ETV Bharat / state

Covid Effects on Saraswati Puja : বাগদেবীর আরাধনায় করোনার ছায়া, বরাতহীন মৃৎশিল্পীরা - বাগদেবীর আরাধনায় করোনার ছায়া

করোনার প্রকোপ এ বার সরস্বতী আরাধনায় ৷ এমনটাই বলছেন মালদার মৃৎশিল্পীরা (Covid Effects on Saraswati Puja in Malda) ৷ করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের জেরে স্কুল-কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রতিমার বরাত নেই বলে জানাচ্ছেন মৃৎশিল্পীরা ৷ গত বছরও 30-35টা প্রতিমা তৈরি করলেও, এ বার মেরে কেটে 10টি প্রতিমার বরাতও আসেনি ৷

Covid Effects on Saraswati Puja
বাগদেবীর আরাধনায় করোনার ছায়া, বরাতহীন মৎশিল্পীরা
author img

By

Published : Jan 12, 2022, 8:04 PM IST

Updated : Jan 12, 2022, 9:35 PM IST

মালদা, 12 জানুয়ারি : করোনার ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ অব্যাহত । তার মধ্যেই এগিয়ে আসছে সরস্বতী পুজো ৷ জেন ওয়াইয়ের কাঙ্খিত সেই পুজো এবার ঠিকমতো হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ভাইরাসের আতঙ্কে খোলার পরেও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাস। পড়ুয়াদের ফিরে যেতে হয়েছে সেই অনলাইন ক্লাসে। তাই এবার স্কুলগুলোর মধ্যেও সরস্বতী পুজো আয়োজনের চাহিদা নেই । তেমনটাই জানাচ্ছেন মালদার মৃৎশিল্পীরা । তাঁদের বক্তব্য, শুধু স্কুল-কলেজই নয়, মানুষের মধ্যেও এ বার সরস্বতী পুজো নিয়ে কোনও আগ্রহ নেই । তাই হাতে গোনা কয়েকদিন বাকি থাকলেও এখনও সেভাবে প্রতিমার বরাত মিলছে না । কারণ অবশ্যই করোনা (Covid Effects on Saraswati Puja in Malda) ৷

মালদা শহরের মৃৎশিল্পী অষ্টম চৌধুরীর কথায়, “খুবই খারাপ পরিস্থিতি। গতবার 30-35টা সরস্বতী প্রতিমা গড়েছিলাম । এবার 5-7টা প্রতিমার বরাত মিলেছে । সেগুলিও ছোট প্রতিমা। কেউ পুজো করার সাহস পাচ্ছেন না । গতবার একাধিক স্কুল ও ক্লাবের প্রতিমা বানিয়েছিলাম । এবার সেই জায়গাগুলি থেকে একটিও বরাত আসেনি । আর বরাত পাওয়া যাবে না বলেই মনে হয় । এই পরিস্থিতিতে রেডিমেড প্রতিমা তৈরির সাহসও দেখাতে পারছি না।”

আরেক মৃৎশিল্পী সজল পণ্ডিত জানান, “এ বার সরস্বতী পুজোর কাজকর্ম তেমন নেই । স্কুলগুলিও পুজো করতে উৎসাহ দেখাচ্ছে না । করোনা সংক্রমণ বেড়েছে বলেই সম্ভবত এই পরিস্থিতি । অন্যান্য বছর এই সময় কাজ মোটামুটি শেষ হয়ে যায় । এ বার সেভাবে কাজ শুরুই করতে পারিনি । গতবার তিনটি স্কুলের প্রতিমা বানিয়েছিলাম । বেশ কয়েকটি ক্লাবের বড় প্রতিমা ছিল । এ বার স্কুল থেকে মাত্র একটি অর্ডার পেয়েছি । ক্লাবগুলিও নিজেদের প্রতিমা ছোট করে দিয়েছে । ফলে সরস্বতী প্রতিমা গড়ে বিশেষ কোনও লাভ হবে না ।”

