মালদা, 20 জানুয়ারি: বিয়ের নাম নারী পাচারের ছক ৷ অবশ্য মেয়ের পরিবারের তৎপরতায় গ্রেফতার হয়েছে অভিযুক্ত দম্পতি (Malda Police Arrest a Couple of Woman Trafficking) ৷ ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুরে ৷ ধৃতদের শুক্রবার চাঁচল মহকুমা আদালতে পেশ করেছে পুলিশ ৷ অভিযুক্তদের 5 দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ বিচারকের ৷
মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের তালশুর গ্রামের বাসিন্দা সন্তোষ পাশোয়ান ও শোভা পাশোয়ান ৷ দিনমজুরি করে তাঁদের সংসার চলে ৷ বাড়িতে রয়েছে বিবাহযোগ্যা মেয়ে ৷ কয়েকদিন আগে এলাকার বাসিন্দা পরিমল মহালদার নামে এক ব্যক্তি পাশোয়ান পরিবারকে 'সু' পাত্রের খোঁজ দেন ৷ এরপর দু’পক্ষের মধ্যে কথাবার্তাও হয় ৷ দু’দিন আগে সন্তোষবাবুর এক আত্মীয় পাত্রকে আনতে বিহারের পটনা যান ৷ সেখানে গিয়েই তাঁর সন্দেহ হয় ৷ খোঁজখবর করে জানতে পারেন, পাত্র উদলকুমার যাদব বিবাহিত ৷
তবে তিনি যে সবকিছু জেনেছেন, তা কাউকে বুঝতে দেননি সন্তোষবাবুর প্রতিনিধি ৷ তিনি সব জেনেও না জানার ভান করে উদলকে গ্রামে নিয়ে আসেন ৷ উদলের সঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর আসে তাঁর স্ত্রী কাঞ্চনদেবীও ৷ তিনি সন্তোষবাবুর প্রতিনিধির কাছে নিজেকে উদলের বউদি বলে পরিচয় দিয়েছিলেন ৷ হরিশ্চন্দ্রপুর আসার পরেই সন্তোষবাবুরা দু’জনকে আটকে গ্রামবাসীদের গোটা ঘটনা জানান ৷ গ্রামবাসীরা পুলিশকে সেই খবর দিলে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ দু’জনকেই গ্রেফতার করে ৷ তবে গোলমালের সুযোগে গ্রাম থেকে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছে ‘সুপাত্র’ উদলের খোঁজ দেওয়া পরিমল মহালদার (Woman Trafficking in Malda) ৷
আরও পড়ুন: প্রেম-বিয়ের পর্ব সেরেই নিষিদ্ধপল্লিতে বিক্রি ! পুলিশের জালে দুই
এর পরেই সমস্ত ঘটনা জানিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন সন্তোষবাবুর শ্যালক বিশ্বজিৎ পাশোয়ান ৷ তিনি বলেন, "দিদি আমাকে ফোন করে বলে, ভাগ্নির বিয়ে তোড়জোড় চলছে ৷ ভাগ্নির বরকে দেখতে যেতে হবে ৷ আমি পাত্র দেখতে পটনা যাই ৷ সেখানেই খবর পাই, ছেলেটা বিবাহিত ৷ তবে আমি ওদের কিছু বুঝতে দিইনি ৷ সেক্ষেত্রে আমার প্রাণহানিরও আশঙ্কা ছিল ৷ আমি সব জেনে ফেলেছি বুঝতে পারলে ওরা আমাকে মেরে ফেলতে পারত ৷ তাই কিছু বুঝতে না দিয়ে ওদের এখানে নিয়ে আসি ৷ এখানে নিয়ে এসেই আমরা ওই দু’জনকে গ্রামবাসীদের হাতে তুলে দিই ৷ গ্রামবাসীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে ৷ পটনা থেকে ট্রেনে আসার সময় ওরা কারও সঙ্গে ফোনে কথা বলছিল ৷ ফোনেই বলছিল, মেয়েকে আনতে যাচ্ছে ৷ মেয়ে নিয়ে আসার পর তাকে ওরা ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা ব্যক্তির হাতে তুলে দেবে ৷ আমি নিশ্চিত, ওরা আমার ভাগ্নিকে বিক্রি করে দেওয়ার চক্রান্ত করেছিল ৷"
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি দেওদূত গজমের জানিয়েছেন, এই ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৷ অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ ধৃতদের আজই চাঁচল মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়েছে ৷ গোটা ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে পুলিশি তদন্ত ৷