মালদা, 28 নভেম্বর: দলীয় কর্মিসভায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শূর্পণখা বলে কটুক্তি করেছিলেন রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র সজল ঘোষ ৷ তার জেরে প্রতিবাদে সরব হয়েছিল তৃণমূল ৷ সজল ঘোষের কুশপুতুল পুড়িয়ে বিক্ষোভও দেখানো হয়েছিল ৷ এবার রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের নেত্রী সাবিত্রী মিত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে 'দুর্যোধন' বলে সম্বোধন করলেন (controversial comment of Malda TMC leader Sabitri Mitra on PM Modi) ৷
এখানেই শেষ নয়, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে 'দুঃশাসন' বলেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ৷ এমনকি বিজেপি নেতৃত্বকে ঘুরিয়ে ধর্ষক বলেও সম্বোধন করার অভিযোগ উঠেছে বর্ষীয়ান এই তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে (Malda TMC leader Sabitri Mitra ) ৷ যদিও এরপরেও তাঁকে আড়াল করতে কসুর করেননি জেলা তৃণমূলের সভাপতি ৷
পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষে 15 নভেম্বর রতুয়ার কাহালা হাইস্কুলে কর্মিসভা করে বিজেপি ৷ সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেন গেরুয়া শিবিরের রাজ্য মুখপাত্র তথা কলকাতা কর্পোরেশনের কাউন্সিলর সজল ঘোষ ৷ রবিবার ঠিক একই জায়গায় সভা করে তৃণমূল ৷ সেখানে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানি, সেচ ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, জেলা তৃণমূল সভাপতি আবদুর রহিম বকসি, মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র, রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়, বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক চন্দনা সরকার, জেলা পরিষদের সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেন-সহ ঘাসফুল শিবিরের একগুচ্ছ নেতানেত্রী (controversial comment of Sabitri Mitra) ৷
আরও পড়ুন: 'গোটা মন্ত্রিসভারই জেলে যাওয়া উচিত !' তোপ শুভেন্দুর
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সাবিত্রী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শূর্পণখা ৷ কিন্তু শূর্পনখা হওয়া ভাগ্যের কথা ৷ কারণ, রাবণের মতো মহাপণ্ডিত কেউ ছিল না ৷ আপনারা ইতিহাস জানেন না ৷ একমাত্র রামের হাতে মৃত্যুবরণ করার জন্যই রাবণকে সীতাহরণ করতে হয়েছিল ৷ এরপর হিরণ্যকশিপু হয়েছিল, কংস হয়েছিল ৷ রাবণের তিনবার জন্ম হয়েছিল ৷ এসব ওঁরা জানেন না৷ মমতাদিদিকে যদি আপনি শূর্পণখা বলেন, তাহলে অমিত শাহজিকে, মোদিজিকে, পশ্চিম বাংলায় বিজেপির আরও যাঁরা নেতা রয়েছেন, তাঁদের আমি দুর্যোধন আর দুঃশাসন বলব ৷ খালি স্ত্রীদের বস্ত্রহরণ করা ছাড়া আপনাদের কোনও কাজ নেই ৷ হাথরাসে আপনারা যে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে খুন করলেন, সেই মেয়েটির পরিবারের এখন কী অবস্থা ৷ দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে গুজরাতের লোকেরা ইংরেজদের অস্ত্র সাপ্লাই দিয়েছে ৷ আর এখন সেই গুজরাতিরা প্রধানমন্ত্রী হয়ে ভারত মাতা কি জয় বলছে ৷ এদের সেকথা বলার কোনও অধিকার নেই ৷”
সাবিত্রী মিত্রের এই মন্তব্যকে আড়াল করতে গিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি আবদুর রহিম বকসি দাবি করেন, “সজল ঘোষের মতো নেতাদের পায়ের তলায় মাটি নেই ৷ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে তাঁরা এসব মন্তব্য করেন৷ যা শোভনীয় নয় ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের শিখিয়েছেন, মানুষের পাশে থেকে উন্নয়নের কথা বল ৷ একে অন্যের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে মানুষের মন ভেঙে দেবে না ৷ তাই আমাদের সভা থেকে বিরোধীদের ব্যক্তি আক্রমণ করে কেউ একটা কথা বলেননি ৷ মানুষ বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে ৷”