মালদা, 30 মার্চ : বলার মতো সাম্মানিক পান না তাঁরা ৷ দৈনিক আড়াইশোর কিছু বেশি টাকা সাম্মানিক পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় ৷ কোনও বিমার ব্যবস্থা নেই ৷ কোরোনা মোকাবিলায় সবার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন ৷ তাঁরা মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী ৷ কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজেদের কর্তব্য থেকে সরে যাননি তাঁরা৷ আজ মেডিকেল চত্বরে উপস্থিত মাস্কবিহীন অনেক মানুষের মুখে তা পরিয়ে দেন ৷ সবার হাত স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কারও করেন ৷
এই মুহূর্তে মালদা মেডিকেলে কাজ করেন 123 জন অস্থায়ী কর্মী ৷ স্বাস্থ্য পরিষেবার অনেক কাজই করতে হয় তাঁদের ৷ কেউ কেউ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছেন৷ কিন্তু এখনও তাঁদের অনুমোদন করেনি রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর৷ যদিও সেই সংক্রান্ত নথিপত্র অনেক আগেই স্বাস্থ্যভবনে পাঠানো হয়েছে ৷ ফলে এই কর্মীদের বিমার কোনও ব্যবস্থা নেই, স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড নেই, ভবিষ্যনিধি কিংবা সেধরনের কোনও সুযোগ সুবিধাও নেই ৷ কর্মরত অবস্থায় কোনও কর্মীর মৃত্যু হলে কার্যত পথে বসতে হবে তাঁদের পরিবারকে ৷ কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও প্রতিমুহূর্তে তাঁদের স্বাস্থ্য পরিষেবার কাজ করে যেতে হচ্ছে ৷ তাঁদের আশা, একদিন তাঁদের অনুমোদন দেবেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ সেই আশা নিয়েই আজ তাঁরা নিজেদের ক্ষুদ্র সামর্থে মেডিকেল চত্বরে উপস্থিত মানুষজনকে কোরোনা নিয়ে সচেতন করেন৷ প্রত্যেকের হাত স্যানিটাইজার দিয়ে পরিষ্কার করে দেন ৷ যাদের মুখ খোলা ছিল, তাদের সবাইকে মাস্ক পরিয়ে দেন৷ সবার বক্তব্য, তাঁদের এই ভাবনা সত্যিই তারিফযোগ্য ৷
মেডিকেলের অস্থায়ী কর্মী সংগঠনের সম্পাদক সুবোধ সাহা বলেন, “এটা ঠিক, আমরা দীর্ঘদিন ধরে মালদা মেডিকেলে কাজ করে গেলেও এখনও পর্যন্ত স্বাস্থ্যভবন আমাদের পদ অনুমোদন করেনি৷ ফলে আমরা সরকারি সব সুযোগ সুবিধে থেকে ব্রাত্য৷ কিন্তু রাজ্য সরকার, বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রীর উপর আমাদের ভরসা রয়েছে৷ তিনি নিশ্চয়ই আমাদের বিষয়টি ভেবে দেখবেন৷ কিন্তু এখন সেই সময় নয়৷ এখন মানুষকে বাঁচানোর লড়াইয়ে নেমেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ আমরাও সেই লড়াইয়ে নেমে পড়েছি৷ কোরোনার থাবা থেকে মানুষকে রক্ষা করাই এখন আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ৷ আমরা নিশ্চিত, সেই লড়াইয়ে আমাদের জয় হবেই৷”