ETV Bharat / state

Malda : দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রাজ্যকে এফআইআরের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের - মালদা

মালদা জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে যে বিপুল দুর্নীতি হয়েছে, তার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবিলম্বে রাজ্যকে এফআইআর করার নির্দেশ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ৷

কলকাতা হাইকোর্ট
কলকাতা হাইকোর্ট
author img

By

Published : Aug 26, 2021, 2:26 PM IST

কলকাতা, 26 অগস্ট : ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে দুর্নীতিতে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল । মালদায় জেলায় বন্যায় দুর্গতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ায় বিপুল দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা হয় ৷

গত 26 জুলাই মামলার শুনানিতে দুর্নীতির ব্যাপারে রাজ্য কী পদক্ষেপ করেছে, তার রিপোর্ট চেয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট । কিন্তু আজ রাজ্যের তরফে আইনজীবী (Advocate General) কিশোর দত্ত আরও সময় চেয়ে জানান যে, রাজ্য এই বিষয়ে সক্রিয় পদক্ষেপ করছে ৷ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি তখন তাঁকে প্রশ্ন করেন, "এতদিন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ৷ যাঁরা ভুক্তভোগী তাঁরা টাকাটা পাচ্ছে না ৷ সেটা রাজ্য দেখবে না ?"

2017-র অগস্টে মালদার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দিতে রাজ্য সরকার একটি প্রকল্প আনে ৷ প্রকল্পে জানানো হয়েছিল বন্যায় যাঁদের ঘরবাড়ি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে, তাঁদের 70 হাজার টাকা এবং যাঁদের অল্প ক্ষতি হয়েছে তাঁদের 3 হাজার 300 টাকা করে দেওয়া হবে । বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লকের বড়ই গ্রাম পঞ্চায়েতে তৈরি হয় 6 সদস্যের একটি কমিটি । গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান নিজেদের পছন্দমতো একটি তালিকা বানিয়ে প্রশাসনকে পাঠায় । তাতে দেখা যায় 6 হাজার 595 জনের মোবাইল নম্বর একটাই । মানে একজন সমস্ত টাকা তুলে নিয়েছে । বাকিদের মধ্যে অধিকাংশ এক নামের দু'টি বা তিনটি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পেয়েছেন । প্রায় 1 হাজার 300-র মতো লোক দু'বার ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলেছেন । পরবর্তী সময়ে বিডিও ও জেলাশাসক রাজ্যকে চিঠি লিখে জানান যে মালদায় ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বড়োসড়ো দুর্নীতি হয়েছে । তারপরও রাজ্য কোনও পদক্ষেপ করেনি ।

আরও পড়ুন : Corona Vaccine : দু'টি ডোজ নেওয়ার পরও আক্রান্তদের সঠিক তথ্য নেই, হাইকোর্টে জানাল কেন্দ্র

আজ মামলার শুনানিতে মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী ও অনিন্দ্য ঘোষ বলেন, "বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রায় 40 কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল ৷ মালদা জেলার মধ্যে একটা গ্রাম পঞ্চায়েতে এই অবস্থা, তাহলে গোটা জেলায় কী হয়েছে ? অবিলম্বে আদালতের একটি কমিটি নিযুক্ত করে পুরো বিষয়ে তদন্ত করা উচিত ।"

তখন রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, "রাজ্য ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে । করোনার কারণে কিছুটা দেরি হয়েছে । কিন্তু রাজ্য টাকা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে । দোষীদের বিরুদ্ধে 160-এর নোটিস দেওয়া হয়েছে । এফআইআর করা হয়েছে । যে 1 হাজার 300-র মতো লোক দু'বার করে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে, তাঁদের থেকে টাকা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে । পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ৷ 2019-এর ডিসেম্বর মাসে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে । 24 ডিসেম্বর তাঁকে শোকজ করা হয় । সবার বিরুদ্ধেই ধীরে ধীরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । আমাদের আরও কিছু সময় দেওয়া হোক ।"

তখন ক্ষুব্ধ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, "এতদিনে শুধুমাত্র 160-তে নোটিস দিলেন আপনারা ! এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল রাজ্য সরকারের । এরপরই প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন শুধু যাঁরা টাকা নিয়েছেন, তাঁরা নয় এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সমস্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবিলম্বে এফআইআর করতে হবে রাজ্যকে ৷ রাজ্য কী ব্যবস্থা নিচ্ছে তা 8 সেপ্টেম্বরের মধ্যে জানাতে হবে আদালতকে ৷"

