মালদা, 26 এপ্রিল: ক্লাসরুমে প্রায় 70 জন পড়ুয়া । সামনে বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে এক ব্যক্তি । টেবিলে দু'টি বোতলে পেট্রল । পড়ুয়াদের চোখে-মুখে তখন আতঙ্কের ছাপ । বন্দুক উঁচিয়ে ওই ব্যক্তি হুমকি দিচ্ছে । এরই মধ্যে হিরোর মতো ঝাঁপিয়ে পড়লেন মালদার ডেপুটি পুলিশ সুপার (ডিঅ্যান্ডটি) আজহারউদ্দিন খান । এগিয়ে এল ব্যাকআপ ফোর্সও । বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ছাড়া কীভাবে এই দুঃসাহসিক পদক্ষেপ নিলেন ডিএসপি ? জানালেন ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে...
প্রশ্ন: ওই ব্যক্তির দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ার আগে কী ভাবছিলেন ?
উত্তর: প্রথমেই যেটা মাথায় চলছিল, ক্লাসরুমে প্রায় 70 জন পড়ুয়া রয়েছে । তারা কতখানি আতঙ্কে রয়েছে । অভিভাবকদের কী অবস্থা । এই বাচ্চা আমার-আপনারও হতে পারত । তাই বাচ্চাদের সুরক্ষার কথা বারবার মাথায় আসছিল ।
প্রশ্ন: বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ছাড়া এগিয়ে যাওয়ার সাহস এল কীভাবে ?
উত্তর: আমাদের সব পরিস্থিতিতে মোকাবিলা করার ট্রেনিং রয়েছে । পুলিশে কাজ করা মানে প্রাণের ঝুঁকি থাকেই । তাছাড়া মনে মনে পরিকল্পনা করছিলাম । ওই ব্যক্তির ওপর কোনওমতে ঝাঁপিয়ে পড়ে আগ্নেয়াস্ত্র কেড়ে নিতে পারলেই কাজ হয়ে যাবে । ফোর্স ব্যাকআপ দেওয়ার জন্যও তৈরি । তাই শুধু ওই ব্যক্তির চোখের দিকে নজর ছিল । ক্রমাগত এই ক্যামেরা, ওই ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে কথা বলছিল ওই ব্যক্তি । সেদিকে নজর রাখছিলাম । একটু নজর সরতেই ঝাঁপিয়ে পড়ি ।
প্রশ্ন: এর আগে কখনও এরকম পরিস্থিতিতে পড়েছেন ?
উত্তর: এ ধরনের পরিস্থিতিতে কোনওদিন পড়িনি । পরিস্থিতি কোনওদিন বলেও আসে না । আমাদের সব সময় প্রস্তুত থাকতে হয় ।
প্রশ্ন: কালিয়াগঞ্জে নিহতের দেহ নিয়ে যাওয়া নিয়ে পুলিশকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছিল । আজ আপনার ভূমিকায় ফের পুলিশকে হিরো রূপে দেখা গেল, কী বলবেন ?
উত্তর: এ নিয়ে কোনও মন্তব্য না-করাই ভালো ।
প্রশ্ন: খোদ মুখ্যমন্ত্রী আজ আপনাদের প্রশংসা করেছেন, কেমন লাগছে ?
উত্তর: সংবাদমাধ্যমে দেখলাম । খুব ভালো লাগছে । মুখ্যমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি । ওই বাচ্চাগুলোকে নিরাপদভাবে বের করে আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল । পাশাপাশি ওই ব্যক্তিকেও আটক করা হয়েছে ।
আরও পড়ুন: মালদায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে স্কুলে ঢুকে পড়ার ঘটনায় পুলিশের প্রশংসায় মুখ্যমন্ত্রী