মালদা, 26 অগস্ট: শুক্রবার ফিরেছিল 18টি, শনিবার মিজোরাম থেকে ফিরল আরও চার শ্রমিকের কফিনবন্দি দেহ ৷ মালদা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে দাঁড়িয়ে ফিরে আসা দেহগুলি গ্রামে পাঠাতে উদ্যোগ নিলেন পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব এবং অতিরিক্ত জেলাশাসক বৈভব চৌধুরী ৷ উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামও ৷ এদিন মর্গে গিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও ৷ আর সেখানেই সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ উগরে দেন ৷ কটাক্ষ করে রাজ্যপালকে ‘পদ্মপাল’ বলতেও ছাড়েননি তিনি ৷
মালদা মেডিক্যালের মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে সাবিনা এদিন বলেন, “গতকাল আমরা সসম্মানে প্রতিটি দেহ পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছি ৷ আজও চারটি দেহ ফিরে এসেছে ৷ দেহগুলি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে ৷ কিন্তু দুঃখের বিষয়, মৃত শ্রমিকদের পরিবারকে রেল কিংবা আমরা কী দিলাম, সেটা বড় বিষয় নয় ৷ তার থেকেও বড় বিষয়, মৃতদেহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ৷ দুর্ঘটনাটি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ রেলের কাজে হয়েছে ৷ কিন্তু একটা সরকার কীভাবে এতটা অমানবিক হতে পারে তা বুঝতে পারা যাচ্ছে না ৷ যেভাবে মৃতদেহগুলি জেলায় ফেরৎ পাঠানো হয়েছে, তা না-দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন ৷ মনে হচ্ছে, মৃতদের পরিবারকে টাকা দিয়েই সব দায় সেরে নেওয়া হল ৷ রাজ্যপাল এখানে পদ্মপালের ভূমিকায় এসে মৃতের পরিবারের হাতে টাকা দিয়ে চলে গেলেন ৷ উচিত ছিল, রেলমন্ত্রী বা অন্য কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিংবা রেল দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের এখানে আসা ৷"
আরও পড়ুন: সমস্তিপুর আদালত চত্বরে দুষ্কৃতীর তাণ্ডব, গুলিবিদ্ধ 2 বিচারাধীন বন্দি
তাঁর কথায়, "রাজ্যপালের ভূমিকায় আমরা বিস্মিত ৷ তাঁর বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল ৷ তিনি সেই টিকিট বাতিল করে তিস্তা তোর্ষা এক্সপ্রেসে কলকাতা ফিরেছেন ৷ অথচ রাতে তিনি একবারের জন্যও মেডিক্যালে এসে মৃত শ্রমিকদের সম্মান দেখানোর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করলেন না ৷ আমরা তাঁকে ধিক্কার জানাচ্ছি ৷" রাজ্যপাল এখানে শুধু রাজনীতি করতে এসেছিলেন বলেও অভিযোগ করেন সবিনা ৷ সাবিনার মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পার্থসারথি ঘোষ বলেন, “উনি মন্ত্রী হতে পারেন, কিন্তু সম্ভবত ঘটনার খোঁজখবর রাখেননি ৷ মৃতদেহ উদ্ধার থেকে শুরু করে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া পর্যন্ত প্রাথমিক কাজগুলি বিজেপি’ই করেছে ৷ মৃতদেহ বাড়িতে পৌঁছনোর আগে কেন্দ্রীয় সরকার পরিবারের হাতে আর্থিক সাহায্য পৌঁছে দিয়েছে ৷ কেন্দ্রের কোনও সাহায্য পৌঁছনোর ক্ষেত্রে বহু জটিলতা থাকে ৷ প্রতিটি পরিবারকে 10 লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে ৷ তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রামে গিয়েছেন ৷ তাঁরা কী করেছেন, তার একটা উদাহরণ দিন ৷"