আগামী 8 সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করা হয়েছে । রাজ্য এই বিষয়ে কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা ওই দিনের মধ্যে রাজ্যকে জানাতে হবে ৷

কলকাতা, 26 অগস্ট : ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে দুর্নীতিতে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল । মালদায় জেলায় বন্যায় দুর্গতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ায় বিপুল দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা হয় ৷

গত 26 জুলাই মামলার শুনানিতে দুর্নীতির ব্যাপারে রাজ্য কী পদক্ষেপ করেছে, তার রিপোর্ট চেয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট । কিন্তু আজ রাজ্যের তরফে আইনজীবী (Advocate General) কিশোর দত্ত আরও সময় চেয়ে জানান যে, রাজ্য এই বিষয়ে সক্রিয় পদক্ষেপ করছে ৷ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি তখন তাঁকে প্রশ্ন করেন, "এতদিন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি ৷ যাঁরা ভুক্তভোগী তাঁরা টাকাটা পাচ্ছে না ৷ সেটা রাজ্য দেখবে না ?"

2017-র অগস্টে মালদার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দিতে রাজ্য সরকার একটি প্রকল্প আনে ৷ প্রকল্পে জানানো হয়েছিল বন্যায় যাঁদের ঘরবাড়ি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে, তাঁদের 70 হাজার টাকা এবং যাঁদের অল্প ক্ষতি হয়েছে তাঁদের 3 হাজার 300 টাকা করে দেওয়া হবে । বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লকের বড়ই গ্রাম পঞ্চায়েতে তৈরি হয় 6 সদস্যের একটি কমিটি । গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান নিজেদের পছন্দমতো একটি তালিকা বানিয়ে প্রশাসনকে পাঠায় । তাতে দেখা যায় 6 হাজার 595 জনের মোবাইল নম্বর একটাই । মানে একজন সমস্ত টাকা তুলে নিয়েছে । বাকিদের মধ্যে অধিকাংশ এক নামের দু'টি বা তিনটি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পেয়েছেন । প্রায় 1 হাজার 300-র মতো লোক দু'বার ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলেছেন । পরবর্তী সময়ে বিডিও ও জেলাশাসক রাজ্যকে চিঠি লিখে জানান যে মালদায় ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বড়োসড়ো দুর্নীতি হয়েছে । তারপরও রাজ্য কোনও পদক্ষেপ করেনি ।

আরও পড়ুন : Corona Vaccine : দু'টি ডোজ নেওয়ার পরও আক্রান্তদের সঠিক তথ্য নেই, হাইকোর্টে জানাল কেন্দ্র

আজ মামলার শুনানিতে মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী ও অনিন্দ্য ঘোষ বলেন, "বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রায় 40 কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল ৷ মালদা জেলার মধ্যে একটা গ্রাম পঞ্চায়েতে এই অবস্থা, তাহলে গোটা জেলায় কী হয়েছে ? অবিলম্বে আদালতের একটি কমিটি নিযুক্ত করে পুরো বিষয়ে তদন্ত করা উচিত ।"

তখন রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, "রাজ্য ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে । করোনার কারণে কিছুটা দেরি হয়েছে । কিন্তু রাজ্য টাকা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে । দোষীদের বিরুদ্ধে 160-এর নোটিস দেওয়া হয়েছে । এফআইআর করা হয়েছে । যে 1 হাজার 300-র মতো লোক দু'বার করে টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে, তাঁদের থেকে টাকা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে । পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ৷ 2019-এর ডিসেম্বর মাসে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে । 24 ডিসেম্বর তাঁকে শোকজ করা হয় । সবার বিরুদ্ধেই ধীরে ধীরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । আমাদের আরও কিছু সময় দেওয়া হোক ।"

তখন ক্ষুব্ধ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, "এতদিনে শুধুমাত্র 160-তে নোটিস দিলেন আপনারা ! এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল রাজ্য সরকারের । এরপরই প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন শুধু যাঁরা টাকা নিয়েছেন, তাঁরা নয় এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সমস্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবিলম্বে এফআইআর করতে হবে রাজ্যকে ৷ রাজ্য কী ব্যবস্থা নিচ্ছে তা 8 সেপ্টেম্বরের মধ্যে জানাতে হবে আদালতকে ৷"

আগামী 8 সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করা হয়েছে । রাজ্য এই বিষয়ে কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা ওই দিনের মধ্যে রাজ্যকে জানাতে হবে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.