মালদা, 29 জুলাই: হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের সাদলিচক গ্রাম পঞ্চায়েতের সূর্যাপুরা গ্রামে আদিবাসী সম্প্রদায়েরই একাধিক মানুষকে প্রতারণা করে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে (Land Occupied in Harishchandrapur)।
বিষয়টি নজরে আসতেই এ নিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন সাত প্রতারিত আদিবাসী। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের তরফেও।
সূর্যাপুরা গ্রামের বাবুরাম মুর্মু বলেন, "স্থানীয় অর্জুনা গ্রামের পিন্টু মণ্ডল নামে এক যুবক কিছুদিন আগে আমাদের গ্রামে যান। তিনি জানান, বিএলআরও দফতরে মুহুরির কাজ করেন। আমাকে বলেন, আমার জমির নতুন কম্পিটারাইজড দলিল করে দেবেন। একথা বলে উনি আমার কাছ থেকে জমির কাগজপত্র নিয়ে নেন। প্রথমে বলেছিলেন, এর জন্য কোনও টাকাপয়সা লাগবে না। কিন্তু তারপর উনি ধাপে-ধাপে আমার কাছ থেকে 65 হাজার টাকা নিয়ে নেন। তারপর আমাকে জমির দলিলও দেন।
আরও পড়ুন: শিলিগুড়ি সংলগ্ন জঙ্গলের জমি জবরদখল, রাতারাতি পুনরুদ্ধার করে বৃক্ষরোপণ বন বিভাগের
সম্প্রতি আমি দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে জমির কাগজ জমা দিয়ে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেতে আবেদন করি। তখনই আমাকে বলা হয়, আমার জমির কাগজ জাল। আমার কাগজে যে জমির খতিয়ান আর দাগ নম্বর রয়েছে, সেই জমি অন্যজনের।" একই বক্তব্য ওই গ্রামে লক্ষ্মী মার্ডিরও। তিনি বলেন, "জমির কাগজপত্র আমার নামে করে দেবে বলে পিন্টু তার দলিল আমার কাছ থেকে নিয়ে নেন। এরপরও আমার কাছ থেকে 23 হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু আমাকে জমির ভুয়ো কাগজ দিয়েছেন। শুধু আমারই নয়, এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছি, আমাদের গ্রামের সাতজনকে এভাবে প্রতারিত করেছেন উনি। তাই আজ আমরা ওনার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। আইসি জানিয়েছেন, তিনি আমাদের সুবিচার দেবেন।"
যদিও পিন্টু মণ্ডল নামে ওই মুহুরির অস্তিত্ব অস্বীকার করেছেন হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের ল ক্লার্ক ইউনিয়নের সম্পাদক মহম্মদ ফিরোজ খান। তিনি বলেন, "ওই নামে কোনও ল ক্লার্ক হরিশ্চন্দ্রপুরের দু'টি ব্লকে নেই। ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।" এ নিয়ে প্রতারিত আদিবাসীরা স্থানীয় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরেও অভিযোগ জানিয়েছেন। তার প্রেক্ষিতে ওই দফতর থেকেও পিন্টু মণ্ডলের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সালিশি সভায় কিশোরীকে মারধরের অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে
দফতরের রেভিনিউ অফিসার ওহিম মিত্র বলেন, "আমাদের কাছেও এ নিয়ে অভিযোগ এসেছে। দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে এই প্রতারণা ধরা পড়েছে। আদিবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরাও হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। আশা করছি, পুলিশ দ্রুত ওই প্রতারককে গ্রেফতার করবে। তবে আমরা মানুষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, তাঁরা যেন জমি সংক্রান্ত যে কোনও বিষয়ে সরাসরি সরকারি কেন্দ্রগুলিতে যোগাযোগ করেন।"