মালদা, 26 জুলাই: জেলায় উৎপন্ন রেশম দিয়ে এবার এই মালদায় তৈরি হবে শাড়ি (Clothes will be made in district with silk produced in Malda)। শুধু শাড়ি নয়, তৈরি হবে সিল্কের যাবতীয় জামাকাপড় । রেশম চাষি-সহ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত সবার দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের আশা দেখাচ্ছে রাজ্য সরকার । এই নিয়েই মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনিক ভবনে দফায় দফায় বৈঠক হয় । প্রথম পর্বের বৈঠকে রেশমচাষ ও শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের নিয়ে আলোচনা করেন জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া । বিকেলে দ্বিতীয় পর্বের বৈঠকে তিনি দফতরের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি রাজেশ সিনহার সঙ্গে এনিয়ে আলোচনা করবেন বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর ।
মালদা জেলায় প্রায় 21 হাজার একর জমিতে তুঁতের চাষ করা হয় । জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকে চাষ হলেও সবচেয়ে বেশি রেশম উৎপাদন হয় কালিয়াচকের তিনটি ব্লকে । গোটা জেলায় এই চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে রয়েছেন অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ । প্রায় 61 হাজার পরিবার এই চাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন । এই জেলায় প্রতি বছর রেশমচাষের ছ'টি মরশুমে বছরে গড়ে রেশম সুতো উৎপাদন হয় প্রায় 1500 মেট্রিক টন । এই রেশম সুতো মূলত উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় রফতানি করা হয় । কালিয়াচকে পাইকারি রেশম বাজার রয়েছে । চাষিদের দীর্ঘদিনের দাবি, এই জেলায় রেশম সুতো থেকে বস্ত্র তৈরির কারখানা করা হোক । তাতে জেলার রেশমচাষের পরিধি আরও বাড়বে ।
আরও পড়ুন : চিনের সঙ্গে পাল্লা দিতে মালদায় বসছে পাঁচ কোটি টাকার রেশম সুতো তৈরির মেশিন
আজ প্রথম বৈঠক শেষে জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানান, জেলার রেশমশিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে উদ্যোগ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । ইতিমধ্যেই জেলার সিল্ক পার্কের ইস্ট ব্লকের কাজ শেষ হতে চলেছে । ওখানে 50টিরও বেশি স্টল তৈরি করা হয়েছে । রয়েছে 20টি প্লটও । যাঁরা এখানে প্লট কিংবা স্টল নিতে উৎসাহী, 22 অগস্ট পর্যন্ত তাঁরা আবেদন জানাতে পারেন । স্টলের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটের জন্য মাসে সাত টাকা ভাড়া দিতে হবে । আর 80 হাজার টাকা কাঠা হিসাবে কেউ 30 বছরের জন্য লিজে প্লট নিতে পারেন । মুখ্যমন্ত্রী ওই পার্কে বস্ত্রশিল্প নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছেন । ফলে এবার থেকে জেলায় উৎপন্ন রেশম থেকে ওই সিল্ক পার্কেই বিভিন্ন ধরনের রেশমি কাপড় তৈরি করা যাবে । আমাদের আশা, জেলার রেশম ব্যবসায়ী ও শিল্পদ্যোগীরা এতে উৎসাহিত হবেন ।
বৈঠকে অংশ নেওয়া জেলার এক শিল্পদ্যোগী মনোজ জৈন বলেন, "এই পার্কে রেশমের কাপড়ের সম্পূর্ণ উৎপাদন কীভাবে করা যায় তা নিয়ে আজ বৈঠক হল । 45 কোটি টাকা ব্যয়ে রাজ্য সরকার এই ফেসিলিটি সেন্টার তৈরি করেছে । সরকারের এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে জেলার অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর অনেক উন্নতি হবে । এখন মালদার রেশম সুতো দিয়েই দেশের বেশিরভাগ সিল্কের কাপড় তৈরি হয় । এখানে কাপড় তৈরির সুবিধে না থাকায় মার খাচ্ছেন এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত সবাই । রাজ্য সরকারের উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে এই জেলা থেকেই গোটা দেশে সিল্কের কাপড় রফতানি করা যাবে ।"
আরও পড়ুন : তড়িঘড়ি সিল্ক পার্কের উদ্বোধন, কী বলছে রেশমচাষিরা