মালদা, 24 নভেম্বর : ফের বিতর্কের মুখে রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ৷ তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে কো-অপারেটিভ মার্কেটিং সোসাইটির চেয়ারম্যান নিয়োগ ও কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে (Malda Illegal Co-Operative Committee) ৷ যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি ৷ তবে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক ৷ অন্যদিকে, এ নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ৷
রতুয়ার সামসী কো-অপারেটিভ মার্কেটিং সোসাইটি ঘিরে এই বিতর্কের সূত্রপাত (Illegal Co-Operative Marketing Committee Formed) ৷ জানা গিয়েছে, প্রায় এক বছর আগে সোসাইটির পুরনো কমিটির মেয়াদ ফুরিয়েছে ৷ তার পর থেকে আর নতুন কমিটি গঠনের জন্য নির্বাচন হয়নি ৷ কয়েক মাস আগে প্রশাসনের তরফে বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়কে সোসাইটির স্পেশাল অফিসার নিয়োগ করা হয় ৷ সেই পদে এসে তিনি বেআইনিভাবে নতুন কমিটি গঠন ও চেয়ারম্যান নিয়োগ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ৷
এ নিয়ে সোসাইটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান আবু কালাম আজাদের বক্তব্য, “এক বছর আগে কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ৷ তার পর আমরা নির্বাচন দাবি করি ৷ কিন্তু, 11 মাস পেরিয়ে গেলেও নির্বাচন করা হয়নি ৷ স্থানীয় বিধায়ককে স্পেশাল অফিসার নিয়োগ করা হল ৷ সেই পদে এসে বিধায়ক কয়েকজনের একটি কমিটি তৈরি করেন ৷ এক রেশন ডিলারের ছেলেকে চেয়ারম্যানও করে দেন তিনি ৷ এটা পুরোপুরি বেআইনি ৷ এর পিছনে কমিশনের স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে বলে আমার ধারনা ৷ সব টাকা ভাগাভাগির খেলা (Illegal Co-Operative Marketing Committee in Malda) ৷ এখানে সব কিছু বিধায়কই করছেন ৷ এ নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি দিয়েছি ৷ আমরা দ্রুত নির্বাচন দাবি করছি।”
আরও পড়ুন : Jalpaiguri Hospital : রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের ঘর দখলে অভিযুক্ত ওএসডি
গুরুতর এই অভিযোগ নিয়ে সমরবাবুর বক্তব্য, “ওই সোসাইটির 11 বিঘা জমিতে বহু দামি গাছ ছিল ৷ সে সব গাছ ওরা কেটে বিক্রি করে দিয়েছে ৷ ওখানে 17 জন রেশন ডিলার রয়েছেন ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুয়ারে রেশন প্রকল্প চালু করেছেন ৷ সেই প্রকল্প চালু না করে, শিবু সাহা নামে একজন দীর্ঘদিন ধরে ওখানে ম্যানেজারি করছিলেন ৷ আমি তাঁকে সরিয়ে দিয়েছি ৷ আমি কোনও অবৈধ কাজ করি না ৷ সোসাইটির গুদামের চাবি পর্যন্ত ফড়েদের কাছে থাকত ৷ আমি গুদামে নতুন তালা লাগানোর সঙ্গে সেখানে সিসিটিভির ক্যামেরা বসিয়েছি ৷ আমি চাই, যে ডিলারের যত মাল পাওয়ার কথা, তাঁরা যেন তা পান ৷ ডিলার যেন মানুষের দুয়ারে রেশন দেন ৷”
জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন ৷ যদিও এ নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ৷ মালদার বিজেপি জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল বলছেন, “সমরবাবু যেভাবে মার্কেটিং সোসাইটির চেয়ারম্যান নিয়োগ করেছেন, তা সম্পূর্ণ আইনবিরুদ্ধ ৷ তিনি ভুল করেছেন ৷ তাঁর উচিত, সোসাইটির সব সদস্যদের ডেকে নতুন করে নির্বাচন করা ৷ নির্বাচনের মাধ্যমেই চেয়ারম্যান নিয়োগ করা উচিত ৷”
অন্যদিকে, মালদা সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচন না করে কোথাও অ্যাডমিনিস্ট্রেটর, কোথাও কো-অর্ডিনেটর বসিয়ে দেওয়া তৃণমূলের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে ৷ পৌরসভাগুলির ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ৷ ওরা নির্বাচনকে এড়াতে চাইছে ৷ আমরা চাই, প্রতিটি জায়গায় দ্রুত নির্বাচন করা হোক ৷ গণতন্ত্রকে কোথাও অমান্য করা যাবে না ৷’’
