ETV Bharat / state

Potato Farmers in Crisis : হিমঘরের বন্ডের অভাবে সংকটে মালদার আলুচাষিরা - Malda's Potato Farmers in Crisis Due to lack of Cold Storage Bonds

হিমঘরের বন্ড জোটেনি । ফাঁকা মাঠে কিংবা আমবাগানে পড়ে রয়েছে আলু । সংকটে চাষিরা (Malda's Potato Farmers in Crisis Due to lack of Cold Storage Bonds) ।

Potato Farmers
Potato Farmers
author img

By

Published : Apr 10, 2022, 4:48 PM IST

মালদা, 9 এপ্রিল : অকাল বৃষ্টি আগেই পথে বসিয়েছিল জেলার আলুচাষিদের। চাষিরা আশঙ্কা করেছিলেন, দু’বছর আগের মতো এবারও জমি থেকে আলু ঘরে তুলতে পারবেন না তাঁরা । যদিও পরের দিকে আবহাওয়া স্বাভাবিক হয় । তাই এবার কিছু আলু অন্তত জমি থেকে তুলতে পেরেছেন তাঁরা । কিন্তু শুধু বিরূপ আবহাওয়া নয়, আলুচাষিদের লড়তে হচ্ছে জমি থেকে ফসল তোলার পরেও । একেই জেলায় পর্যাপ্ত হিমঘর নেই, তার উপর আলুর বন্ড নিয়ে চলছে কালোবাজারি । তাই অনেক চাষি জমি থেকে তোলা আলু আমবাগান কিংবা ঘরে মজুত করে রেখেছেন । অথবা নামমাত্র দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন । তাঁদের বক্তব্য, প্রশাসন এদিকে নজর না দিলে তাঁদের হয়তো এই চাষ থেকে সরে আসতে হবে (Malda's Potato Farmers in Crisis Due to lack of Cold Storage Bonds) ।

প্রসঙ্গত, মালদা জেলায় সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদন হয় পুরাতন মালদা ব্লকে । তারপরেই রয়েছে গাজোল ব্লক । কিন্তু উৎপাদিত আলু মজুত রাখার জন্য জেলায় পর্যাপ্ত হিমঘর নেই । বিষয়টি জানেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও । সম্প্রতি তিনি মালদার প্রশাসনিক সভায় আরও হিমঘর তৈরির জন্য জেলার ব্যবসায়ীদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন । কিন্তু এখনও পর্যন্ত নতুন কোনও হিমঘর তৈরি হয়নি । বর্তমানে পুরাতন মালদা ব্লকে চারটি আর গাজোল ব্লকে তিনটি হিমঘর রয়েছে । চাষিরা জানাচ্ছেন, আরও হিমঘর তৈরি হলে তাঁদের আলু মজুত করার সমস্যা থাকবে না ।

পুরাতন মালদার মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেই প্রায় 3100 হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয় । ওই পঞ্চায়েতের সাহারা গ্রামের আলুচাষি মনোরঞ্জন সরকার বলেন, "এবার আমি 10-12 বিঘা আলু চাষ করেছি । প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে 30 হাজার টাকা । বৃষ্টির জন্য যে ফলনের আশা করেছিলাম তার কিছুই হয়নি । আমাদের খরচ তোলাই মুশকিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে । বিঘা প্রতি 50 থেকে 70 প্যাকেট (50 কিলোর প্যাকেট) করে আলু পাওয়া যাচ্ছে । আলু বিক্রি করতে গিয়ে দেখছি বাজারে দাম নেই । হিমঘরে রাখতে গিয়ে বন্ড পাচ্ছি না । হিমঘরে রাখতে না পারায় আলু পচতে শুরু করেছে । এখন আলু কম দামে বাজারে বিক্রি করতে হবে ।"

