মালদা, 7 অগাস্ট : খোঁজ না পাওয়া কোরোনা পজ়িটিভরাই এখন চিন্তা বাড়িয়েছে জেলা স্বাস্থ্যবিভাগের ৷ এই আক্রান্তদের মাধ্যমে কতজন সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁরা কেমন আছেন, তার কোনও তথ্যই নেই স্বাস্থ্যবিভাগের কাছে ৷ কর্মীরা এখনও সেই সংক্রমিতদের খোঁজ বহাল রেখেছেন ৷ এদিকে জেলায় কোরোনা সংক্রমণে এখনও লাগাম টানা যায়নি ৷ গত 24 ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন আরও 77 জন ৷ তবে এটি শুধুমাত্র মালদা মেডিকেলে RTPCR যন্ত্রে লালারসের নমুনা পরীক্ষার হিসেব ৷ ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে গত 24 ঘণ্টায় কতজনের লালারসের নমুনায় কোরোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি ৷ এখনও পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিভাগের তরফে পাওয়া তথ্য অনুসারে, জেলায় সংক্রমণের সংখ্যা 2706 ৷
গত 24 ঘণ্টায় নতুন করে যে 77 জনের লালারসের নমুনায় কোরোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ধরা পড়েছে গাজোলে ৷ সেখানে 22 জন সংক্রমিত হয়েছেন ৷ চাঁচল 1 ও 2 ব্লকে সংক্রমিত হয়েছেন 14 জন ৷ হরিশ্চন্দ্রপুরের 2 টি ব্লকে সংক্রমিতের সংখ্যা 13 ৷ মালদা শহরে নতুন করে সংক্রমিত 10 জন ৷ এছাড়াও জেলার বিভিন্ন ব্লকের বাসিন্দাদের নাম তালিকায় রয়েছে ৷ তবে কোরোনা সংক্রমণে সবচেয়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে ইংরেজবাজার ব্লক ৷ শুধুমাত্র মালদা শহরেই সংক্রমিতের সংখ্যা 639 ৷ ব্লকের গ্রামাঞ্চলে কোরোনা সংক্রমণের সংখ্যাটি 221 ৷ সব মিলিয়ে এই ব্লকেই সংক্রমিত হয়েছেন 860 জন ৷ জেলা স্বাস্থ্যবিভাগের তথ্য অনুযায়ী, কোরোনায় মালদায় মোট মৃতের সংখ্যা 20 ৷ লালারসের নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা অনুযায়ী, সংক্রমণের হার 8.12 শতাংশ ৷ মৃত্যুর হার 0.76 শতাংশ ৷ তবে 65.84 শতাংশ মানুষই সুস্থ হয়ে উঠেছে ৷
এই অবস্থায় জেলা স্বাস্থ্যবিভাগের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, পরিচয়হীন 32 জন কোরোনা সংক্রমিত ৷ নিয়ম অনুযায়ী লালারসের নমুনা পরীক্ষার সময় সবাইকে নিজেদের নাম ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা, এমনকী মোবাইল নম্বরও দিতে হয় ৷ কিন্তু অনেকে নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে লালার নমুনা পরীক্ষা করান ৷ সেক্ষেত্রে তাঁরা সরকারি নথিতে নিজেদের নাম কিংবা ঠিকানার সঙ্গে ভুয়ো মোবাইল নম্বরও দেন ৷ তাঁদের কারও নমুনা পজ়িটিভ হলেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে স্বাস্থ্যবিভাগকে ৷ কারণ, পরবর্তীতে সংক্রমিতদের কোনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না ৷ তাই স্বাস্থ্যবিভাগের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এখন নমুনা দিতে আসা প্রত্যেকের মোবাইল ফোন নম্বরে প্রথমে রিং করে নিশ্চিত হওয়ার পরেই লালারস সংগ্রহ করা হবে ৷
একই কথা জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ৷ পরিচয়বিহীন কোরোনা সংক্রমিতরা যে মাথাব্যথার কারণ, তা স্বীকার করে নিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী ৷ তিনি বলেন, "সম্ভবত আতঙ্ক থেকে কিছু মানুষ এসব কাণ্ড ঘটাচ্ছেন ৷ তাঁরা হয়ত ভয় পাচ্ছেন ৷ একবার কোরোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট এলে তাঁদের নানাবিধ সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে ৷ কিন্তু এমন চিন্তার কোনও কারণ নেই ৷ বরং তাঁরা নিজেদের সঠিক নাম-ঠিকানা দিলে আমাদের পক্ষে তাঁদের চিকিৎসা করা কিংবা অন্য সাহায্য করা সুবিধাজনক হবে ৷ আমরা সবাইকেই আবেদন জানাচ্ছি ৷ তাঁরা যেন নিজেদের সঠিক নাম ও ঠিকানা, মোবাইল নম্বর স্বাস্থ্যবিভাগকে জানান ৷ "