মালদা, 2 নভেম্বর: মালদা শহরের অন্যতম কালী মন্দিরগুলির মধ্যে একটি হল 'বুড়াকালী।' মায়েরা পাঁচ বোন। তাঁদের পছন্দের খাওয়ারও আলাদা। পছন্দের খাওয়ার দিয়েই পুজো দেওয়া হয় এই পাঁচকালীকে। বড়বোনের নাম 'বুড়াকালী।'মালদা শহরের অন্যান্য কালী মন্দিরগুলির মধ্যে প্রাচীন এই 'বুড়াকালীর' পুজো। কথিত আছে, একসময় মালদা শহর সংলগ্ন মহানন্দা নদীর তীরে ডাকাতরাজ ছিল। নদী সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় গোপন ডেরা ছিল পাঁচ ডাকাতের। তৎকালীন বণিকরা যখন বজরা নিয়ে বাণিজ্যে যেতেন, সেই সময় এই ডাকাতরা নিজ নিজ ডেরা সংলগ্ন এলাকায় কালীপুজো দিয়ে ডাকাতি করতে যেতেন। সেই সময় থেকে আজও পূজিত হয়ে আসছেন 'বুড়াকালী' ও তাঁর বোনেরা।
'বুড়াকালীর' পছন্দের খাবার ছোলার ডালের খিচুড়ি। মেজো বোনের নাম 'ডাকাতকালী।' তাঁর পছন্দ 'সুরা।' যথাক্রমে 'মশানকালীর' পছন্দের খাবার ফলমূল, 'কাচ্চি খাওকিকালীর' কাঁচা সন্দেশ। ছোটবোন 'তারাকালীর' পছন্দ পায়েস-ক্ষীর। পছন্দের খাবার দিয়েই পুজো করা হয় এই পাঁচ কালীকে। পাশাপাশি এলাকাবাসীর কাছে জাগ্রত হিসেবেও নাম রয়েছে 'বুড়াকালীর।' ভক্তরা মানত রেখে পুজোর দিন পাঁঠা বলি দেন।
আরও পড়ুন: কালীপুজোয় লাগে না কোনও পুরোহিত, হয় পাঁঠাবলি
'বুড়াকালী' মন্দিরের সেবায়েত প্রসূন ভট্টাচার্য বলেন, "কালীতলার এই 'বুড়াকালী' পুজো মালদার ঐতিহ্যবাহী পুজোগুলির মধ্যে একটি। এই পুজো প্রায় 400 বছরের পুরোনো। শুধু জেলা কিংবা ভিনরাজ্য নয়, বাংলাদেশ থেকেও ভক্তরা এই পুজোতে সামিল হতে আসেন। কথিত আছে, আগে যখন বড় রাস্তা ছিল না তখন মহানন্দা নদী দিয়ে জলপথে যাতায়াত হত। এক সময় এই মন্দিরের পাশ দিয়েই নদী বয়ে যেত। সেই সময় ডাকতরা এই কালী মন্দিরে পুজো দিয়ে ডাকাতি করতে যেতেন। এই কালী মায়েরা পাঁচ বোন। বড়ো বোনের নাম 'বুড়াকালী।' মেজো বোন 'ডাকাতকালী।' এরপর 'কাচ্চি খাওকিকালী', 'মশানকালী' ও 'তারাকালী।' এই পাঁচ মায়ের মন্দির মালদা শহরেই রয়েছে। আগে বিসর্জনের দিন পাঁচ বোন একসঙ্গে নদীর ঘাটে যেতেন। কিন্তু এখন 'বুড়াকালীর' পাথরের মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাওয়ায় বাকি চার কালী একসঙ্গে বিসর্জনে যায়।"