গাজোলের পাণ্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চহিটপুর গ্রামের আলুচাষি সাবু রাজবংশী । লিজে জমি নিয়ে আলুচাষ করেন । এবারও সাড়ে 15 বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছিলেন । বেশিরভাগ আলু জমি থেকে উঠে গিয়েছে । অল্প কিছু জমিতে এখনও আলু তোলার কাজ চলছে । তিনি বলেন, "বিঘা প্রতি গড়ে 70 প্যাকেট আলু উৎপাদন হয়েছে । বর্তমানে বাজারে আলুর দাম কুইন্টাল প্রতি এক হাজার টাকা । অর্থাৎ 500 টাকা প্রতি প্যাকেট । হিমঘরের বন্ড পাইনি । হিমঘরের আলুর বন্ড আমরা চাষিরা পাই না । সব ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যায় । কালোবাজারি চলছে । 100 প্যাকেট বন্ডের জন্য দালালরা পাঁচ হাজার টাকা দাবি করছে । এত আলু কোথায় রাখব তা ভেবে উঠতে পারছি না । এখন ফেলা দামে আলু বিক্রি করতে হবে । এবার প্রতি বিঘা জমি পাঁচ হাজার টাকায় লিজ নিয়েছি । চাষের খরচ বিঘায় 30 হাজার টাকা । এবার চাষের খরচ উঠবে না । এভাবে প্রতি বছর ক্ষতির শিকার হতে হতে আমরা দেনায় ডুবে গিয়েছি । আমাদের দাবি, প্রশাসন আমাদের দিকে একটু নজর দিক । চাষিরা যাতে আলুর বন্ড পায় তার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন ।"

হিমঘরের বন্ডের অভাবে সংকটে মালদার আলু চাষিরা

পুরাতন মালদার আট মাইল এলাকার আলুচাষি হরিদাস রাজবংশী বলেন, "আমাদের এখানে বেশ কয়েকটি হিমঘর রয়েছে । কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা, চাষিরাই আলুর বন্ড পায় না । ফলে চাষিরা আলুর বীজ সংরক্ষণ করতে পারে না । আমাদেরও সন্দেহ হয়, এর পিছনে কালোবাজারি চলছে । এনিয়ে চাষিরা অনেকবার হিমঘর কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছে । কিন্তু তারা কোনও কথা বলেনি । বন্ডের বিষয়টি প্রশাসনের দেখা উচিত । এই এলাকার বেশিরভাগ আলু বাগানে পড়ে রয়েছে । তাতে আলু পচে যাচ্ছে । এতে আখেরে চাষিরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ।"

পুরাতন মালদার বিডিও ইরফান হাবিব বলেন, "চাষিরা বন্ডের বিষয় নিয়ে তাঁকে কোনও অভিযোগ জানাননি । তাই এই সমস্যার কথা তাঁর জানা ছিল না । তিনি এনিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন ।"

আরও পড়ুন : Two Arrested With Brown Sugar : মালদায় ব্রাউন সুগার-সহ গ্রেফতার 2

মালদা, 9 এপ্রিল : অকাল বৃষ্টি আগেই পথে বসিয়েছিল জেলার আলুচাষিদের। চাষিরা আশঙ্কা করেছিলেন, দু’বছর আগের মতো এবারও জমি থেকে আলু ঘরে তুলতে পারবেন না তাঁরা । যদিও পরের দিকে আবহাওয়া স্বাভাবিক হয় । তাই এবার কিছু আলু অন্তত জমি থেকে তুলতে পেরেছেন তাঁরা । কিন্তু শুধু বিরূপ আবহাওয়া নয়, আলুচাষিদের লড়তে হচ্ছে জমি থেকে ফসল তোলার পরেও । একেই জেলায় পর্যাপ্ত হিমঘর নেই, তার উপর আলুর বন্ড নিয়ে চলছে কালোবাজারি । তাই অনেক চাষি জমি থেকে তোলা আলু আমবাগান কিংবা ঘরে মজুত করে রেখেছেন । অথবা নামমাত্র দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন । তাঁদের বক্তব্য, প্রশাসন এদিকে নজর না দিলে তাঁদের হয়তো এই চাষ থেকে সরে আসতে হবে (Malda's Potato Farmers in Crisis Due to lack of Cold Storage Bonds) ।

প্রসঙ্গত, মালদা জেলায় সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদন হয় পুরাতন মালদা ব্লকে । তারপরেই রয়েছে গাজোল ব্লক । কিন্তু উৎপাদিত আলু মজুত রাখার জন্য জেলায় পর্যাপ্ত হিমঘর নেই । বিষয়টি জানেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও । সম্প্রতি তিনি মালদার প্রশাসনিক সভায় আরও হিমঘর তৈরির জন্য জেলার ব্যবসায়ীদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন । কিন্তু এখনও পর্যন্ত নতুন কোনও হিমঘর তৈরি হয়নি । বর্তমানে পুরাতন মালদা ব্লকে চারটি আর গাজোল ব্লকে তিনটি হিমঘর রয়েছে । চাষিরা জানাচ্ছেন, আরও হিমঘর তৈরি হলে তাঁদের আলু মজুত করার সমস্যা থাকবে না ।

