুজো শেষের সঙ্গে সঙ্গে মূর্তি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় রাজবাড়িতে ৷ দশমীর গোধূলি লগ্নে মাটির প্রতিমা বিসর্জন করা হয় মরা মহানন্দায় ৷
এলাকাবাসীরা জানান, 300 বছরেরও বেশি সময় আগে পাহাড়পুর সংলগ্ন এলাকায় মড়ক দেখা গিয়েছিল ৷ তখন এলাকার সংখ্যালঘুদের এক প্রতিনিধি দেবীর স্বপ্নাদেশ পান ৷ দেবীর নিরঞ্জনের সময় ঘাটে যাওয়ার রাস্তায় আলো দেখাতে হবে তাঁদের ৷ তবেই মড়ক থেকে রক্ষা পাবে সবাই ৷ তখন থেকেই দেবীর নিরঞ্জনের সময় পাহাড়পুর থেকে নদীঘাট পর্যন্ত রাস্তার ধারে ও নদীর দুই পাড়ে আলো নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন ৷ এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি ৷
এই পুজো এখন আর শুধু রাজার পুজো নয় ৷ এখন এই পুজো সর্বজনীন রূপ পেয়েছে ৷ পাহাড়পুর রাজবাড়ি চণ্ডীপুজো কমিটির সভাপতি সুদর্শন দাস বলেন, "প্রাচীন রীতি মেনে আজ গোধূলি লগ্নে দেবীর মূর্তি নিরঞ্জন করা হল ৷"