বাগদেবীর আরাধনায় করোনার ছায়া, বরাতহীন মৎশিল্পীরা

গতবার 80টি সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করেছিলেন মৃৎশিল্পী হালদার । সবই বিক্রি হয়ে গিয়েছিল । করোনার ধাক্কায় এবার সংকটে তিনিও । জানালেন, “এবার বরাতের অবস্থা ভাল নয়। গতবার ভাল বায়না পেয়েছিলাম । 80টি প্রতিমা তৈরি করেছিলাম । এ বার তার অর্ধেক তৈরি করব ভেবেছি । এখনও পর্যন্ত মাত্র 7-8টি প্রতিমার বরাত পেয়েছি । একটিও স্কুলের বরাত পাইনি । অথচ গত বছর 13-14টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বরাত ছিল । মালদা কলেজ, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিমাও তৈরি করেছিলাম । এবার কোথাও থেকে কোনও সাড়া নেই । শেষ পর্যন্ত কী হবে জানি না । তবে, এখন আর বড় প্রতিমা তৈরি করা যাবে না । এবার সরস্বতী পুজো খুব ভাল হবে না । করোনাই এর কারণ ।”

খানিকটা ব্যতিক্রমী মালদা শহরের প্রখ্যাত মৃৎশিল্পী রাজকুমার পণ্ডিত । গতবার যত প্রতিমা বানিয়েছিলেন, এ বারও প্রায় ততগুলিই তৈরি করছেন । তিনি বলেন, “গতবারের তুলনায় বরাত বাড়ে বা কমেনি । তবে, স্কুলগুলির বরাত সেভাবে নেই । গতবার তবু দু’তিনটি স্কুলের প্রতিমা বানিয়েছিলাম । এবার একটারই বরাত পেয়েছি । করোনার জন্যই এমন পরিস্থিতি । স্কুল-কলেজ খুলছে না । সেখানে বড় আয়োজনে পুজো হবে কীভাবে ? সম্ভবত ছোট পুজো করেই এবার স্কুলগুলি এই পর্ব শেষ করবে । অনেক পড়ুয়া হয়তো বাড়িতেই পুজো সেরে নেবে ।”

শিল্পীদের আশঙ্কা যে সঠিক তা বোঝা গিয়েছে পুরাতন মালদার কালাচাঁদ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রাহুলরঞ্জন দাসের কথায় । ফোনে তিনি জানান, “সরস্বতী পুজো নিয়ে সম্প্রতি স্কুলে বৈঠক হয়েছে । যে শিক্ষকরা এই পুজোর দায়িত্বে থাকেন, তাঁরাও বৈঠকে ছিলেন । কিন্তু ছাত্রছাত্রীরাই যদি না থাকে, তবে সেই পুজো কীভাবে আগের মতো হবে ? তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে কয়েকজন শিক্ষক আর সিনিয়র কিছু ছাত্রকে নিয়ে আমরা কোনওরকমে এবার পুজো করে নেব । শুধু নিয়ম রক্ষাই হবে । আর কিছু নয় । এর মধ্যে সরকার সবকিছু স্বাভাবিক করে দিলে সেটা পরে ভাবা যাবে । হাতে সময় কম থাকলেও আমরা পুজোর আয়োজন করে নিতে পারব ।”

মালদা, 12 জানুয়ারি : করোনার ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ অব্যাহত । তার মধ্যেই এগিয়ে আসছে সরস্বতী পুজো ৷ জেন ওয়াইয়ের কাঙ্খিত সেই পুজো এবার ঠিকমতো হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ভাইরাসের আতঙ্কে খোলার পরেও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাস। পড়ুয়াদের ফিরে যেতে হয়েছে সেই অনলাইন ক্লাসে। তাই এবার স্কুলগুলোর মধ্যেও সরস্বতী পুজো আয়োজনের চাহিদা নেই । তেমনটাই জানাচ্ছেন মালদার মৃৎশিল্পীরা । তাঁদের বক্তব্য, শুধু স্কুল-কলেজই নয়, মানুষের মধ্যেও এ বার সরস্বতী পুজো নিয়ে কোনও আগ্রহ নেই । তাই হাতে গোনা কয়েকদিন বাকি থাকলেও এখনও সেভাবে প্রতিমার বরাত মিলছে না । কারণ অবশ্যই করোনা (Covid Effects on Saraswati Puja in Malda) ৷

মালদা শহরের মৃৎশিল্পী অষ্টম চৌধুরীর কথায়, “খুবই খারাপ পরিস্থিতি। গতবার 30-35টা সরস্বতী প্রতিমা গড়েছিলাম । এবার 5-7টা প্রতিমার বরাত মিলেছে । সেগুলিও ছোট প্রতিমা। কেউ পুজো করার সাহস পাচ্ছেন না । গতবার একাধিক স্কুল ও ক্লাবের প্রতিমা বানিয়েছিলাম । এবার সেই জায়গাগুলি থেকে একটিও বরাত আসেনি । আর বরাত পাওয়া যাবে না বলেই মনে হয় । এই পরিস্থিতিতে রেডিমেড প্রতিমা তৈরির সাহসও দেখাতে পারছি না।”

