মালদা, 25 এপ্রিল: মৃত্যু নিয়েও রাজনীতি ৷ কালিয়াচকে খুন হওয়া পুরাতন মালদার কিশোরীর দেহের দখল নিয়ে মঙ্গলবার ঝামেলায় জড়াল বিজেপি-সিপিএম ৷ মালদা মেডিক্যালের ময়নাতদন্তের ঘরের সামনে দুই বিরোধী দলের বিরোধ সবার নজরে আসে ৷ এ নিয়ে প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে ৷ মৃত্যুর পরেও কি কালিয়াগঞ্জ, কালিয়াচকে খুন হওয়া কিশোরীরা ন্যূনতম সম্মানটুকু পেতে পারে না ?
এদিনই মালদা মেডিক্যালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ওই নাবালিকার দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে ৷ গোটা তদন্ত প্রক্রিয়ার ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে ৷ ময়নাতদন্ত চলাকালীন কিশোরীর পরিবারের সদস্যরাও মেডিক্যালে উপস্থিত ছিলেন ৷ সেই সময় মেডিক্যালে চলে আসেন সিপিএমের মহিলা সদস্যরা ৷ আসেন পুরাতন মালদার বিজেপির বিধায়ক-সহ গেরুয়া শিবিরের নেতা-কর্মীরাও ৷ প্রথম থেকেই দু'পক্ষের মধ্যে কথা চালাচালি চলছিল ৷ একসময় সেটা ধাক্কাধাক্কিতে পৌঁছে যায় ৷
সিপিএমের মহিলা সংগঠন সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির মালদা জেলা সম্পাদিকা রুণু কুণ্ডুর অভিযোগ, "আমরা নিহত কিশোরীর পরিবারের পাশে রয়েছি ৷ তার দেহ মেডিক্যালে আসার আগে থেকেই আমরা এখানে রয়েছি ৷ ময়নাতদন্তের সময় নিহত কিশোরীর মাকে আমরা ডায়েরির কাগজে স্বাক্ষর করাচ্ছিলাম ৷ তখনই পুরাতন মালদার বিজেপি বিধায়ক ও তাঁর সঙ্গীরা আমাকে ধাক্কাধাক্কি করেন ৷ আমাকে খুনের হুমকি দেন ৷ আমরা আজ পুলিশের ডায়েরিও পড়েছি ৷ সেখানে কিছু ত্রুটি আমাদের নজরে এসেছে ৷ পুলিশের ডায়েরিতে খুনের উল্লেখ নেই ৷ পুলিশকে সেকথা জানালে তাঁরা জানিয়েছেন, ওই অংশগুলি চিকিৎসক লিখবেন ৷ তখনই বিজেপির লোকজন এখানে এসে ঝামেলা শুরু করে ৷"
এদিকে এলাকার বিজেপি বিধায়ক গোপালচন্দ্র সাহা জানান, বাংলায় সিপিএমের কোনও অস্তিত্ব এখন নেই ৷ এখন প্রচারে থাকতে তাঁরা এখানে এসেছেন ৷ তাঁর এলাকার একটি মেয়ে খুন হয়েছে ৷ খবর পেয়ে তিনি ওই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এখানে চলে আসেন ৷ মেয়েটির মায়ের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি ৷ তখন কয়েকজন মহিলা মেয়ের মাকে নিয়ে পোস্টমর্টেম রুমের ভিতরে চলে যান ৷ মেয়েটির মাকে দিয়ে কোনও কাগজে স্বাক্ষর করাচ্ছিলেন তাঁরা ৷ তিনি প্রশ্ন করেন, তাঁরা কোন কাগজে স্বাক্ষর করাচ্ছেন ৷ তা তাঁরা বলতে পারেননি ৷
তিনি বলেন, "আমি কাউকে কোনও হুমকি দিইনি ৷ আসলে তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএমের গোপন আঁতাত রয়েছে ৷ সে কারণেই এই মহিলারা নিহতের মা'কে দিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করাচ্ছিলেন ৷" অন্যদিকে মেডিক্যাল চত্বরে সিপিএম-বিজেপির ঝামেলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ বাহিনী ৷ পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ৷
আরও পড়ুন: কালিয়াচকে নাবালিকার দেহ উদ্ধারে ধর্ষণের পর খুনের অভিযোগ, তদন্তে পুলিশ