মালদা, 20 ফেব্রুয়ারি : জেলাশাসকের উষ্মা প্রকাশের পরও বদলায়নি মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কর্মসংস্কৃতির ছবি ৷ আজ ফের তার প্রমাণ মিলল ৷ প্রসূতি বিভাগে চিকিৎসকদের না দেখে ক্ষোভপ্রকাশ করলেন কেন্দ্রীয় সরকারের রিপ্রোডাক্টিভ চাইল্ড হেলথের (RCH) যুগ্মসচিব ৷ সেকথা স্বীকার করে নিলেন মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যক্ষও ৷ তবে কর্মসংস্কৃতি কবে ফিরবে, তা নিয়ে সঠিক কোনও বার্তা দিতে পারেননি তিনি ৷
দিন কয়েক আগের ঘটনা ৷ কাউকে কিছু না জানিয়ে সকাল 10টা নাগাদ মালদা মেডিকেলে চলে যান জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র ৷ তিনি এই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানও ৷ গিয়ে দেখেন, তখনও মেডিকেলের অধ্যক্ষ, সহকারী অধ্যক্ষরা কেউ এসে পৌঁছাননি ৷ দীর্ঘক্ষণ বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তাঁকে ৷ সেই খবর পেয়ে তড়িঘড়ি আসেন অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় ৷ তাঁকে নিয়ে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখেন জেলাশাসক ৷ দেখেন, চারদিকেই অব্যবস্থা ৷ গেটে নিরাপত্তারক্ষীদের যেমন দেখা নেই, তেমনই বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদেরও দেখা পাননি ৷ ক্ষুব্ধ জেলাশাসক অধ্যক্ষের কাছে চিকিৎসকদের ডিউটি রস্টার দেখতে চান ৷ সেই রস্টার সম্পর্কিত কিছু নির্দেশিকাও তিনি জারি করেন ৷ সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আজ ফের একই ছবি উঠে এসেছে হাসপাতালে ৷
আজ মেডিকেলের মাতৃ-মা বিভাগ পরিদর্শনে আসেন কেন্দ্রীয় সরকারের রিপ্রোডাকটিভ চাইল্ড হেলথের যুগ্ম সচিব ৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন UNICEF-এর প্রতিনিধিরাও ৷ তাঁরা হাসপাতালের প্রসূতি ও শিশুবিভাগে দীর্ঘক্ষণ কাটান ৷ ঘুরে দেখেন সেখানকার যাবতীয় পরিকাঠামো ৷ খতিয়ে দেখেন বিভিন্ন রেকর্ডও ৷ প্রায় দেড় ঘণ্টা পরিদর্শনের পর তাঁরা হাসপাতাল ছেড়ে বেরিয়ে যান ৷ যদিও তাঁরা এই পরিদর্শন নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি ৷
যদিও মালদা মেডিকেলের সহকারী অধ্যক্ষ ও হাসপাতাল সুপার অমিত দাঁ বলেন, "কেন্দ্রীয় সরকারের রিপ্রোডাক্টিভ চাইল্ড হেলথের যুগ্ম সচিব আজ হাসপাতালের মাতৃ-মা বিভাগ পরিদর্শন করেছেন ৷ UNICEF-এর প্রতিনিধি ও হাসপাতালের কর্তারাও তাঁর সঙ্গে ছিলেন ৷ তিনি আজ ওই বিভাগের অপারেশন থিয়েটার, লেবার রুম সহ ওই বিভাগের অন্য পরিকাঠামোগুলি ঘুরে দেখেন ৷ ওই বিভাগের ব্যবস্থা নিয়ে তিনি কিছু ক্ষেত্রে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ৷ আবার কিছু ক্ষেত্রে আরও কী করলে ভালো হয়, তা নিয়ে উপদেশ দিয়ে গিয়েছেন ৷ বিশেষত, সেখানে আরও লোক নিয়োগের প্রয়োজন বলে তিনি জানিয়েছেন ৷ সেখানে আরও নিয়োগের জন্য আমরা চেষ্টা করব ৷ তবে এই পরিদর্শনের সময় ওই বিভাগে সমস্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী উপস্থিত ছিলেন না ৷ সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিটের চিকিৎসকরা সবাই উপস্থিত থাকলেও প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসকরা ছিলেন না ৷ এই নিয়ে তিনি ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন ৷ চিকিৎসকদের গরহাজির থাকার বিষয়টি আমি অধ্যক্ষকে জানিয়েছি ৷ তিনি অবিলম্বে এনিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন ৷ একই কথা বলেছেন জেলাশাসকও ৷"