মালদা, 22 জুলাই: আর গোপন নয়, প্রকাশ্যেই চলে এসেছে মালদার বামনগোলার পাকুয়াহাটে নারী নির্যাতনের ঘটনা । পুলিশ এখনও পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু জানায়নি । কিন্তু ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইতিমধ্যে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে ৷ বামনগোলা থানার একটি সূত্রেই সেই খবর মিলেছে । এদিকে এই ঘটনায় ওই দুই মহিলাকে গ্রেফতার করে আদালতে পেশ করে জেলে পাঠানোর অভিযোগ তুলেছেন নির্যাতিতা দুই মহিলার পরিবারের লোকজন । যদিও পুরো ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে জেলা পুলিশ ।
নির্যাতিতা এক মহিলার মেয়ে বলেন, “গত মঙ্গলবার মা পাকুয়াহাটে লেবু বিক্রি করতে গিয়েছিল । স্থানীয় এক মিষ্টি বিক্রেতা মায়েদের নামে মিথ্যে চুরির অভিযোগ তোলে । এরপরেই স্থানীয় লোকজন মা আর কাকিমাকে বিবস্ত্র করে মারধর করে । বর্তমানে আমার মা ও কাকিমা জেলে রয়েছেন । থানা থেকে সিভিক ভলান্টিয়ার এসে মা ও কাকিমার ছবি দেখিয়ে ঘটনা জানায় । এরপরই আমরা থানায় যাই । যারা মায়েদের মারধর করে পুলিশ তাদের না ধরে আমার মা আর কাকিমাকে ধরে নেয় ।”
স্থানীয় এক বাসিন্দা শেখ ফারবুদ বলেন, “আমরা শুনতে পেলাম, ওই দুই মহিলা নাকি পাকুয়াহাটে লেবু বিক্রি করতে গিয়েছিল । সেই সময় চোর সন্দেহে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধর করে স্থানীয় লোকজন । পুলিশ নাকি ওই দুই মহিলাকেই তুলে নিয়ে গিয়েছে । এটা পুলিশ অন্যায় করেছে । আমরা চাই দুই মহিলাকে অবিলম্বে ছেড়ে, তাদের ওপর নির্যাতনকারীদের শাস্তি দেওয়া হোক ।”
আরও পড়ুন: দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধরের ভিডিয়ো নিয়ে সরব বিজেপি, তদন্তে মালদা পুলিশ
উল্লেখ্য, বামনগোলা থানার পাকুয়াহাটে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য, দেশের সীমানা ছাড়িয়ে তোলপাড় পড়েছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও । এনিয়ে শাসকদলকে একের পর এক আক্রমণ করে চলেছে গেরুয়া শিবির । শনিবার সকালে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য একটি ভিডিয়ো টুইট করেন । সেই ভিডিয়োয় দেখা যায়, প্রকাশ্য হাটে দুই মহিলাকে প্রমীলাবাহিনী বেধড়ক মারধর করে চলেছে । দুই সিভিক ভলান্টিয়ারের উপস্থিতিতেই এই ঘটনা চলছে । মারধরের চোটে দুই মহিলা পুরোপুরি বিবস্ত্র হয়ে পড়েন । তার মধ্যেই চলতে থাকে জুতো পেটা ।
সোশাল মিডিয়ায় এই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন । তড়িঘড়ি বামনগোলা থানার পাকুয়াহাট ফাঁড়িতে ছুটে যান পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) আবু বক্কর, ডিএসপি (ডিঅ্যান্ডটি) আজহারউদ্দিন খান-সহ অন্যান্যরা । ফাঁড়ি থেকে বেরোনোর পরে সংবাদমাধ্যমকে পুরোপুরি এড়িয়ে চলে যান পুলিশ সুপার ।
আরও পড়ুন: মণিপুরের মতো বামনগোলার ঘটনাও শিউরে ওঠার মতো, মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা সুজনের