মালদা , 14 মে : সরকারি উদ্যোগ শুরু হতেই জেলায় ফিরে আসতে শুরু করেছে পরিযায়ী শ্রমিকরা ৷ এতেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৷ এখনও পর্যন্ত জেলায় যে 19 জন কোরোনা সংক্রামিতের সন্ধান মিলেছে , তারা সকলেই পরিযায়ী ৷ এদিকে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে কোরোনা সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য সতর্ক রয়েছে প্রশাসন ৷ ইতিমধ্যে জেলার 33টি ইন্সটিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টার ফের চালু করে দেওয়া হয়েছে ৷ আরও নতুন সেন্টার তৈরি করার কাজ চলছে ৷ এর মধ্যে রয়েছে পুরাতন মালদাও ৷ কারণ , সেখানেও দুই পরিযায়ীর দেহে কোরোনা ধরা পড়েছে ৷ প্রতিদিনই ভিনরাজ্য থেকে ফিরে আসছে শ্রমিকরা ৷ আর এ নিয়েই প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়েছে পুরাতন মালদার বিভিন্ন এলাকায় ৷ গতকাল রাত থেকে গৌড় কলেজ , ওসমানিয়া হাইমাদ্রাসা , গৌড় ঘোষ বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে এলাকার বাসিন্দারা ৷ তারা কেউ ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে ইন্সটিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টার করতে দেবে না বলে পণ করেছে ৷ আজ সকালেও এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায় পুরাতন মালদা পৌরসভার 15 নম্বর ওয়ার্ডের শিবরামপল্লি এলাকায় ৷ যদিও পুলিশি হস্তক্ষেপে প্রতিটি জায়গাতেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় ৷
আজ সকালে শিবরামপল্লিতে ঢোকার মুখে বাঁশের ব্যারিকেড লাগিয়ে দেয় এলাকাবাসী ৷ সেখানে জমায়েত করেন প্রচুর মহিলা ৷ ওই পাড়াতেই রয়েছে গৌড় ঘোষ বালিকা বিদ্যালয় ৷ সেখানে উপস্থিত টুম্পা হালদার বলেন , “আমরা শুনেছি , বাইরে থেকে যে পরিযায়ী শ্রমিকরা জেলায় ফিরে আসছে , তাদের গৌড়চন্দ্র ঘোষ বালিকা বিদ্যালয়ে কোয়ারানটিন করা হবে ৷ আমরা সেটা করতে দেব না ৷ আমাদের পাড়ার ভিতরে এই স্কুল ৷ তাই আজ আমরা পাড়ায় ঢোকার রাস্তা বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি ৷ পুলিশ এসে ঘেরাবন্দি খুলতে বলছে ৷ কিন্তু ওই ঘেরাবন্দিতে আমাদের যাতায়াতে কোনও অসুবিধে হচ্ছে না ৷ তাই আমরা সেখান থেকে বাঁশ খুলব না ৷”
এলাকার আরেক বাসিন্দা রঞ্জিত কুণ্ডু বলেন, “এই এলাকাটি ঘন জনবসতিপূর্ণ ৷ স্কুলের গা লাগিয়ে অনেক বাড়ি রয়েছে ৷ আমরা শুনতে পেয়েছি, এই স্কুলে ইন্সটিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টার করা হবে ৷ পাড়ার মধ্যে আমরা তা কিছুতেই হতে দেব না ৷ পরিযায়ীদের ফাঁকা কোনও জায়গায় রাখা উচিত ৷ এই এলাকাতেও ফাঁকা জায়গায় একটি বিএড কলেজ রয়েছে ৷ প্রশাসন চাইলে সেখানে কোয়ারানটিন সেন্টার করতে পারে ৷”
এনিয়ে প্রশাসনের কোনও বক্তব্য না পাওয়া গেলেও মালদা থানার পুলিশ জানিয়েছে , ইন্সটিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টার নিয়ে গতকাল রাত থেকেই বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে ৷ পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিটি জায়গায় গিয়ে মানুষকে জানানো হয়েছে , কেউ যেন অযথা আতঙ্কিত না হয় ৷ এখনও পর্যন্ত এখানে নতুন কোয়ারানটিন সেন্টার চালুর ব্যাপারে কোনও সরকারি নির্দেশিকা আসেনি ৷ সেই নির্দেশিকা আসলে মানুষের সুরক্ষার দিক বিচার করেই সেন্টারের ব্যবস্থা করা হবে ৷