মালদা, 19 সেপ্টেম্বর: পরিবেশ নিয়ে গবেষণার জন্য বিশ্ববিখ্যাত কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাক পেয়েছেন তিনি ৷ সোমবারই তিনি কানাডার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন ৷ তার আগে ইটিভি ভারতের ক্যামেরার মুখোমুখি হলেন মালদা শহরের অন্বেষা বন্দ্যোপাধ্যায় (Anwesha Banerjee) ৷
মালদা শহরেরই একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে অন্বেষার পড়াশোনার হাতেখড়ি ৷ সেই স্কুল থেকেই 2014 সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন তিনি ৷ তারপর জয়পুরের ইউনিভার্সিটি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট থেকে তিনি 2018 সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন ৷ এরপর 2021 সালে আইআইটি গুয়াহাটি থেকে স্নাতকোত্তরে উত্তীর্ণ হন ৷ তারপর থেকেই তিনি পরিবেশ নিয়ে আরও পড়াশোনা ও গবেষণার সুযোগ খুঁজছিলেন ৷ শেষ পর্যন্ত সেই সুযোগ তাঁর কাছে চলে আসে ৷ কানাডার ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটি পরিবেশ সংক্রান্ত গবেষণার জন্য তাঁকে নির্বাচন করে ৷ তার জন্য তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে স্কলারশিপ দেওয়া হবে ৷ ভিসার সমস্ত কাজ শেষে আজ রাতেই মন্ট্রিয়েলের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন অন্বেষা (Malda Student) ৷
ইটিভি ভারতকে অন্বেষা বলেন, "ছোট থেকে বাইরে পড়াশোনার স্বপ্ন ছিল ৷ অবশেষে সেই স্বপ্নপূরণ হয়েছে ৷ আমার গবেষণা পরিবেশ রক্ষায় সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের ভূমিকা নিয়ে ৷ দূষণের কথা উঠলেই প্রথমে বাতাসের কথা সামনে চলে আসে৷ কঠিন বর্জ্যে এক্ষেত্রে খুব একটা জায়গা পায় না ৷ কিন্তু গোটা পৃথিবীতে প্রতিদিন এখন যে পরিমাণ বর্জ্য উৎপন্ন হচ্ছে, সেগুলির যদি যথাযথ ম্যানেজমেন্ট না হয়, তবে পৃথিবীতে বিপর্যয় নেমে আসবে ৷ আবর্জনার জন্য বর্তমানে প্রচুর জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ৷ ভূগর্ভস্থ জলস্তরও দূষিত হচ্ছে ৷ মাটি থেকে বিভিন্ন ধাতু কীভাবে মানব শরীরে প্রবেশ করছে, কীভাবে সেটা আটকানো যায়, সেটাই আমার গবেষণার বিষয় ৷ ভারতবর্ষ মূলত কৃষিপ্রধান দেশ ৷ তাই আমার দেশের কাছে এই গবেষণা কাজে আসতে পারে বলেই মনে করছি ৷ ভবিষ্যতে আমি অধ্যাপক হতে চাই ৷ আমার গবেষণা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই ৷ তাহলেই এই গবেষণা আমার দেশের কাজেও আসবে ৷"
অন্বেষার বাবা সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সিল্ক বোর্ডের কর্মী ৷ মা সুলগ্না বন্দ্যোপাধ্যায় বেসরকারি ব্যাংকের বিমা বিভাগের সঙ্গে জড়িত ৷ সত্যজিৎ বলেন, "মেয়ের এই সাফল্য ভালো লাগলেও যেদিন ওর গবেষণা এই পৃথিবীকে ভবিষ্যতের জন্য বাসযোগ্য করে তুলবে, সেদিন আমি ওর জন্য গর্বিত হব ৷ মেয়ের এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে তাঁর মা ৷"
আরও পড়ুন: সংস্কৃত মন্ত্রোচ্চারণে নয়, রীতি ভেঙে ভাঙাদিঘি গ্রামে আদিবাসী মন্ত্রে পূজিত হন দেবী
যদিও সুলগ্না মেয়ের সাফল্যের কৃতিত্ব পুরোটা নিজে নিতে চাননি ৷ তিনি বলেন, "সব মায়েরই স্বপ্ন থাকে, তিনি নিজে যেটা করতে পারেননি, সেটা যেন মেয়ে করে দেখায় ৷ আমার মেয়ে সেটা করে দেখিয়েছে ৷ আমি ওকে নিয়ে গর্ববোধ করি ৷ তবে এখন তো শুধু শুরু ৷ মেয়ে বাইরে থাকলেও এখন ভিডিয়ো কল দূরের মানুষকে কাছে এনে দেয় ৷ আগামী কয়েক বছর সেভাবেই মেয়ে আমার কাছে থাকবে ৷ আমি আশা রাখি, মেয়ে ভালো কিছু করতে পারবে ৷" (Anwesha Banerjee to go Canada to pursue dreams in Environmental science)