মালদা, 3 জুন: করমণ্ডল এক্সপ্রেসই শুধু নয়, গতকালের ট্রেন দুর্ঘটনায় তছনছ হয়ে গিয়েছে যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসের একাধিক বগি ৷ আহত হয়েছেন ওই ট্রেনেরও অনেক যাত্রী ৷ তাঁদের মধ্যে অনেকে মারা গিয়েছেন, অনেকের আবার খোঁজ নেই ৷ তাঁদের মধ্যেই রয়েছে মালদার 4 পরিযায়ী শ্রমিক ৷ তাঁদের মধ্যে একজনের এখনও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি ৷ যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসে সওয়ার তিন পরিযায়ী শ্রমিক এই মুহূর্তে বালাসোরের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৷
ওড়িশার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইউসুফ আখতার জানাচ্ছেন, অন্ধ্রপ্রদেশে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলেন তিনি ৷ কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন ৷ তাঁরা চারজন একসঙ্গে ছিলেন ৷ ইউসুফ আখতার বলেন, ‘‘ট্রেন যথেষ্ঠ গতিতেই চলছিল ৷ হঠাৎই বিকট শব্দ ৷ সঙ্গে প্রবল ঝাঁকুনি ৷ আর কিছু মনে নেই ৷ খানিক পরে জ্ঞান ফিরে আসে ৷ পরে আমাকে এই হাসপাতালে ভরতি করা হয় ৷ আমরা তিনজন এখানে আছি ৷ কিন্তু আমার ভাই ইউনুস শেখকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ৷ আমাদের কামরায় মালদার 40-50 জন ছিল ৷”
জানা যাচ্ছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসে মালদার শতাধিক শ্রমিক ছিলেন ৷ প্রত্যেকেই কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন ৷ তাঁরা মূলত কালিয়াচক ও রতুয়ার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা ৷ এই ট্রেনের যে কামরাটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাতে মালদার 40-50 জন ছিলেন ৷ জানা যাচ্ছে যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন বেশ কয়েকজন পড়ুয়াও ৷ তাঁরা বেঙ্গালুরু থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন ৷ পড়ুয়াদের মধ্যে মালদার কেউ ছিলেন কি না, তা এখনও জানা যায়নি ৷ তবে, এই ট্রেনের যাত্রীরা মূলত আহত হয়েছেন ৷ তবে, কেউ মারা গিয়েছে কি না, তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি ৷
আরও পড়ুন: হাজারেরও বেশি যাত্রী নিয়ে বালাসোর থেকে হাওড়ায় আসছে দু'টি ট্রেন
গতকাল ওড়িশার বালাসোর স্টেশন থেকে 28 কিলোমিটার দূরে বাহাঙ্গা রেল স্টেশনের কাছে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে ৷ তাতে এখনও পর্যন্ত মালদার এক বাসিন্দার মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে ৷ তিনি মালতিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দা ৷ খবর পেয়ে মৃতের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক আবদুর রহিম বকসি ৷
আরও পড়ুন: ওড়িশায় জোড়া ট্রেন দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ বিরাট-সেওয়াগদের
তিনি বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ৷ নিহত মাশরেকুল খুবই দুঃস্থ ছিলেন ৷ কোনওভাবে দিনযাপন করতেন ৷ তাঁর পরিবারের এখন কী হবে কেউ জানে না ! আমরা আশাবাদী, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী এই পরিবারটিকে সাহায্য করবেন ৷ আমিও বিধায়ক হিসাবে এই পরিবারের পাশে রয়েছি ৷” তিনি আরও জানিয়েছেন, মালতিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের পাঁচ শ্রমিক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন ৷ একজন মোটামুটি সুস্থ আছেন ৷ তবে, দু’জন আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিধায়ক ৷