মালদা, 8 জুন : বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়ির সামনে ধরনা প্রেমিকার ৷ এই ঘটনায় সোমবার রাত থেকে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদার চাঁচল-2 ব্লকের মালতিপুরের চিল্লাপাড়া গ্রামে ৷ প্রেমিকার বক্তব্য, প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে না দিলে তিনি ধরনা থেকে উঠবেন না ৷ যদি বিয়ে না দেওয়া হয়, তবে প্রেমিকের বাড়িতেই নিজেকে ফাঁসিতে লটকাবেন তিনি ! অন্যদিকে সোমবার থেকেই খোঁজ মিলছে না তাঁর প্রেমিকের ৷ ওই যুবকের মায়ের দাবি, ধরনায় বসে থাকা মেয়ের বাড়ির লোকেরাই তাঁর ছেলেকে অন্য কোথাও সরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন ৷ তিনি ছেলেকে ফিরে পেতে চান ৷
ধরনায় বসা প্রেমিকার নাম হেলি খাতুন ৷ বয়স 19 বছর ৷ বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুরের মালিওর গ্রামে ৷ তাঁর বাবা ইউসুফ আলি শ্রমিকের কাজ করেন ৷ হেলি স্থানীয় দৌলতপুর হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ৷ তাঁর প্রেমিক নাসিম আখতারের বয়স 22 বছর ৷ তিনি চেন্নাইয়ে একটি কাপড় কারখানায় কাজ করেন ৷
সম্প্রতি ভোট দিতে গ্রামে ফিরেছিলেন নাসিম ৷ আর কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাননি তিনি ৷ হেলির দাবি, “মোবাইলের মাধ্যমে এক বছর ধরে আমাদের মধ্যে সম্পর্ক ৷ তখন ও চেন্নাইয়ে ছিল ৷ কথাবার্তার পর আমাদের মধ্যে প্রেম হয় ৷ রবিবার নাসিম আমাকে নিয়ে এখানে আসে ৷ ওর মা আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় ৷ ওর মা আর মামা নাসিমকে কোথাও লুকিয়ে দেয় ৷ এখন ও বলছে আমাকে বিয়ে করবে না ৷ ও রাজি হলেও ওর বাবা-মা আমাকে ঘরে তুলবে না ৷’’
এদিকে নাসিমের মা নার্গিস বিবির দাবি, তাঁর ছেলেকে হেলির বাড়ির লোকজনই কোথাও সরিয়ে দিয়েছেন ৷ তিনি বলেন, “আমার ছেলে বাড়িতে নেই ৷ এই মেয়ের বাড়ির লোকজন তিনদিন ধরে ওকে কোথাও সরিয়ে দিয়েছে ৷ ছেলে অসুস্থ ছিল ৷ চাঁচলে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিল ৷ এই মেয়েই ওর দিদির বাড়িতে ছেলেকে আটকে রেখেছিল ৷ আমার ভাই নাসিমকে আনতে সেখানে যায় ৷ কিন্তু ভাইয়ের সঙ্গে থাকা ছেলেকে এই মেয়ের বাড়ির লোকজন কোথাও সরিয়ে দিয়েছে ৷ আমার ছেলেকে নিয়ে যদি এই মেয়ে বাড়ি আসে, তবে ওদের বিয়ে দেব ৷ নইলে আমি এই মেয়েকে ঘরে তুলব না ৷”
আরও পড়ুন : অপহৃতাকে প্রেমিকের বাড়ি থেকে উদ্ধারে চলল গুলি, জখম তিন পুলিশকর্মী
নার্গিস বিবি যাই বলুন, চিল্লাপাড়ার বাসিন্দারা কিন্তু হেলির পাশেই রয়েছেন ৷ গ্রামের বাসিন্দা আবদুল বারেক দুই পক্ষেরই আত্মীয় ৷ মঙ্গলবার তিনি বলেন, “গতকাল সন্ধেয় বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে অন্তত 50 জন আলোচনায় বসেন ৷ কিন্তু তারপরই ছেলের বাবা আর মামা গোলমাল শুরু করেন ৷ তাঁরা আইনের পথে যাবেন বলেন ৷ ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিতে রাজি নন তাঁরা ৷ আমরা চাইছি, এদের বিয়ে দেওয়া হোক ৷ গতকাল রাত থেকে মেয়েটি এখানে ধরনায় বসে রয়েছে ৷ এটা ঠিক হচ্ছে না ৷ আমরা কেউ সেটা চাইছি না ৷’’