ETV Bharat / state

গ্রাম সুরক্ষায় জঙ্গলে 14 দিনের কোয়ারান্টাইনে 4 শ্রমিক - জঙ্গলে ১৪ দিনের কোয়ারান্টাইনে চার শ্রমিক

কল্যাণীতে নির্মাণকর্মীর কাজে যান গাজোলের চার শ্রমিক৷ লকডাউনে কাজ বন্ধ হয়। গ্রামে ফিরে স্বেচ্ছায় জঙ্গলে কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করেন তাঁরা।

migrated laborer taken self quarantine in jungle
কোয়ারান্টাইন
author img

By

Published : Apr 8, 2020, 10:59 PM IST

মালদা, 8 এপ্রিল: লকডাউন ভাঙাটাই যেখানে দস্তুর হয়ে উঠেছে, এমনকী ভিনরাজ্য, দেশ থেকে এসেও 14 দিনের কোয়ারান্টাইন মানছেন না অনেকে। সেই সময় ভিনজেলা থেক আসায় স্বেচ্ছায় গ্রাম বিচ্ছিন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গাজোলের এক প্রত্যন্ত গ্রামের চার শ্রমিক ৷ গত 10 দিন ধরে তাঁরা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে দিন কাটাচ্ছেন জঙ্গলে৷ বিষয়টি জানতে পেরে আগামীকাল ওই চারজনের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান৷ চার শ্রমিকের এই মানসিকতাকে তারিফ করছেন গ্রামবাসীরাও।

কোরোনা প্রতিরোধে প্রধান দাওয়াই হল লকডাউন৷ এইসঙ্গে ভিনদেশ কিংবা রাজ্য থেকে আসা মানুষের জন্য 14 দিনের কোয়ারান্টাইন৷ বিশেষজ্ঞদের বাতলে দেওয়া এই নিদানেই ভরসা রাখছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার৷ প্রতি মুহূর্তে এই বিষয়গুলি মানতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হচ্ছে৷ কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করাটাই যেন রোজনামচা হয়ে দাঁড়িয়েছে কিছু মানুষের জন্যে৷ সেই সময় সম্পূর্ণ বিপরীত ছবি দেখা গেল গাজোল ব্লকের সালাইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের অখ্যাত পোলাডাঙা গ্রামে৷

migrated laborer taken self quarantine in jungle
জঙ্গলে স্বেচ্ছানির্বাসনে গাজোলের চার শ্রমিক।

দিন দশেক আগে ভিনজেলা থেকে এলাকায় ফিরেই স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে গিয়েছেন চারজন শ্রমিক৷ সেদিন থেকেই তাঁদের ঠিকানা গ্রামের বাইরের জঙ্গল৷ পরিবার কিংবা অন্য কাউকে সেখানে ঢুকতে দিচ্ছেন না তাঁরা৷ পোলাডাঙা গ্রামের মাঝ বরাবর চলে গিয়েছে মরা টাঙন নদী৷ তার এক ধারে বসতি, অন্য ধারে জঙ্গল৷ গত 10 দিন ধরে ওই জঙ্গলেই তাঁবু টাঙিয়ে রয়েছেন জ্যোতির্ময় সমাদ্দার (51), অমল বিশ্বাস (44), কৃষ্ণ সমাদ্দার (32) ও অসীম বিশ্বাস (48)৷ দেশে কোরোনার প্রকোপ শুরুর হওয়ার আগে তাঁরা নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে যান কল্যাণীতে৷ লকডাউন ঘোষণায় কল্যাণীর ওই হাসপাতাল নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়৷ তার মধ্যেও তাঁরা একটি গাড়ি ভাড়া করে কোনওভাবে মালদায় ফিরে আসেন৷ তবে প্রথমেই তাঁরা গ্রামে ফেরেননি৷ গিয়েছিলেন মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে৷ সেখানে প্রত্যেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান৷ চিকিৎসকরা তাঁদের 14 দিনের হোম কোয়ারান্টাইনের নির্দেশ দেন৷ এরপর তাঁরা ফোনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নদীর পাশের জঙ্গলে নিজেদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করেন৷ সেদিন থেকেই তাঁরা গ্রাম বিচ্ছিন্ন হয়ে জঙ্গলে রয়েছেন৷ পরিবারের সদস্যরা প্রতিদিন নদী পেরিয়ে অনেকটা দূরে ক্যারিব্যাগ বা কলারপাতায় খাবার দিয়ে যায়৷ এভাবেই স্বেচ্ছানির্বাসনে রয়েছেন চার শ্রমিক৷

এক শ্রমিক জ্যোতির্ময় সমাদ্দার বলেন, “কল্যাণীতে কাজ করার সময় কম্পানির পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হত৷ কিন্তু লকডাউন ঘোষণার পর কাজ বন্ধ হয়ে যায়৷ আমরা ফিরে আসি৷ মালদা মেডিকেল থেকে আমাদের 14 দিন কোয়ারান্টাইনে থাকতে বলা হয়৷ আমার বাড়িতে মা, স্ত্রী-সহ একটি মেয়েও আছে৷ তাদের জীবন নিয়ে কীভাবে খেলব? তাই এখানে থাকার সিদ্ধান্ত করি৷“

