মালদা, 19 জুন: খোদ মন্ত্রী গিয়ে বলেছিলেন, মোস্তাফা শেখ রাজনৈতিক হিংসার বলি ৷ তাঁকে খুন করেছে দলের প্রাক্তন, বর্তমানে কংগ্রেসের লোকজন ৷ অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি ৷ গতকাল মৃত মোস্তাফার বাড়িতে গিয়ে জেলা তৃণমূলের সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি পুলিশের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, 24 ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার না-করা হলে তাঁরা আন্দোলনে নামবেন ৷ কিন্তু প্রশ্ন হল, মোস্তাফা কি আদৌ খুন হয়েছেন? নাকি হৃদরোগের শিকার তিনি ৷ এনিয়ে ধন্দ শাসকদলের অন্দরমহলেও ৷ যদিও বিষয়টি নিয়ে দলের কেউ আর প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না ৷ এমনকী পুলিশেরও মুখে কুলুপ ৷
মালদা মেডিক্যালের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই 62 বছর বয়সি মোস্তাফার মৃত্যু হয়েছে ৷ তাঁর শরীরে তেমন কোনও আঘাতের চিহ্নও পাওয়া যায়নি ৷ একাধিক রোগ তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছিল ৷ একই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তেও ৷ সেখানে উঠে এসেছে, সুজাপুরের বালুপুর গ্রামে যে জায়গায় মোস্তাফার সঙ্গে আবদুল মান্নান এবং আরও কয়েকজনের ঝামেলা হয়েছিল, সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়নি ৷ সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ে যান ৷ তড়িঘড়ি তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলে বাড়ির সামনে মারা যান তিনি ৷
আরও পড়ুন: 'প্রাণঘাতী হামলা হতে পারে', নিরাপত্তা চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ নওশাদ
পুলিশি তদন্তেও মোস্তাফার শরীরে আঘাতের তেমন কোনও চিহ্ন মেলেনি ৷ সম্ভবত সেকারণেই এই ঘটনায় আবদুল মান্নান নামে এক কংগ্রেস কর্মীকে আটক করা হলেও এখনও পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ ৷ ময়নাতদন্ত কিংবা পুলিশের প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্ট যাই বলুক না-কেন, শনিবার ঘটনার পর বালুপুর গ্রামে গিয়ে রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন জানিয়ে দেন, কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা মোস্তাফাকে পিটিয়ে মেরেছে ৷ এই দুষ্কৃতীরা আগে তৃণমূল করত ৷ দল এবার তাদের প্রার্থী না-করায় তারা কংগ্রেসে যোগ দেয় ৷ মোস্তাফা ওই এলাকায় তৃণমূলের সংগঠন বৃদ্ধিতে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন ৷ তাই কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা তাঁকে পিটিয়ে খুন করে ৷
গতকাল মোস্তাফার বাড়িতে গিয়ে সুর একধাপ চড়িয়ে জেলা তৃণমূলের সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি বলেন, "আমাদের কর্মীকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করলেও গ্রেফতার করেনি ৷ আমরা পুলিশকে ঘণ্টা সময় দিচ্ছি ৷ তার মধ্যে পুলিশ অপরাধীদের গ্রেফতার না-করলে আমরা আন্দোলনে নামব ৷" পুরো ঘটনাটিকে তৃণমূলের 'নাটক'বলে মন্তব্য করেছেন জেলা কংগ্রেসের সহসভাপতি মোত্তাকিন আলম ৷ ফোনে তিনি জানান, ঘটনার দিনও আমি বলেছিলাম, সুজাপুরে কংগ্রেসের এমন ক্ষমতা হয়নি যে তারা তৃণমূলের লোককে মেরে দেবে ৷
আরও পড়ুন: বাইক চালককে 100 মিটার টেনে নিয়ে গেল গাড়ি, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু যুবকের