মালদা, 23 জুলাই : গঙ্গা ভাঙন নিয়ে বামেদের আন্দোলন এবার নেমে এল পথে । ভাঙন বিধ্বস্ত মানিকচক ব্লকের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তিনটি গ্রামের মানুষজনকে নিয়ে আজ স্থানীয় ধরমপুর বাসস্ট্যান্ডে মালদা-মানিকচক রাজ্য সড়ক অবরোধ করা হয় । তবে এই আন্দোলনে আজও কোনও ঝান্ডা দেখা যায়নি । বাম নেতৃত্বের বক্তব্য, এই আন্দোলন রাজনৈতিক নয় । গঙ্গার রোষ থেকে মানুষকে বাঁচাতেই তাঁদের এই উদ্যোগ ।
কিছু দিন ধরেই গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বালুটোলা, এলাহিটোলা ও সহবতটোলা গ্রামে গঙ্গার ভাঙন চলছে । পরিস্থিতি যে বেশ ঘোরালো, তা মেনে নিয়েছেন রাজ্যের সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন । তিনি কয়েক দিন আগে বালুটোলা গ্রামে ভাঙন পরিদর্শনও করেন । সে-দিনই তিনি জানিয়ে দেন, ভাঙন রুখতে খুব দ্রুত ওই এলাকার তিনটি পয়েন্টে কাজ করা হবে । এর জন্য তিনি অর্থও বরাদ্দ করেন । কিন্তু তাঁর বরাদ্দ করা অর্থ নিয়েই প্রতিবাদে সরব হয়েছে বামেরা । এনিয়ে গতকাল বামেদের তরফে মানিকচকের বিডিয়োকে একটি ডেপুটেশন দেওয়া হয় । আজ দুর্গতদের নিয়ে পথ অবরোধ করে তারা । অবরোধে অংশ নেন মহিলারাও ।
![s](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/12548826_wb_gg.jpg)
এলাকার বাসিন্দা ও সিটুর জেলা সম্পাদক দেবজ্যোতি সিনহা বলেন, “গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাহিটোলা, সহবতটোলা ও বালুটোলায় আগ্রাসী রূপ নিয়েছে গঙ্গা । তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন চলছে । গতকাল ৫০০ মিটার এলাকার বিস্তীর্ণ অংশ নদীতে তলিয়ে গিয়েছে । মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন এই এলাকা পরিদর্শনও করে গিয়েছেন । কিন্তু তিনি ভাঙন রোধের কাজে মাত্র ন’লাখ টাকা বরাদ্দ করেছেন ।" তিনি আরও বলেন, "এ-নিয়ে গতকাল জেলাশাসককেও ফোন করা হয়েছে । তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছে, এটা কি ভাঙন বিধ্বস্ত গোপালপুরের মানুষকে ভিক্ষে দেওয়া হচ্ছে? এই গোপালপুরকে না বাঁচানো গেলে কিন্তু মালদা শহর, এমনকি ডিএম নিজেও বাঁচবেন না ।"
আরও পড়ুন: গঙ্গা ভাঙন নিয়ে ঝান্ডা ছাড়াই আন্দোলনে বামেরা
সত্তরের দশক থেকে শুরু হওয়া গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধে তৎকালীন বাম সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি কেন? প্রশ্নের উত্তরে আরএসপি’র জেলা সম্পাদক সর্বানন্দ পাণ্ডে বলেন, “গঙ্গা ভাঙন অনেকদিন ধরেই চলছে । আমরা ভাঙন দুর্গত মানুষদের স্থায়ী পুনর্বাসনের দাবিতে আগেও আন্দোলন করেছি । একটা সময় আমরা দুর্গতদের জন্য ভালুকা থেকে কলকাতা পর্যন্ত পদযাত্রা করেছিলাম । তার পরই তৎকালীন দেবেগৌড়া সরকার গঙ্গা ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল । কিন্তু তারপর থেকে ভাঙন রোধে কোনও স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি । এখন রাজ্য সরকার এ-নিয়ে শুধু কেন্দ্রকে দোষারোপ করছে ।"