মালদা, 13 অগস্ট: কয়েকদিনের বৃষ্টিতে নদীতে বেড়েছে জলস্তর ৷ এবার জলের প্রবল চাপে ভাঙল গঙ্গার বাঁধ । গতকাল মাঝরাতে মালদার ভূতনিচরের কেশরপুরে গঙ্গার বাঁধের প্রায় 40 মিটার অংশ ভেঙে পড়েছে । বানভাসি হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন চরের লক্ষাধিক মানুষ । রাত থেকেই ঘটনাস্থলে কাজ শুরু করা হয়েছে বলে দাবি করেছে সেচ দফতর । তবে এই বাঁধ রক্ষা করা যাবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে এলাকাবাসীর মনে ।
নদীর জলস্তর বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে । আজ সকালেও চরম বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে নদীর জলস্তর । জলের চাপেই গতকাল রাতে মানিকচক ব্লকের হীরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কেশরপুরে গঙ্গার বাঁধের অংশ ভেঙে যায় । ভাঙা বাঁধের অংশ দিয়ে হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করে গ্রামে । এই পরিস্থিতিতে এলাকাবাসীর ভরসা পুরোনো বাঁধ। ভাঙা বাঁধের 500 মিটার ভিতরে একটি পুরোনো বাঁধ রয়েছে । তবে সেই বাঁধের পরিস্থিতি ভাল নয় বলেই জানা গিয়েছে ।
কেশরপুর কলোনির বাসিন্দা সীতেশ মণ্ডল জানিয়েছেন, গতকাল রাতে বাঁধের অংশ ভেঙে গিয়েছে । প্রবল বেগে জল ভিতরে ঢুকছে । আসলে সময়মতো সরকার বাঁধ মেরামতির কোনও কাজ করে না । বন্যা এলেই সেইকাজ শুরু হয় । কাজের মানও ভাল হয় না। বস্তায় মাটি ঠিকমতো থাকে না। বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় আমরা আতঙ্কে রয়েছি। যে কোনও সময় আমরা তলিয়ে যেতে পারি । সেচ দফতর খুব ধীরগতিতে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করেছে। সেভাবে এখনও কাজ শুরু হয়নি। সবচেয়ে বড় সমস্যা, একদিকে গঙ্গার জল যেমন এলাকায় ঢুকতে শুরু করেছে, তার সঙ্গে ভাঙনও চলছে । তবে এখান থেকে 300 মিটার ভিতরে পুরোনো একটি বাঁধ রয়েছে । এখন সেটাই ভরসা । সেটাকে দ্রুত মেরামত করলে হয়ত গঙ্গার জল আটকানো যাবে । নইলে ভূতনিবাসীর অবস্থা শোচনীয় হয়ে যাবে । এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের কোনও আধিকারিককে এলাকায় দেখা যায়নি ।
আরও পড়ুন: মালদা মেডিক্যালে রোগীদের থেকে টাকা আদায়, ভাইরাল ভিডিয়ো
জেলা সেচ দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র প্রণবকুমার সামন্ত জানান, কেশরপুর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়ার পর রাতেই দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন । পরিস্থিতির উপর তাঁরা নজর রাখছেন । আপাতত পুরনো বাঁধটিকে যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে সংস্কার করা হচ্ছে। যে জায়গায় বাঁধ ভেঙেছে, সেখানে গঙ্গা ইংরেজির ইউ আকৃতি নিয়েছে। কারণ, ওই জায়গা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে গঙ্গায় নতুন চর তৈরি হচ্ছে । ফলে নদীর ভিতরের স্রোত সরাসরি বাঁধের নীচে আঘাত করছিল । 2012 সালে সেখানে বাঁধ সংস্কারের কাজ করেছিল ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ। সেচ দফতর সেখানে এতদিন শুধু বাঁধ রক্ষার কাজই করে গিয়েছে। সংস্কারের কোনও কাজ করেনি।