মালদা, 8 জুলাই : ব্ল্যাকমেল করে টাকা হাতাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় হানি ট্র্যাপের ফাঁদ পেতেছিল মালদার দুই যুবক । ফেসবুকে মেয়েদের ফেক প্রোফাইল বানিয়ে এবং সেই প্রোফাইল থেকে অশ্লীল ভিডিয়ো দেখিয়ে একাধিক যুবককে ব্ল্যাকমেল করত । মাস ছয়েক ধরেই চলছিল এই ব্যবসা । কয়েকদিন আগে এ-বিষয়ে মালদা সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কয়েক জন প্রতারিত । তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ । বিষয়টি জানতে পেরেই আতঙ্কে ভুগতে শুরু করে এই চক্রের এক সদস্য । পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে যায় মাসির বাড়ি । সেখানেই আত্মঘাতী হয় সে । এই ঘটনায় তার সঙ্গীকেও পাকড়াও করেছে পুলিশ । বৃহস্পতিবার ধৃতকে মালদা জেলা আদালতে পেশ করা হয় ।
মালদা জেলার সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতারণা করতে ফেসবুককে হাতিয়ার করেছিল ইংরেজবাজার থানার জোতবসন্ত গ্রামের দুই যুবক আশিস মণ্ডল ও প্রসেনজিৎ মণ্ডল । তারা ফেসবুকে হানি ট্র্যাপ তৈরি করে । ফেসবুক থেকে অপরিচিত মেয়েদের একাধিক ভিডিয়ো ডাউনলোড করে সেই মেয়েদের ছবি দিয়েই তারা একাধিক ফেক প্রোফাইল তৈরি করে । প্রতিটি প্রোফাইলের জন্য তারা আলাদা আলাদা সিমকার্ড ব্যবহার করত । সেই প্রোফাইল থেকে তারা নিজেদের পরিচিত যুবকদেরই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাত । কেউ তা অ্যাকসেপ্ট করলে তারা প্রথমে মেসেঞ্জারে ওই যুবকদের ফোন নম্বর সংগ্রহ করত । তারপর ওই ভুয়ো প্রোফাইল থেকে সেই যুবকদের লাইভ অশ্লীল ভিডিয়ো দেখাত । তার জন্য তারা আগেই পর্ন ভিডিয়োতে অপরিচিত মেয়েদের মুখ সুপার ইম্পোজ করে রাখত । কেউ সেই লাইভ ভিডিয়ো দেখতে গেলেই তারা স্ক্রিনশর্ট নিয়ে নিত । তারপরেই শুরু হত প্রতারণা ।
আরও পড়ুন: জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে বিজেপি নেতা, বিতর্ক মালদায়
ফেক প্রোফাইলের বন্ধুদের হোয়াটস অ্যাপে লাইভ স্ট্রিমিয়ের স্ক্রিনশট পাঠিয়ে দিত আশিস ও প্রসেনজিৎ । দাবি করত টাকা । অবশ্য তারা হাতে টাকা নিত না । তার জন্য ফোনপে অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হত । এভাবেই তারা নিজেদের পরিচিতদের প্রতারণা করে অনেক টাকা হাতিয়ে নিত । হানি ট্র্যাপে পড়ে একাধিকবার টাকা খুইয়ে শেষ পর্যন্ত 26 জুন গোটা ঘটনা জানিয়ে মালদা সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কয়েকজন প্রতারিত । অভিযোগের বয়ান দেখেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ । শুরু করে তদন্ত ।