ETV Bharat / state

চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার অভিযোগ মালদার এক সংস্থার বিরুদ্ধে

author img

By

Published : Feb 13, 2020, 11:43 PM IST

কিছুদিন আগে মালদা শহরের সুকান্ত মোড়ে বন্ধন স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার নামে এক সংস্থা নিজেদের অফিস খোলে ৷ সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া সবাইকে 100 শতাংশ কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা দেওয়া হয় ৷ প্রশিক্ষণ শেষে কয়েকজনকে ভিন রাজ্যে কাজে নিয়োগও করা হয়৷ কিন্তু দেখা যায়, যে মাইনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল, মাইনে মিলছে তার থেকে অনেক কম ৷ অনেকে আবার এই সংস্থার শংসাপত্র নিয়ে চাকরি চাইতে গেলে বিভিন্ন জায়গা থেকে তাঁদের কার্যত তাড়িয়ে দেওয়া হয়৷ এরপরেই আজ এই সংস্থার বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মনোরঞ্জন ঋষি নামে এক প্রতারিত যুবক ৷

bandhan
বন্ধন

মালদা, 13 ফেব্রুয়ারি : চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেকার যুবক-যুবতিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছিল একটি সংস্থা ৷ 45 দিনের প্রশিক্ষণ শেষে শংসাপত্রও দিচ্ছিল সংস্থাটি৷ তার জন্য প্রশিক্ষণ নেওয়া যুবক-যুবতিদের দিতে হয়েছিল 4200 টাকা ৷ কিন্তু প্রশিক্ষণ শেষে ওই যুবক-যুবতিরা বুঝতে পারেন, তাঁরা প্রতারণার শিকার ৷ এই নিয়ে আজ ওই সংস্থার বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এক প্রতারিত যুবক৷ অভিযোগের ভিত্তিতে যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ সুপার ৷

কিছুদিন আগে মালদা শহরের সুকান্ত মোড়ে বন্ধন স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার নামে এক সংস্থা নিজেদের অফিস খোলে ৷ সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া সবাইকে 100 শতাংশ কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা দেওয়া হয় ৷ সংস্থার পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, শুধুমাত্র যাঁরা বন্ধন মাইক্রো ফিনান্সের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের পরিবারের ছেলেমেয়েদেরই এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ৷ কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা পেয়ে প্রচুর যুবক-যুবতি সেখানে প্রশিক্ষণ নেন ৷ মার্কেটিং সহ বিভিন্ন স্কিল ডেভেলপমেন্টের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় সেখানে ৷ প্রতি ব্যাচে 20 থেকে 25 জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় ৷ প্রশিক্ষণ শেষে কয়েকজনকে ভিন রাজ্যে কাজে নিয়োগও করা হয়৷ কিন্তু দেখা যায়, যে মাইনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল, মাইনে মিলছে তার থেকে অনেক কম ৷ অনেকে আবার এই সংস্থার শংসাপত্র নিয়ে চাকরি চাইতে গেলে বিভিন্ন জায়গা থেকে তাঁদের কার্যত তাড়িয়ে দেওয়া হয়৷ এরপরেই আজ এই সংস্থার বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মনোরঞ্জন ঋষি নামে এক প্রতারিত যুবক৷

