মালদা, 16 জুন: মালদা জেলায় করোনা (Coronavirus) সংক্রমণ দিন দিন কমছে ৷ কমছে মৃত্যুও ৷ গত তিন-চারদিনে জেলায় করোনা মৃত্যুর কোনও খবর পাওয়া যায়নি ৷ সূত্রের মারফত জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন 19 জন ৷ জেলার কোনও সেফ হোম কিংবা গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর খবরও আজ পাওয়া যায়নি ৷ এই পরিস্থিতিতে আজ থেকে গোটা রাজ্যে বিধিনিষেধ আরও কিছুটা শিথিল করা হয়েছে ৷ কিন্তু জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার কিংবা রাস্তাঘাটে মানুষের ভিড় তৃতীয় ঢেউয়ের আগে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ৷
উদ্বেগ আরও বাড়াচ্ছে বর্তমানে করোনা নিয়ে জেলাবাসীর ডোন্ট কেয়ার মানসিকতা ৷ করোনার উপসর্গ থাকলেও অনেকেই সোয়াব পরীক্ষা করাচ্ছেন না ৷ মালদা শহরের একটি সোয়াব সংগ্রহ কেন্দ্রে কিছুদিন আগেও যেখানে ভিড় সামাল দেওয়া মুশকিল হয়ে যেত, সেখানে এখন মানুষের দেখা নেই ৷ মানুষের এই মানসিকতাই করোনার তৃতীয় ঢেউকে ভয়কংর করে তুলতে পারে বলে মনে করছেন জেলা বিজ্ঞান মঞ্চের সম্পাদক ৷ তিনি আবেদন জানিয়েছেন, জ্বর, সর্দি-কাশি-সহ করোনার সামান্য উপসর্গ বোধ হলেই সবাই যেন তাঁদের ক্যাম্পে গিয়ে করোনা পরীক্ষা করান ৷
আরও পড়ুন: স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বান্ধবী বৈশাখীকে লিখে দিলেন শোভন
পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের মালদা জেলা সম্পাদক সুনীল দাস বললেন, “জেলা স্বাস্থ্যদফতর ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পরিচালনায় পুলিশ সুপারের বাংলোর পেছনে করোনা পরীক্ষার ক্যাম্প করা হয়েছে ৷ এক বছরের বেশি সময় ধরে এই ক্যাম্প চলছে ৷ প্রচুর মানুষ এই ক্যাম্পে করোনা পরীক্ষা করিয়েছেন ৷ আগে করোনা পরীক্ষার জন্য মানুষ ভোর পাঁচটা থেকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন ৷ সেই সময় প্রতিদিন এত লোকের টেস্ট করে ওঠাও কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ত ৷ একেকদিন রাত দশটা সাড়ে দশটা পর্যন্ত ক্যাম্প খোলা রেখে টেস্ট করা হয়েছে ৷ সেই সময় প্রতিদিনই গড়ে পাঁচশো মানুষের করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৷ তবে এই মুহূর্তে খুব কম লোকজন ক্যাম্পে পরীক্ষা করাতে আসছেন ৷ ক্যাম্পে কোনওদিন 100, কোনওদিন একশোর কমও পরীক্ষা হচ্ছে ৷ মালদা জেলায় সংক্রমণ কম হওয়ার কারণেই এমনটা হতে পারে ৷ আমরা চাইছি করোনা উপসর্গ দেখা দিলেই মানুষ যেন পরীক্ষা করাতে আসেন ৷ যত বেশি মানুষ পরীক্ষা করাবেন, তত তাড়াতাড়ি জেলাকে করোনামুক্ত করা যাবে ৷"
আরও পড়ুন: 45 মিনিটে 12 প্রশ্নবাণ, জন্মদিনে পুলিশি চ্যালেঞ্জের মুখে মহাগুরু
তিনি আরও বলেছেন, "এখানে পর্যাপ্ত পরিমাণ আরটিপিসিআর কিট, রাপিড অ্যান্টিজেন কিট রয়েছে ৷ কর্মীদের সংখ্যাও যথেষ্ট রয়েছে ৷ ইটিভি ভারতের মাধ্যমে জেলাবাসীর কাছে আমাদের আবেদন, করোনা উপসর্গ দেখা দিলেই পরীক্ষা করান ৷ মানুষের একটা সাধারণ অভ্যেস আছে, যেই সংক্রমণ একটু কমল, মানুষের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়ে গেল আর কিছু হবে না ৷ এই কারণেই হয়তো মানুষ করোনা পরীক্ষা করাতে আসছেন না ৷ মানুষের মধ্যে এই অনীহা দেখা যাচ্ছে ৷ আগের মতো মানুষের ভয় থাকার কথা নয় ৷ আগে যেমন কেউ পজিটিভ হলেই তাঁকে সমাজ থেকে আলাদা করে দেওয়া হচ্ছিল, এখন মানুষ সচেতন হওয়ায় আর সেটা দেখা যায় না ৷ তাই মানুষের কাছে আমাদের আবেদন করোনা উপসর্গ দেখা দিলেই পরীক্ষা করান ৷”