মালদা, 24 অক্টোবর : আন্ত্রিক আতঙ্কে ভুগছে চাঁচলের রানিদিঘি গ্রাম ৷ ইতিমধ্যেই আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়ে দু'জনের মৃত্যু হয়েছে বলেও অভিযোগ ৷ ঘটনার খবর পেয়ে গ্রামে যেতেই গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন প্রশাসনিক কর্তারা ৷
চাঁচল ২ নম্বর ব্লকের খেমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রানিদিঘি গ্রামে প্রায় ১০০ পরিবারের বসবাস ৷ গ্রামে রয়েছে একটিই মাত্র টিউবওয়েল ৷ সেটিও দীর্ঘদিন ধরে খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে ৷ বাধ্য হয়েই পুকুরের জল ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয়দের ৷ বেশ কয়েকদিন ধরে গ্রামের বাসিন্দাদের পেটের রোগ দেখা দিচ্ছে ৷ ইতিমধ্যে, দীপক ভুঁইঞা (১৬) ও দুলিয়া ভুঁইঞা (৫০) নামে দুই গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে । তারপর থেকেই গ্রামবাসীদের মধ্যে ছড়িয়েছে আতঙ্ক । গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তারদের দিয়েই বাড়িতে চিকিৎসা করাচ্ছে তারা ৷ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামে যান চাঁচলের মহকুমাশাসক সব্যসাচী রায়, চাঁচল ২ ব্লক আধিকারিক অমিতকুমার সাউ সহ স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা ৷ গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁদের ৷
গ্রামের এক বাসিন্দা সখী হেমব্রম বলেন, "আমাদের টিউবওয়েল নেই, কুয়ো নেই ৷ আমরা কীসের জল খাব ৷ স্থানীয় পঞ্চায়েতকে বহুবার জানানো হয়েছে ৷ ভোট এলে টিউবওয়েল, সাবমার্শল বসানোর প্রতিশ্রুতি মেলে ৷ তারপর আর কিছুই হয় না ৷ ২০ বছর আগে এখানে একটা টিউবওয়েল বসেছিল ৷ সেটাও এখন ভেঙে পড়ে রয়েছে ৷ কয়েকদিন আগে গ্রামে দু'জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ এর আগে প্রায় 7-8 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ এখন গ্রামের প্রায় 20জন রোগে আক্রান্ত ৷ এই পরিস্থিতিতে আমাদের খাওয়া-দাওয়া করতেও ভয় লাগছে ৷ অনেকেই গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছেন ৷"
মহকুমাশাসক সব্যসাচী রায় বলেন, "জেলা পরিষদের সদস্যদের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পারি ৷ গ্রামে এসে দেখতে পেলাম এক শিশু অসুস্থ ৷ তাকে আমরা চাঁচল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাচ্ছি ৷ গ্রামে দীর্ঘদিন ধরেই পানীয় জনের সমস্যা রয়েছে ৷ স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বিষয়টি জেনেও কোনও পদক্ষেপ নেননি ৷ আজ গ্রামে একটি টিউবওয়েল বসানো হচ্ছে ৷ আরও দু'টো টিউবওয়েলের জন্য BDO সাহেবের কাছে আবেদন করা হয়েছে ৷ গ্রামে কিছু শৌচাগারের ব্যবস্থা করারও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে ৷" গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, "গ্রামে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে গেলে এটা স্বাভাবিক ৷ ঘটনার খবর পেয়ে আমরা গ্রামের সমস্যার সমাধানের জন্য এসেছি ৷"