মনোরঞ্জন বলেন, "4200 টাকা কোর্স ফি দিয়ে আমি ওই সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম ৷ প্রশিক্ষণ শেষে আমাকে শংসাপত্রও দেওয়া হয় ৷ কিন্তু তারা সঠিক প্লেসমেন্ট দিতে পারেনি ৷ প্রশিক্ষণ শুরুর আগে তারা আমাদের অনেক স্বপ্ন দেখিয়েছিল৷ বলেছিল, অন্তত মাসিক 10 হাজার টাকার বেতনের চাকরির ব্যবস্থা হবে ৷ আমাকে মাসিক সাত হাজার টাকার অফার লেটারে তামিলনাড়ুর এক সংস্থায় কাজ দেওয়া হয় ৷ নিজের টাকা খরচ করে আমি সেখানে যাই ৷ কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি, আমার মাসিক বেতন মাত্র তিন হাজার টাকা ৷ সেই বেতনের মধ্যে থেকে খাবারের টাকাও ওরা কেটে নেয় ৷ তাই একমাস কাজ করে আমি সেখান থেকে চলে আসি ৷ আমি চাই, প্রশিক্ষণের জন্য নেওয়া 4200 টাকা আমায় ওই সংস্থা ফেরত দিয়ে দিক৷ সব মিলিয়ে আমার প্রায় 20 হাজার টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে৷ আমি পরিষ্কার বুঝতে পেরেছি, ওই সংস্থা আমাদের মতো ছেলেমেয়েদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে৷ সেই কারণেই আমি ওই সংস্থার বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি । "

ওই সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া সুস্মিতা ঘোষ বলেন, "ওই সংস্থা থেকে বলা হয়েছিল শুধুমাত্র যাঁরা বন্ধনের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের ছেলেমেয়েদেরই কর্মসংস্থানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে৷ তাই মায়ের কথায় আমি সেখানে যাই ৷ সেখানে সুব্রত স্যার আমাদের জানান, আমাদের ব্যাংকেই কাজ হবে ৷ পরে আমরা জানতে পারি, এমন কোনও কাজই আমরা ওই সংস্থার শংসাপত্র দেখিয়ে পাব না৷ প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার পর সংস্থার কাজকর্মে সন্দেহ হওয়ায় অনেক অভিভাবক টাকা ফেরতের জন্য সংস্থার অফিসে যান ৷ কিন্তু তাঁদের কাউকেই টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি ৷ বলা হয়, সবাইকে প্রশিক্ষণ শেষ করতেই হবে ৷ বাধ্য হয়েই আমরা প্রশিক্ষণ শেষ করি ৷ প্রশিক্ষণ শেষে সংস্থার শংসাপত্র নিয়ে আমি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক সহ শহরের একটি নামি নার্সিং হোমে কাজের জন্য যাই ৷ কিন্তু কোথাও কাজ হয়নি৷ আমার মনে হয় না এই সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে কেউ কাজ পাবে৷ এটা পুরোপুরি প্রতারক সংস্থা৷" সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চায়নি বন্ধন স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার কর্তৃপক্ষ৷ এমন কি সংবাদমাধ্যমকে আটকাতে দপ্তরে তালা মেরে দেয় তারা ৷ তবে পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, অভিযোগ তাঁরা পেয়েছেন৷ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হচ্ছে৷

মালদা, 13 ফেব্রুয়ারি : চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেকার যুবক-যুবতিদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছিল একটি সংস্থা ৷ 45 দিনের প্রশিক্ষণ শেষে শংসাপত্রও দিচ্ছিল সংস্থাটি৷ তার জন্য প্রশিক্ষণ নেওয়া যুবক-যুবতিদের দিতে হয়েছিল 4200 টাকা ৷ কিন্তু প্রশিক্ষণ শেষে ওই যুবক-যুবতিরা বুঝতে পারেন, তাঁরা প্রতারণার শিকার ৷ এই নিয়ে আজ ওই সংস্থার বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এক প্রতারিত যুবক৷ অভিযোগের ভিত্তিতে যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ সুপার ৷

কিছুদিন আগে মালদা শহরের সুকান্ত মোড়ে বন্ধন স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার নামে এক সংস্থা নিজেদের অফিস খোলে ৷ সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া সবাইকে 100 শতাংশ কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা দেওয়া হয় ৷ সংস্থার পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, শুধুমাত্র যাঁরা বন্ধন মাইক্রো ফিনান্সের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের পরিবারের ছেলেমেয়েদেরই এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ৷ কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা পেয়ে প্রচুর যুবক-যুবতি সেখানে প্রশিক্ষণ নেন ৷ মার্কেটিং সহ বিভিন্ন স্কিল ডেভেলপমেন্টের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় সেখানে ৷ প্রতি ব্যাচে 20 থেকে 25 জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় ৷ প্রশিক্ষণ শেষে কয়েকজনকে ভিন রাজ্যে কাজে নিয়োগও করা হয়৷ কিন্তু দেখা যায়, যে মাইনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল, মাইনে মিলছে তার থেকে অনেক কম ৷ অনেকে আবার এই সংস্থার শংসাপত্র নিয়ে চাকরি চাইতে গেলে বিভিন্ন জায়গা থেকে তাঁদের কার্যত তাড়িয়ে দেওয়া হয়৷ এরপরেই আজ এই সংস্থার বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মনোরঞ্জন ঋষি নামে এক প্রতারিত যুবক৷

