মালদা, 1 মে : 1848 সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল চাঁচল রাজ এস্টেট । সেই সময় রাজা ছিলেন শরৎচন্দ্র রায়চৌধুরি । তিনি 1937 সালে নিজের জমিদারিতে একটি লাইব্রেরি তৈরি করেন । তাঁর নামেই সেই লাইব্রেরির নাম দেওয়া হয় শরৎচন্দ্র লাইব্রেরি। সেই সময় দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বইপত্র সংগ্রহ করে তিনি লাইব্রেরিতে রাখতে শুরু করেন (Kumar Shibapada Rural Library is losing its history) ।
একমাত্র ছেলে কুমার শিবপদের আত্মহত্যার পর থেকে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন শরৎচন্দ্র । 1946 সালে তিনি মারা যান । 1957 সালে তাঁর প্রতিষ্ঠিত এই লাইব্রেরির নামকরণ করা হয় কুমার শিবপদ রুরাল লাইব্রেরি । সেবছরই লাইব্রেরি সরকার অধিগ্রহণ করে ।
85 বছরের পুরনো ওই লাইব্রেরিতে বর্তমানে বইয়ের সংখ্যা হাজার সাতেক । তার মধ্যে রয়েছে বহু দুষ্প্রাপ্য পুঁথি থেকে শুরু করে পাণ্ডুলিপি, এমনকি রাজ আমলের বইপত্রও । কিন্তু এমন একটি ইতিহাসের গন্ধমাখা লাইব্রেরিতে স্থায়ী কোনও লাইব্রেরিয়ান নেই । একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর উপরেই গোটা লাইব্রেরির ভার । ঝাড়ু দেওয়া থেকে শুরু করে পাঠকদের হাতে বইপত্র তাঁকেই তুলে দিতে হয় । এছাড়া এক লাইব্রেরিয়ান আছেন বটে । কিন্তু 4টি লাইব্রেরির দায়িত্বে থাকা সেই লাইব্রেরিয়ান সপ্তাহে একদিনের বেশি আসতে পারেন না ।
সরকারি উদাসীনতায় প্রাচীন এই লাইব্রেরি এখন যেন অন্তিম শ্বাস নিচ্ছে । সাড়ে পাঁচ বিঘা জমির উপর নির্মিত এই প্রাচীন লাইব্রেরির আয়তন বর্তমানে নেমে এসেছে বিঘা খানেকে । লাইব্রেরির জায়গা জবরদখল করে তৈরি হয়েছে দোকানপাট । জমি দখলের চেষ্টা চলছে এখনও ।
আরও পড়ুন : অভিনন্দন মন্ত্রীর, নিরাপত্তারক্ষীর উদ্যোগে জগৎ মুখার্জি পার্কে আস্ত গ্রন্থাগার
অযত্নে পড়ে থাকতে থাকতে শেষ পর্যন্ত লাইব্রেরিটিই নষ্ট হয়ে যায় কিনা, তা নিয়ে আশঙ্কায় চাঁচলবাসী । প্রাচীন লাইব্রেরিটিকে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে সরকারের দিকেই তাকিয়ে এলাকার বইপ্রেমীরা ৷