মালদা, 9 এপ্রিল: জ্বর, সর্দি ও কাশির উপসর্গ নিয়ে আসা এক রোগীকে কোরোনা আশঙ্কায় 6 ঘণ্টা বাইরে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠল চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ৷ শেষ পর্যন্ত এলাকার কয়েকজন যুবকের উদ্যোগে ও BDO-র হস্তক্ষেপে ওই রোগীকে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন বিভাগে ভরতি করা হয়৷ আজ ওই রোগীর লালারস পরীক্ষাও হয় ৷ তবে, তাতে কোরোনা সংক্রমণের চিহ্ন মেলেনি৷ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক৷
গতরাতে জ্বর, সর্দি ও কাশির উপসর্গ নিয়ে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আসেন বছর তিরিশের যুবক জাকির হোসেন৷ তাঁর বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকায় ৷ তিনি রাজস্থানের জয়পুরে নির্মাণকর্মীর কাজ করতে গিয়েছিল ৷ লকডাউন ঘোষণার পরও রাজস্থানেই ছিলেন৷ এরমধ্যে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে 2 এপ্রিল মালদার বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়৷ এদিকে বাড়িতে ফেরার পর জাকির হোসেনের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। জ্বরের পাশাপাশি সর্দি ও গলা ব্যথার উপসর্গ দেখা দেয় তাঁর ৷ অবশেষে গতকাল সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যরা তাঁকে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসে ৷ হাসপাতাল ভবনের বাইরে রোগীকে রেখে চিকিৎসককে ডাকতে যান পরিবারের সদস্যরা ৷ এক চিকিৎসক হাসপাতালের মূল গেটের বাইরে ট্রলিতে রাখা জাকির হোসেন দেখতেও আসেন ৷ কিন্তু, উপসর্গ দেখে দূর থেকেই ওই যুবককে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে হাসপাতালের ভেতর ঢুকে পড়েন বলে অভিযোগ ৷ অন্যদিকে হাসপাতাল কর্মীরা ভয়ে মূল গেট বন্ধ করে দেন। অসুস্থ যুবকের বাড়ির সদস্যরা চিৎকার করলেও কেউ ভিতর থেকে বেরিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ ৷ পরে এগিয়ে আসেন এলাকার কিছু যুবক৷ তাঁরাই যোগাযোগ করেন স্থানীয় BDO-র সঙ্গে৷ শেষ পর্যন্ত BDO-র হস্তক্ষেপে রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ জাকির হোসেনকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়৷ ততক্ষণে পেরিয়ে গিয়েছে ছয় ঘণ্টা৷
স্থানীয় বাসিন্দা অমিতেশ পাণ্ডে বলেন, “সন্ধে সাড়ে ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ওই রোগী হাসপাতালের বাইরেই পড়ে ছিল৷ কোনও চিকিৎসক দেখতে আসেনি৷ যদিও চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেও আইসোলেশন ওয়ার্ড রয়েছে৷ ওই রোগীকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়নি৷ সেখানে অবশ্য কেউ ছিল না৷ খবর পেয়ে আমরা ছুটে আসি৷ পুলিশ থাকলেও কোনও অ্যাম্বুলেন্স ছিল না তখন ৷ ফলে BDO-র সঙ্গে যোগাযোগ করি৷ তৎপরতার সঙ্গে তিনি ওই রোগীকে মালদা মেডিকেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন৷"
এদিকে এই ঘটনায় মুখ খুলতে চায়নি চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷
এই বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী বলেন, “অবাঞ্ছিত ঘটনা ৷ আমি খোঁজ নিচ্ছি৷ গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে৷”