এই প্রসঙ্গে সালাইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জয় বেসরা বলেন, “ঘটনাটি আজই আমার কানে এসেছে৷ আমি আগামীকাল ওই চারজনের সঙ্গে দেখা করতে যাব৷ যেভাবে ওই চার শ্রমিক পরিবার ও গোটা গ্রামের কথা ভেবে নিজেদের স্বেচ্ছানির্বাসনে রেখেছেন, তার জন্য তাঁদের কুর্নিশ জানাই৷”

মালদা, 8 এপ্রিল: লকডাউন ভাঙাটাই যেখানে দস্তুর হয়ে উঠেছে, এমনকী ভিনরাজ্য, দেশ থেকে এসেও 14 দিনের কোয়ারান্টাইন মানছেন না অনেকে। সেই সময় ভিনজেলা থেক আসায় স্বেচ্ছায় গ্রাম বিচ্ছিন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গাজোলের এক প্রত্যন্ত গ্রামের চার শ্রমিক ৷ গত 10 দিন ধরে তাঁরা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে দিন কাটাচ্ছেন জঙ্গলে৷ বিষয়টি জানতে পেরে আগামীকাল ওই চারজনের সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান৷ চার শ্রমিকের এই মানসিকতাকে তারিফ করছেন গ্রামবাসীরাও।

কোরোনা প্রতিরোধে প্রধান দাওয়াই হল লকডাউন৷ এইসঙ্গে ভিনদেশ কিংবা রাজ্য থেকে আসা মানুষের জন্য 14 দিনের কোয়ারান্টাইন৷ বিশেষজ্ঞদের বাতলে দেওয়া এই নিদানেই ভরসা রাখছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার৷ প্রতি মুহূর্তে এই বিষয়গুলি মানতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হচ্ছে৷ কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করাটাই যেন রোজনামচা হয়ে দাঁড়িয়েছে কিছু মানুষের জন্যে৷ সেই সময় সম্পূর্ণ বিপরীত ছবি দেখা গেল গাজোল ব্লকের সালাইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের অখ্যাত পোলাডাঙা গ্রামে৷

migrated laborer taken self quarantine in jungle
জঙ্গলে স্বেচ্ছানির্বাসনে গাজোলের চার শ্রমিক।

দিন দশেক আগে ভিনজেলা থেকে এলাকায় ফিরেই স্বেচ্ছা নির্বাসনে চলে গিয়েছেন চারজন শ্রমিক৷ সেদিন থেকেই তাঁদের ঠিকানা গ্রামের বাইরের জঙ্গল৷ পরিবার কিংবা অন্য কাউকে সেখানে ঢুকতে দিচ্ছেন না তাঁরা৷ পোলাডাঙা গ্রামের মাঝ বরাবর চলে গিয়েছে মরা টাঙন নদী৷ তার এক ধারে বসতি, অন্য ধারে জঙ্গল৷ গত 10 দিন ধরে ওই জঙ্গলেই তাঁবু টাঙিয়ে রয়েছেন জ্যোতির্ময় সমাদ্দার (51), অমল বিশ্বাস (44), কৃষ্ণ সমাদ্দার (32) ও অসীম বিশ্বাস (48)৷ দেশে কোরোনার প্রকোপ শুরুর হওয়ার আগে তাঁরা নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে যান কল্যাণীতে৷ লকডাউন ঘোষণায় কল্যাণীর ওই হাসপাতাল নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়৷ তার মধ্যেও তাঁরা একটি গাড়ি ভাড়া করে কোনওভাবে মালদায় ফিরে আসেন৷ তবে প্রথমেই তাঁরা গ্রামে ফেরেননি৷ গিয়েছিলেন মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে৷ সেখানে প্রত্যেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান৷ চিকিৎসকরা তাঁদের 14 দিনের হোম কোয়ারান্টাইনের নির্দেশ দেন৷ এরপর তাঁরা ফোনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নদীর পাশের জঙ্গলে নিজেদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করেন৷ সেদিন থেকেই তাঁরা গ্রাম বিচ্ছিন্ন হয়ে জঙ্গলে রয়েছেন৷ পরিবারের সদস্যরা প্রতিদিন নদী পেরিয়ে অনেকটা দূরে ক্যারিব্যাগ বা কলারপাতায় খাবার দিয়ে যায়৷ এভাবেই স্বেচ্ছানির্বাসনে রয়েছেন চার শ্রমিক৷

এক শ্রমিক জ্যোতির্ময় সমাদ্দার বলেন, “কল্যাণীতে কাজ করার সময় কম্পানির পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হত৷ কিন্তু লকডাউন ঘোষণার পর কাজ বন্ধ হয়ে যায়৷ আমরা ফিরে আসি৷ মালদা মেডিকেল থেকে আমাদের 14 দিন কোয়ারান্টাইনে থাকতে বলা হয়৷ আমার বাড়িতে মা, স্ত্রী-সহ একটি মেয়েও আছে৷ তাদের জীবন নিয়ে কীভাবে খেলব? তাই এখানে থাকার সিদ্ধান্ত করি৷“

এই প্রসঙ্গে সালাইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জয় বেসরা বলেন, “ঘটনাটি আজই আমার কানে এসেছে৷ আমি আগামীকাল ওই চারজনের সঙ্গে দেখা করতে যাব৷ যেভাবে ওই চার শ্রমিক পরিবার ও গোটা গ্রামের কথা ভেবে নিজেদের স্বেচ্ছানির্বাসনে রেখেছেন, তার জন্য তাঁদের কুর্নিশ জানাই৷”

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.