মনোরঞ্জন বলেন, "4200 টাকা কোর্স ফি দিয়ে আমি ওই সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম ৷ প্রশিক্ষণ শেষে আমাকে শংসাপত্রও দেওয়া হয় ৷ কিন্তু তারা সঠিক প্লেসমেন্ট দিতে পারেনি ৷ প্রশিক্ষণ শুরুর আগে তারা আমাদের অনেক স্বপ্ন দেখিয়েছিল৷ বলেছিল, অন্তত মাসিক 10 হাজার টাকার বেতনের চাকরির ব্যবস্থা হবে ৷ আমাকে মাসিক সাত হাজার টাকার অফার লেটারে তামিলনাড়ুর এক সংস্থায় কাজ দেওয়া হয় ৷ নিজের টাকা খরচ করে আমি সেখানে যাই ৷ কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি, আমার মাসিক বেতন মাত্র তিন হাজার টাকা ৷ সেই বেতনের মধ্যে থেকে খাবারের টাকাও ওরা কেটে নেয় ৷ তাই একমাস কাজ করে আমি সেখান থেকে চলে আসি ৷ আমি চাই, প্রশিক্ষণের জন্য নেওয়া 4200 টাকা আমায় ওই সংস্থা ফেরত দিয়ে দিক৷ সব মিলিয়ে আমার প্রায় 20 হাজার টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে৷ আমি পরিষ্কার বুঝতে পেরেছি, ওই সংস্থা আমাদের মতো ছেলেমেয়েদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে৷ সেই কারণেই আমি ওই সংস্থার বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি । "

ওই সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া সুস্মিতা ঘোষ বলেন, "ওই সংস্থা থেকে বলা হয়েছিল শুধুমাত্র যাঁরা বন্ধনের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের ছেলেমেয়েদেরই কর্মসংস্থানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে৷ তাই মায়ের কথায় আমি সেখানে যাই ৷ সেখানে সুব্রত স্যার আমাদের জানান, আমাদের ব্যাংকেই কাজ হবে ৷ পরে আমরা জানতে পারি, এমন কোনও কাজই আমরা ওই সংস্থার শংসাপত্র দেখিয়ে পাব না৷ প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার পর সংস্থার কাজকর্মে সন্দেহ হওয়ায় অনেক অভিভাবক টাকা ফেরতের জন্য সংস্থার অফিসে যান ৷ কিন্তু তাঁদের কাউকেই টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি ৷ বলা হয়, সবাইকে প্রশিক্ষণ শেষ করতেই হবে ৷ বাধ্য হয়েই আমরা প্রশিক্ষণ শেষ করি ৷ প্রশিক্ষণ শেষে সংস্থার শংসাপত্র নিয়ে আমি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক সহ শহরের একটি নামি নার্সিং হোমে কাজের জন্য যাই ৷ কিন্তু কোথাও কাজ হয়নি৷ আমার মনে হয় না এই সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে কেউ কাজ পাবে৷ এটা পুরোপুরি প্রতারক সংস্থা৷" সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চায়নি বন্ধন স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার কর্তৃপক্ষ৷ এমন কি সংবাদমাধ্যমকে আটকাতে দপ্তরে তালা মেরে দেয় তারা ৷ তবে পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, অভিযোগ তাঁরা পেয়েছেন৷ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হচ্ছে৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.