মালদা, 11 জানুয়ারি: প্রথম অভিযোগ উঠেছিল ইংরেজবাজারে ৷ এবার প্রধানমন্ত্রীর জল জীবন মিশনে দুর্নীতির ছায়া হরিশ্চন্দ্রপুরেও ৷ অভিযোগ, সম্পূর্ণ বিনামূল্যের এই প্রকল্পে বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের সংযোগ করার জন্য টাকা তুলছে ঠিকাদার সংস্থা ৷ অবশ্য গ্রামবাসীদের চাপে তারা টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছে ৷ কিন্তু এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় এই প্রকল্পে দুর্নীতির গন্ধ আরও প্রবলভাবে ছড়াতে শুরু করেছে ৷ দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক ৷
কয়েকদিন আগেই ইংরেজবাজার ব্লকের কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের বাগবাড়ি, গোপালনগর, 52 বিঘা, কৃষ্ণনগর-সহ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ তুলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর জল জীবন মিশনের কাজ শেষ না করেই ঠিকাদার সংস্থা তল্পিতল্পা গুটিয়ে চলে গিয়েছে ৷ তারা নাকি কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা জানিয়ে বিলও তুলে নিয়েছে ৷ এ নিয়ে গ্রামবাসীরা পিএইচই দফতরের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন ৷ তাঁদের প্রশ্ন, এলাকার 70 শতাংশ বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগ না হওয়া সত্ত্বেও ঠিকাদার সংস্থা কীভাবে কাজের পুরো বিল তুলে নিল? বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যও ৷
সেই ঘটনার রেশ মিটতে না মিটতে এবার হরিশ্চন্দ্রপুরে এই প্রকল্প নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন গ্রামবাসীরা ৷ হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকাতেই সেই কাজ শুরু হয়েছে ৷ স্থানীয়দের অভিযোগ, পাইপ লাইনের সংযোগ করে দেওয়ার নামে প্রতি বাড়ি থেকে 400-500 টাকা আদায় করছে ঠিকাদার সংস্থার লোকজন ৷ যদিও গ্রামবাসীদের চাপে সেই টাকা ফেরত দিতেও বাধ্য হয় সংস্থাটি ৷ স্থানীয় এক বাসিন্দা ঝাড়ো দাস বলছেন, "আমার বাড়ি রাস্তা থেকে খানিকটা ভিতরে ৷ ঠিকাদার সংস্থার লোকজন বলেছিল, 500 টাকা দিলে আমার বাড়িতে জলের লাইন করে দেবে ৷ আমি সেই টাকা ওদের দিই ৷ এরপরেই ওদের সঙ্গে গ্রামের লোকজনের ঝামেলা শুরু হয় ৷ তারপর ওরা আমার টাকা ফেরত দিয়েছে ৷"
আরেক গ্রামবাসী সুকদেব দাস বলেন, "ঠিকাদার সংস্থা বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের সংযোগ করতে যার কাছে যা পারছে, টাকা দাবি করছে ৷ তাছাড়া আমরা জানি, এই প্রকল্পে লোহার পাইপ ব্যবহার করার কথা ৷ তার উপর ঢালাই দেওয়ারও কথা ৷ কিন্তু ঠিকাদার সংস্থা এখানে নিম্নমানের প্লাস্টিকের পাইপ ব্যবহার করছে ৷ এই পাইপ দু'একমাসের বেশি টিকবে না ৷ এককথায়, এই প্রকল্পেও দুর্নীতি শুরু হয়ে গিয়েছে ৷ আমরা চাই, সিডিউল মেনে প্রকল্পের কাজ করা হোক ৷" এই ঘটনায় ঠিকাদার সংস্থার কোনও প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও জেলাশাসক নীতিন সিংঘানিয়া গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন ৷
আরও পড়ুন: