ETV Bharat / state

কোরোনা : সুজাপুরে হবে না রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইদের জামাত - মালদা

ইদ মালদা জেলার সবচেয়ে বড় উৎসব ৷ জেলার প্রতিটি কোনায় উৎসবে মেতে ওঠে লাখো মানুষ ৷ গোটা জেলায় বস্ত্র ব্যবসাও এই সময় সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে ৷ কিন্তু কোরোনা এবার সেই উৎসবেই থাবা বসিয়েছে ৷

image
ইদের জামাত
author img

By

Published : May 23, 2020, 10:57 PM IST

Updated : May 24, 2020, 1:04 PM IST

মালদা, 23 মে : ইদের দিনে জমায়েত হয় লক্ষাধিক লোকের ৷ তবে এবার পরিস্থিতি একটু অন্যরকম ৷ রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইদের জমাত দেখা যাবে না এবার ৷ কোরোনা মোকাবিলায় প্রশাসনের আবেদনে সাড়া দিয়ে এবার কালিয়াচকের সুজাপুরে ইদের জামাত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইদগাহ্‌ কর্তৃপক্ষ ৷ পরিবর্তে এবার নমাজিদের বাড়িতেই ইদের নমাজ পড়ার নিদান দেওয়া হয়েছে ৷ আজ ETV ভারতকে সেকথা জানিয়েছে ইদগাহ্‌ কমিটি ও সেখানকার মৌলানাও ৷

মালদা জেলা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ৷ ফলে ইদ এই জেলায় সবচেয়ে বড় উৎসব ৷ জেলার প্রতিটি কোনায় উৎসবে মেতে ওঠে লাখো মানুষ ৷ গোটা জেলায় বস্ত্র ব্যবসাও এই সময় সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে ৷ কিন্তু কোরোনা এবার সেই উৎসবেই থাবা বসিয়েছে ৷ জেলার সংখ্যালঘু মানুষদের একটা বড় অংশ ভিনরাজ্যে কাজ করে ৷ ইদের সময় বাড়ি ফিরে আসে তারা ৷ কিন্তু লকডাউনে এবার সবাই এখনও বাড়ি ফিরতে পারেনি ৷ যারা কোনওক্রমে বাড়ি ফিরেছে, তাদের কাছে উৎসবের থেকে এখন বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকা ৷ তবু অনেকে আশায় ছিল, ইদের দিন অন্তত সবাই এক হয়ে নমাজ পড়বে ৷ নমাজপাঠের পর একে অন্যের সঙ্গে আলিঙ্গনবদ্ধ হবে ৷ কিন্তু কোরোনার ফলে তাও পূরণ হবে না ৷

কালিয়াচকের সুজাপুর ইদগাহ্‌ ময়দানে প্রতি বছর লক্ষাধিক মানুষ ইদের নমাজপাঠের জন্য হাজির হয় ৷ শুধু জেলা নয়, মুর্শিদাবাদ ও দুই দিনাজপুর থেকেও সেখানে উপস্থিত হয় নমাজিরা ৷ গমগম করে সুজাপুরের নয়মৌজা ইদগাহ্‌ ময়দান ৷ ইদের কয়েকদিন আগে থেকে শুরু হয়ে যায় জামাতের প্রস্তুতি ৷ কিন্তু এবার সব শুনসান ৷ কিন্তু এখনও ময়দান পরিষ্কার পর্যন্ত করা হয়নি ৷ কারণ, এবার সেখানে আর ইদের জামাত হচ্ছে না ৷ গত 17 মে নিজেদের মধ্যে আলোচনায় সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইদগাহ্‌ কমিটি ৷

সুজাপুরে হবে না রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইদের জামাত

নয়মৌজা ইদগাহ কমিটির সহ সভাপতি মহম্মদ সাজ্জাদ আলি খান বলেন, “গত 17 মে আমরা কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবার ইদের নমাজ ইদগাহ্‌ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে না ৷ কারণ, সারা পৃথিবী সহ এই জেলাতেও যেভাবে কোরোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তাতে এই সময় কোথাও কোনও বড় জমায়েত করা যাবে না ৷ মনে রাখতে হবে, এখানকার ইদের জামাত রাজ্যের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম ৷ এই পরিস্থিতিতে এই জমায়েত করতে আমরা রাজি নই ৷ নমাজিরা কীভাবে নমাজ পাঠ করবে, তার জন্য আমাদের ইমামরা রয়েছেন ৷ তাঁরা নিজেদের মতামত দিয়েছেন ৷ কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এবার মসজিদগুলিতেও কোনও নমাজের জামাত করা যাবে না ৷”

নয়মৌজা ইদগাহে্‌র মৌলনা মুফতি মহম্মদ আসাদুল্লাহ্‌ বলেন, “যেহেতু গোটা বিশ্বে কোরোনা মহামারির আকার নিয়েছে, তাই নয়মৌজা ইদগাহ্‌ কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবার ইদগাহে্‌ নমাজের জামাত করা হবে না ৷ দেশের আইনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৷ নিজেদের জায়গায় খুব অল্প সংখ্যক লোক নিয়ে এবার ইদের নমাজ পাঠ করা হবে ৷ যাতে কোথাও ভিড় না হয় ৷ এর আগে একবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্যই নয়মৌজা ইদগাহ্‌ ময়দানে ইদের জামাত করা যায়নি ৷ ফলে এবারই এই সিদ্ধান্ত প্রথম নয় ৷ এবার বাড়ির সঙ্গে বিভিন্ন মসজিদে হাতে গোনা লোক নিয়ে নমাজ পাঠ করা হবে ৷ নয়মৌজা ইদগাহে্‌ লক্ষাধিক মানুষ নমাজ পাঠ করে ৷ আমি 24 বছর ধরে সেখানে নমাজ পাঠ করাচ্ছি ৷ কলকাতার রেড রোড থেকেও এখানে এখন বেশি লোক নমাজ পড়ে ৷ প্রশাসনের পক্ষ থেকে 34 নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ সেখানে মুর্শিদাবাদ, দুই দিনাজপুর থেকে শুরু করে জেলায় কর্মরত ভিনজেলা ও রাজ্যের মানুষও নমাজ পাঠ করে ৷ কিন্তু এবার দেশ ও দশের স্বার্থে আমরা সেই বিশাল জামাতকে জলাঞ্জলি দিচ্ছি ৷ এবার বিচ্ছিন্নভাবে নমাজপাঠ করা হবে ৷”

কালিয়াচকের মোসিমপুরের এক নমাজি আবিদ আলি বিশ্বাস বলেন, “আমরা প্রতিবারই সুজাপুর নয়মৌজা ইদগাহে্‌ ইদের নমাজ পড়তে যাই ৷ কিন্তু সেখানে লক্ষাধিক মানুষের জামাত হলে শারীরিক দূরত্ববিধি মেনে চলা সম্ভব নয় ৷ তাই এবার আমরা সেখানে নমাজ পড়তে যাব না ৷ দেশের স্বার্থে আমরাও ইদগাহ্‌ কমিটির সেই সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়েছি ৷ কারণ, কোরোনার প্রকোপ থেকে আগে মানুষকে বাঁচতে হবে ৷ এবার আমরা বাড়িতে কিংবা 3-4 জন মিলে ইদের নমাজ পাঠ করব ৷”

মালদা, 23 মে : ইদের দিনে জমায়েত হয় লক্ষাধিক লোকের ৷ তবে এবার পরিস্থিতি একটু অন্যরকম ৷ রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইদের জমাত দেখা যাবে না এবার ৷ কোরোনা মোকাবিলায় প্রশাসনের আবেদনে সাড়া দিয়ে এবার কালিয়াচকের সুজাপুরে ইদের জামাত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইদগাহ্‌ কর্তৃপক্ষ ৷ পরিবর্তে এবার নমাজিদের বাড়িতেই ইদের নমাজ পড়ার নিদান দেওয়া হয়েছে ৷ আজ ETV ভারতকে সেকথা জানিয়েছে ইদগাহ্‌ কমিটি ও সেখানকার মৌলানাও ৷

মালদা জেলা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত ৷ ফলে ইদ এই জেলায় সবচেয়ে বড় উৎসব ৷ জেলার প্রতিটি কোনায় উৎসবে মেতে ওঠে লাখো মানুষ ৷ গোটা জেলায় বস্ত্র ব্যবসাও এই সময় সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে ৷ কিন্তু কোরোনা এবার সেই উৎসবেই থাবা বসিয়েছে ৷ জেলার সংখ্যালঘু মানুষদের একটা বড় অংশ ভিনরাজ্যে কাজ করে ৷ ইদের সময় বাড়ি ফিরে আসে তারা ৷ কিন্তু লকডাউনে এবার সবাই এখনও বাড়ি ফিরতে পারেনি ৷ যারা কোনওক্রমে বাড়ি ফিরেছে, তাদের কাছে উৎসবের থেকে এখন বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকা ৷ তবু অনেকে আশায় ছিল, ইদের দিন অন্তত সবাই এক হয়ে নমাজ পড়বে ৷ নমাজপাঠের পর একে অন্যের সঙ্গে আলিঙ্গনবদ্ধ হবে ৷ কিন্তু কোরোনার ফলে তাও পূরণ হবে না ৷

কালিয়াচকের সুজাপুর ইদগাহ্‌ ময়দানে প্রতি বছর লক্ষাধিক মানুষ ইদের নমাজপাঠের জন্য হাজির হয় ৷ শুধু জেলা নয়, মুর্শিদাবাদ ও দুই দিনাজপুর থেকেও সেখানে উপস্থিত হয় নমাজিরা ৷ গমগম করে সুজাপুরের নয়মৌজা ইদগাহ্‌ ময়দান ৷ ইদের কয়েকদিন আগে থেকে শুরু হয়ে যায় জামাতের প্রস্তুতি ৷ কিন্তু এবার সব শুনসান ৷ কিন্তু এখনও ময়দান পরিষ্কার পর্যন্ত করা হয়নি ৷ কারণ, এবার সেখানে আর ইদের জামাত হচ্ছে না ৷ গত 17 মে নিজেদের মধ্যে আলোচনায় সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইদগাহ্‌ কমিটি ৷

সুজাপুরে হবে না রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইদের জামাত

নয়মৌজা ইদগাহ কমিটির সহ সভাপতি মহম্মদ সাজ্জাদ আলি খান বলেন, “গত 17 মে আমরা কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবার ইদের নমাজ ইদগাহ্‌ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে না ৷ কারণ, সারা পৃথিবী সহ এই জেলাতেও যেভাবে কোরোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তাতে এই সময় কোথাও কোনও বড় জমায়েত করা যাবে না ৷ মনে রাখতে হবে, এখানকার ইদের জামাত রাজ্যের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম ৷ এই পরিস্থিতিতে এই জমায়েত করতে আমরা রাজি নই ৷ নমাজিরা কীভাবে নমাজ পাঠ করবে, তার জন্য আমাদের ইমামরা রয়েছেন ৷ তাঁরা নিজেদের মতামত দিয়েছেন ৷ কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এবার মসজিদগুলিতেও কোনও নমাজের জামাত করা যাবে না ৷”

নয়মৌজা ইদগাহে্‌র মৌলনা মুফতি মহম্মদ আসাদুল্লাহ্‌ বলেন, “যেহেতু গোটা বিশ্বে কোরোনা মহামারির আকার নিয়েছে, তাই নয়মৌজা ইদগাহ্‌ কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবার ইদগাহে্‌ নমাজের জামাত করা হবে না ৷ দেশের আইনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি ৷ নিজেদের জায়গায় খুব অল্প সংখ্যক লোক নিয়ে এবার ইদের নমাজ পাঠ করা হবে ৷ যাতে কোথাও ভিড় না হয় ৷ এর আগে একবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্যই নয়মৌজা ইদগাহ্‌ ময়দানে ইদের জামাত করা যায়নি ৷ ফলে এবারই এই সিদ্ধান্ত প্রথম নয় ৷ এবার বাড়ির সঙ্গে বিভিন্ন মসজিদে হাতে গোনা লোক নিয়ে নমাজ পাঠ করা হবে ৷ নয়মৌজা ইদগাহে্‌ লক্ষাধিক মানুষ নমাজ পাঠ করে ৷ আমি 24 বছর ধরে সেখানে নমাজ পাঠ করাচ্ছি ৷ কলকাতার রেড রোড থেকেও এখানে এখন বেশি লোক নমাজ পড়ে ৷ প্রশাসনের পক্ষ থেকে 34 নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ সেখানে মুর্শিদাবাদ, দুই দিনাজপুর থেকে শুরু করে জেলায় কর্মরত ভিনজেলা ও রাজ্যের মানুষও নমাজ পাঠ করে ৷ কিন্তু এবার দেশ ও দশের স্বার্থে আমরা সেই বিশাল জামাতকে জলাঞ্জলি দিচ্ছি ৷ এবার বিচ্ছিন্নভাবে নমাজপাঠ করা হবে ৷”

কালিয়াচকের মোসিমপুরের এক নমাজি আবিদ আলি বিশ্বাস বলেন, “আমরা প্রতিবারই সুজাপুর নয়মৌজা ইদগাহে্‌ ইদের নমাজ পড়তে যাই ৷ কিন্তু সেখানে লক্ষাধিক মানুষের জামাত হলে শারীরিক দূরত্ববিধি মেনে চলা সম্ভব নয় ৷ তাই এবার আমরা সেখানে নমাজ পড়তে যাব না ৷ দেশের স্বার্থে আমরাও ইদগাহ্‌ কমিটির সেই সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়েছি ৷ কারণ, কোরোনার প্রকোপ থেকে আগে মানুষকে বাঁচতে হবে ৷ এবার আমরা বাড়িতে কিংবা 3-4 জন মিলে ইদের নমাজ পাঠ করব ৷”

Last Updated : May 24, 2020, 1:04 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.