মালদা, 1 এপ্রিল : বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী বিলি শুরু হতেই বেনিয়মের অভিযোগ উঠল পুরাতন মালদায় ৷ চার নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের অভিযোগ, সরকারি নির্দেশিকা উপেক্ষা করে মাথাপিছু কম চাল দিচ্ছেন ওই রেশন ডিলার ৷ এমনকী গ্রাহকদের কোনও স্লিপও দিচ্ছেন না ৷ যদিও রেশন দোকানের এক কর্মীর দাবি, সরকারি নির্দেশিকা মেনেই তাঁরা আজ চাল বিলি করছেন ৷ তবে স্লিপ না দেওয়ার কথা মেনে নিয়েছেন তিনি ৷
পুরাতন মালদা পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের শর্বরীতে ওই রেশনের দোকানে আজ সকাল থেকে বিনামূল্যে রেশন বিলির কাজ শুরু হয় ৷ রেশন নিতে ভিড় উপচে পড়ে সেখানে ৷ আর রেশন বিলি শুরু হতে না হতেই ডিলার ঊষারানি সাটিয়ার বিরুদ্ধে কম চাল দেওয়ার অভিযোগ উঠতে শুরু করে ৷
এদিকে বেনিয়মের অভিযোগ পেয়ে সেখানে যান এলাকার কাউন্সিলর ৷ গ্রাহকদের অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখে তিনি ওই দোকান থেকে রেশন বিলির কাজ বন্ধ করে দেন ৷ এনিয়ে আজই জেলা খাদ্য আধিকারিককে নালিশ জানাতে চলেছেন তিনি ৷
পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বশিষ্ঠ ত্রিবেদী বলেন, "এই ডিলারের কাছে পৌরসভার একাধিক ওয়ার্ডের গ্রাহক রেশন নেন ৷ আজ সকালে আমার কাছে অনেকে অভিযোগ করেন, এই দোকান থেকে মাথাপিছু দু'কিলো করে চাল দেওয়া হচ্ছে ৷ কোনও স্লিপ দেওয়া হচ্ছে না ৷ রাজ্য সরকার জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিটি রেশন দোকান থেকে মাথাপিছু পাঁচ কিলো করে চাল দেওয়া হবে ৷ কিন্তু এখানে তা হচ্ছে না । ঘটনার কথা শুনেই আমি রেশন দোকানে চলে আসি ৷ দেখি, গ্রাহকদের অভিযোগই ঠিক ৷ যদি এই মুহূর্তে দোকানে কম জিনিস থাকে, তবে গ্রাহকদের স্লিপ ইশু করে সেখানে তিন কিলো বাকি চাল পরে দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেওয়াই ভালো ছিল ৷ এখানে কার্ডের রংও দেখা হচ্ছে ৷ কিন্তু সরকার বলছে, এই পরিস্থিতিতে সবাইকে রেশন দিতে হবে ৷ কারও কার্ড না থাকলেও সে সামগ্রী পাবে ৷ তাই আমি রেশন বিলির কাজ বন্ধ করে দিয়েছি ৷ ফুড সাপ্লাই ইন্সপেকটরকেও ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছি । তাঁকে ঘটনাস্থানে আসতে বলেছি ৷ কিন্তু তিনি জানিয়েছেন, তিনি ব্যস্ত রয়েছেন ৷ তবে আজ এখানে রেশন ডিলার যে কাজ করেছেন তা অপরাধ ।"
খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যায় মালদা থানার পুলিশ ৷ পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ৷ রেশন নিতে আসা এক গ্রাহক অখিল পাল বলেন, "সরকার বলেছে, মাথাপিছু পাঁচ কিলো করে চাল দেওয়া হবে ৷ কিন্তু এখানে মাথাপিছু মাত্র দুই কিলো করে চাল দেওয়া হচ্ছে ৷ কোনও স্লিপও দিচ্ছে না ৷ আমরা চাই, সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী আমাদের মাথাপিছু পাঁচ কিলো করে চাল দেওয়া হোক ৷" একই বক্তব্য মহম্মদ রফিক সহ অন্য গ্রাহকদেরও ৷
যদিও ওই রেশন দোকানের কর্মী রাজীব চৌধুরীর দাবি, তাঁরা সরকারি আইন মেনেই চাল বিলি করছেন ৷ তিনি বলেন, " আমি মাথাপিছু পাঁচ কিলো করে চাল পাইনি ৷ দুই কিলো করে পেয়েছি, সেটাই বিলি করছি ৷ এব্যাপারে জেলা খাদ্য বিভাগ থেকে আমাদের কোনও নির্দেশিকাও দেওয়া হয়নি ৷ গ্রাহকদের ভিড় আজ বড্ড বেশি ছিল ৷ কোরোনা সংক্রমণ যাতে না ছড়ায়, তার জন্য আজ আমরা কাউকে স্লিপ ইশু করিনি ৷ তাড়াতাড়ি করে জিনিস দিয়ে দোকান খালি করার চেষ্টা করেছি ৷ তবে প্রত্যেকের কার্ডে আমরা তারিখ উল্লেখ করে দিয়েছি ৷ প্রত্যেককে আজ দুই কিলো করে চাল দেওয়া হয়েছে ৷"