মালদা, 17 জুন : জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে এবার রুখে দাঁড়াল আদিবাসীরা ৷ সরকারি খাস জমিতে সেই মাফিয়াদের তৈরি নির্মাণ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় তারা ৷ কেটে ফেলা হয় খাস জমিতে লাগানো গাছ ৷ আজ দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার গড়গড়ি গ্রামে ৷ খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ ও সিভিকবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি ৷ ক্ষিপ্ত আদিবাসীদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন তিনি ৷
গড়গড়ি এলাকার এক আদিবাসী যুবক রমেশ ওরাঁও বলেন, “সরকারি খতিয়ান অনুযায়ী এই জমিটি খাস জমি ৷ আইন অনুযায়ী এই জমিতে হয় সরকারি কোনও প্রকল্প গড়ার কথা, অথবা ভূমিহীনদের মধ্যে পাট্টা দেওয়ার কথা ৷ কিন্তু স্থানীয় কিছু জমি মাফিয়া সরকারি এই খাস জায়গাটি দখল করে নেয় ৷ তারা বাইরের লোকজনকে এই জমি বিক্রি করেছে ৷ আমাদের এখানে অনেক আদিবাসী রয়েছে, যাদের ঘর বানানোর জমি নেই ৷ প্রয়োজনে এই জমির পাট্টা তাদের দেওয়া যেত ৷ আমরা বাইরের মানুষকে এখানে কেন বসতে দেব?"
রমেশ আরও বলেন, " আমরা পাঁচ বছর ধরে সরকারি খাস জমি দখলের বিষয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে জানিয়ে আসছি ৷ পুলিশে গেলে বলা হচ্ছে, এটা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাজ ৷ সেখানে গেলে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিডিওর দফতরে ৷ সেখান থেকে আবার অন্য কোথাও পাঠানো হচ্ছে ৷ কোথাও কোনও কাজ না হওয়ায় আজ আমরা এই খাস জমিতে তৈরি সব নির্মাণকাজ ভেঙে দিয়েছি ৷ এই জমি পাট্টা করে হয় স্থানীয় ভূমিহীনদের দিতে হবে, নয়তো সরকারি প্রকল্প গড়তে হবে ৷ সেসব না হলে এখানে খেলার মাঠ করতে হবে ৷”
উল্লেখ্য, বিতর্কিত এই জমিটির চারপাশেই আদিবাসী গ্রাম ৷ তাই জমি মাফিয়াদের হাত থেকে সরকারি জমি রক্ষা করতে আজ অস্ত্র হাতে রুখে দাঁড়িয়েছেন আদিবাসী মানুষজন ৷ ওই জমিতে যেসব অবৈধ নির্মাণ করা হয়েছিল তা সব ভেঙে দেওয়া হয়েছে ৷ কেটে ফেলা হয়েছে জমিতে লাগানো সমস্ত গাছ ৷
আরও পড়ুন : জমি বিবাদের জের, মালদায় প্রতিবেশীদের হাতে যুবক খুন
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষোভরত আদিবাসীদের সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে আলোচনা করেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয়কুমার দাস ৷ কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি ৷ এখনও চলছে আদিবাসীদের বিক্ষোভ ৷ তাদের অবরোধে আজ কয়েক ঘণ্টার জন্য হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেশন যাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায় ৷ আদিবাসীদের দাবি, জেলাশাসককে ঘটনাস্থলে এসে খাস জমি বাঁচানোর আশ্বাস দিতে হবে ৷ এনিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