আরেক মৃৎশিল্পী সজল পণ্ডিত জানান, “এ বার সরস্বতী পুজোর কাজকর্ম তেমন নেই । স্কুলগুলিও পুজো করতে উৎসাহ দেখাচ্ছে না । করোনা সংক্রমণ বেড়েছে বলেই সম্ভবত এই পরিস্থিতি । অন্যান্য বছর এই সময় কাজ মোটামুটি শেষ হয়ে যায় । এ বার সেভাবে কাজ শুরুই করতে পারিনি । গতবার তিনটি স্কুলের প্রতিমা বানিয়েছিলাম । বেশ কয়েকটি ক্লাবের বড় প্রতিমা ছিল । এ বার স্কুল থেকে মাত্র একটি অর্ডার পেয়েছি । ক্লাবগুলিও নিজেদের প্রতিমা ছোট করে দিয়েছে । ফলে সরস্বতী প্রতিমা গড়ে বিশেষ কোনও লাভ হবে না ।”

বাগদেবীর আরাধনায় করোনার ছায়া, বরাতহীন মৎশিল্পীরা

গতবার 80টি সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করেছিলেন মৃৎশিল্পী হালদার । সবই বিক্রি হয়ে গিয়েছিল । করোনার ধাক্কায় এবার সংকটে তিনিও । জানালেন, “এবার বরাতের অবস্থা ভাল নয়। গতবার ভাল বায়না পেয়েছিলাম । 80টি প্রতিমা তৈরি করেছিলাম । এ বার তার অর্ধেক তৈরি করব ভেবেছি । এখনও পর্যন্ত মাত্র 7-8টি প্রতিমার বরাত পেয়েছি । একটিও স্কুলের বরাত পাইনি । অথচ গত বছর 13-14টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বরাত ছিল । মালদা কলেজ, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিমাও তৈরি করেছিলাম । এবার কোথাও থেকে কোনও সাড়া নেই । শেষ পর্যন্ত কী হবে জানি না । তবে, এখন আর বড় প্রতিমা তৈরি করা যাবে না । এবার সরস্বতী পুজো খুব ভাল হবে না । করোনাই এর কারণ ।”

খানিকটা ব্যতিক্রমী মালদা শহরের প্রখ্যাত মৃৎশিল্পী রাজকুমার পণ্ডিত । গতবার যত প্রতিমা বানিয়েছিলেন, এ বারও প্রায় ততগুলিই তৈরি করছেন । তিনি বলেন, “গতবারের তুলনায় বরাত বাড়ে বা কমেনি । তবে, স্কুলগুলির বরাত সেভাবে নেই । গতবার তবু দু’তিনটি স্কুলের প্রতিমা বানিয়েছিলাম । এবার একটারই বরাত পেয়েছি । করোনার জন্যই এমন পরিস্থিতি । স্কুল-কলেজ খুলছে না । সেখানে বড় আয়োজনে পুজো হবে কীভাবে ? সম্ভবত ছোট পুজো করেই এবার স্কুলগুলি এই পর্ব শেষ করবে । অনেক পড়ুয়া হয়তো বাড়িতেই পুজো সেরে নেবে ।”

শিল্পীদের আশঙ্কা যে সঠিক তা বোঝা গিয়েছে পুরাতন মালদার কালাচাঁদ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রাহুলরঞ্জন দাসের কথায় । ফোনে তিনি জানান, “সরস্বতী পুজো নিয়ে সম্প্রতি স্কুলে বৈঠক হয়েছে । যে শিক্ষকরা এই পুজোর দায়িত্বে থাকেন, তাঁরাও বৈঠকে ছিলেন । কিন্তু ছাত্রছাত্রীরাই যদি না থাকে, তবে সেই পুজো কীভাবে আগের মতো হবে ? তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে কয়েকজন শিক্ষক আর সিনিয়র কিছু ছাত্রকে নিয়ে আমরা কোনওরকমে এবার পুজো করে নেব । শুধু নিয়ম রক্ষাই হবে । আর কিছু নয় । এর মধ্যে সরকার সবকিছু স্বাভাবিক করে দিলে সেটা পরে ভাবা যাবে । হাতে সময় কম থাকলেও আমরা পুজোর আয়োজন করে নিতে পারব ।”

Last Updated : Jan 12, 2022, 9:35 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.