মালদা, 14 জুন : এবার মালদায় ভাঙন ধরল বিজেপিতে ৷ পদ্ম শিবিরের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যোগ দিলেন ঘাসফুলে ৷ ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর-1 ব্লকের ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতে ৷ হিসাব বলছে, এখনও শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এই পঞ্চায়েতের অর্ধেক আসনও হাতে আনতে পারেনি, তবুও করোনা বিধিনিষেধ ওঠার পর এই পঞ্চায়েত দখল করার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে তৃণমূল নেতৃত্ব ৷ যদিও তা হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন কংগ্রেসের পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান ৷ আর বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, ‘‘যখন মুকুল রায়ের মতো নেতারাই অন্য দলে নাম লেখাচ্ছেন, তখন এঁরা তো এসব করবেই ৷ এরা তো চুনোপুঁটি ৷’’
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে 13 আসনবিশিষ্ট ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেস ন’টি, তৃণমূল তিনটি ও বিজেপি একটি আসনে জয় পায় ৷ ফলে পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করে কংগ্রেস ৷ সোমবার হরিশ্চন্দ্রপুর-1 ব্লক তৃণমূল কার্যালয়ে বিজেপি ছেড়ে ঘাসফুলের ঝান্ডা হাতে নেন পদ্ম শিবিরের একমাত্র সদস্য অমলচন্দ্র সাহা ৷ তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান, ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি জিয়াউর রহমান-সহ আরও অনেকে ৷ ফলে এই মুহূর্তে ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের হাতে চারটি আসন ৷
আরও পড়ুন : মুকুলের এই দলবদল রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা, মন্তব্য বাম-কংগ্রেসের
দলত্যাগী অমলচন্দ্র সাহা বলেন, “বিজেপি সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি করে ৷ কিন্তু আমরা সব ধর্মের মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই একসঙ্গে থাকি ৷ ওই দলে থেকে দম বন্ধ হয়ে আসছিল ৷ তাই আজ আমি তৃণমূলে যোগ দিয়েছি ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করার জন্যই আমার এই সিদ্ধান্ত ৷”
অমলবাবু দলে যোগ দেওয়ার পরই তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আজ ভিঙ্গল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য অমলচন্দ্র সাহা আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন ৷ করোনার বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পরই আমরা কংগ্রেস পরিচালিত ওই পঞ্চায়েত দখল করব ৷ কারণ, ওই পঞ্চায়েতের প্রধান রাজনীতির রং দেখে ত্রাণ বিলি করেছিলেন ৷ তা মেনে নিতে পারছেন না তাঁর দলের সদস্যরাই ৷”
যদিও জম্মু রহমানের বক্তব্য হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান বিমানবিহারী বসাক ৷ তিনি বলেন, “বিজেপির সদস্য কোথায় গেলেন, তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই ৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পরও এই পঞ্চায়েত দখল করবে বলে দাবি করেছিল তৃণমূল ৷ বিধানসভা নির্বাচনের সময়ও তারা একই কথা বলেছিল ৷ আমাদের সদস্যদের ভয়, টাকার প্রলোভন দেখিয়েও তাঁদের দলে টানতে পারেনি ৷ এবার তারা ফের একই সুর তুলেছে ৷”
আরও পড়ুন : Adhir Chowdhury : দলবদল বাংলার রাজনীতির নতুন পরিচয়, মন্তব্য অধীরের
এদিকে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি রূপেশ আগরওয়াল বলছেন, “পঞ্চায়েত সদস্য তো চুনোপুঁটি ৷ মুকুল রায় বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি ছিলেন ৷ তৃণমূলে থাকাকালীন কোনও ভোটে জিততে পারেননি ৷ তিনিই সুযোগ বুঝে তৃণমূলে ফিরে গিয়েছেন ৷ যাঁরা এদল-ওদল করেন, তাঁরা কোনও দলেরই হতে পারেন না ৷ এঁরা স্বার্থাণ্বেষী ৷ বিজেপির প্রকৃত সৈনিকরা দলে ছিল, আছে এবং থাকবে ৷”