মালদা, 6 জুলাই : পদত্যাগ করলেন মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল ৷ তাঁর বিরুদ্ধে আনা তৃণমূল সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাব আইনি নয় । এই দাবিতে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন গৌরবাবু । আজ হাইকোর্টের বিচারপতি তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দেন । এই রায় বেরনোর পরই নাটকীয়ভাবে পদত্যাগ করেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল ।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজের অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন গৌরবাবু । এরপর তাঁকে মানিকচক কেন্দ্রে প্রার্থী করে গেরুয়া শিবির । কিন্তু ভোটে তৃণমূল প্রার্থী প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের কাছে হেরে যান তিনি । রাজ্যে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরই তাঁকে অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু করে তৃণমূল । জেলা বিজেপির তরফে বার বার দাবি করা হয়েছে, মালদা জেলা পরিষদে তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ । তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যকে নিজেদের বিভাগে হাজির করিয়ে জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নূর বুঝিয়ে দিয়েছেন, জেলা পরিষদের রাশ তাঁদের হাতেই ।
অবশেষে 17 জুন মালদার সহকারী ডিভিশনাল কমিশনারের কাছে সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন তৃণমূলের 23 জন সদস্য । তাঁদের মধ্যে ছিলেন বিজেপি'র দু'জন প্রাক্তন সদস্যও । তাঁরা গেরুয়া শিবির ছেড়ে তখন সদ্য ঘাসফুলে যোগ দিয়েছেন । সেই অনাস্থা প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে 8 জুলাই তলবি সভা ডাকেন ডিভিশনাল কমিশনার । এরই মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাবে একাধিক ভুল এবং কোভিড পরিস্থিতিতে এমন সভা অনৈতিক দাবি করে এই প্রস্তাব খারিজের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল ।
আরও পড়ুন : করোনায় ধ্বস্ত মালদার গম্ভীরা, বাঁশি ছেড়ে রিকশা টানছেন শিল্পী
আজ হাইকোর্টের বিচারপতি তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দেন । এদিন পদত্যাগের বিষয়ে ফোনে গৌরবাবু বলেন, "কোভিড পরিস্থিতির জন্য মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদে অনাস্থা প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে রাজ্য সরকার । অথচ মালদার ক্ষেত্রে কোভিড সংক্রমণের বিষয়টি দেখা হয়নি । তাছাড়া যে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল, তাতে আইনগত বেশ কিছু ভুল ছিল । এমনকি তাতে দিনের উল্লেখও ছিল না । সেই কারণেই আমি ওই অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের জন্য কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলাম । আজ বিচারপতি আমার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন । সেই কারণে আমি তলবি সভার আগেই পদত্যাগ করলাম । এর বেশি আমার কিছু বলার নেই ।"