পুরাতন মালদার মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেই প্রায় 3100 হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয় । ওই পঞ্চায়েতের সাহারা গ্রামের আলুচাষি মনোরঞ্জন সরকার বলেন, "এবার আমি 10-12 বিঘা আলু চাষ করেছি । প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে 30 হাজার টাকা । বৃষ্টির জন্য যে ফলনের আশা করেছিলাম তার কিছুই হয়নি । আমাদের খরচ তোলাই মুশকিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে । বিঘা প্রতি 50 থেকে 70 প্যাকেট (50 কিলোর প্যাকেট) করে আলু পাওয়া যাচ্ছে । আলু বিক্রি করতে গিয়ে দেখছি বাজারে দাম নেই । হিমঘরে রাখতে গিয়ে বন্ড পাচ্ছি না । হিমঘরে রাখতে না পারায় আলু পচতে শুরু করেছে । এখন আলু কম দামে বাজারে বিক্রি করতে হবে ।"

গাজোলের পাণ্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চহিটপুর গ্রামের আলুচাষি সাবু রাজবংশী । লিজে জমি নিয়ে আলুচাষ করেন । এবারও সাড়ে 15 বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছিলেন । বেশিরভাগ আলু জমি থেকে উঠে গিয়েছে । অল্প কিছু জমিতে এখনও আলু তোলার কাজ চলছে । তিনি বলেন, "বিঘা প্রতি গড়ে 70 প্যাকেট আলু উৎপাদন হয়েছে । বর্তমানে বাজারে আলুর দাম কুইন্টাল প্রতি এক হাজার টাকা । অর্থাৎ 500 টাকা প্রতি প্যাকেট । হিমঘরের বন্ড পাইনি । হিমঘরের আলুর বন্ড আমরা চাষিরা পাই না । সব ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যায় । কালোবাজারি চলছে । 100 প্যাকেট বন্ডের জন্য দালালরা পাঁচ হাজার টাকা দাবি করছে । এত আলু কোথায় রাখব তা ভেবে উঠতে পারছি না । এখন ফেলা দামে আলু বিক্রি করতে হবে । এবার প্রতি বিঘা জমি পাঁচ হাজার টাকায় লিজ নিয়েছি । চাষের খরচ বিঘায় 30 হাজার টাকা । এবার চাষের খরচ উঠবে না । এভাবে প্রতি বছর ক্ষতির শিকার হতে হতে আমরা দেনায় ডুবে গিয়েছি । আমাদের দাবি, প্রশাসন আমাদের দিকে একটু নজর দিক । চাষিরা যাতে আলুর বন্ড পায় তার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন ।"

হিমঘরের বন্ডের অভাবে সংকটে মালদার আলু চাষিরা

পুরাতন মালদার আট মাইল এলাকার আলুচাষি হরিদাস রাজবংশী বলেন, "আমাদের এখানে বেশ কয়েকটি হিমঘর রয়েছে । কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা, চাষিরাই আলুর বন্ড পায় না । ফলে চাষিরা আলুর বীজ সংরক্ষণ করতে পারে না । আমাদেরও সন্দেহ হয়, এর পিছনে কালোবাজারি চলছে । এনিয়ে চাষিরা অনেকবার হিমঘর কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছে । কিন্তু তারা কোনও কথা বলেনি । বন্ডের বিষয়টি প্রশাসনের দেখা উচিত । এই এলাকার বেশিরভাগ আলু বাগানে পড়ে রয়েছে । তাতে আলু পচে যাচ্ছে । এতে আখেরে চাষিরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ।"

পুরাতন মালদার বিডিও ইরফান হাবিব বলেন, "চাষিরা বন্ডের বিষয় নিয়ে তাঁকে কোনও অভিযোগ জানাননি । তাই এই সমস্যার কথা তাঁর জানা ছিল না । তিনি এনিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন ।"

আরও পড়ুন : Two Arrested With Brown Sugar : মালদায় ব্রাউন সুগার-সহ গ্রেফতার 2

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.