মালদা, 19 ডিসেম্বর : একদিকে মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভা রাজ্য রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের বার্তা দিচ্ছেন । সেখানে গেরুয়া ঝান্ডা ধরছেন গাজোলের বিধায়ক দীপালি বিশ্বাস । তখনও আশ্চর্যজনকভাবে নির্লিপ্ত জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর । আজও ইটিভি ভারতকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, গাজোলের বিধায়ক কিংবা তাঁর স্বামী দলত্যাগ করছেন না । তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে । আর বিজেপিতে দু'একজন যোগ দিলেও দলে তার প্রভাব পড়বে না। একুশের ভোটে মালদায় দলের ফল ভালো হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আজ ইটিভি ভারতকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে মৌসম বলেন, "আমার মনে হয় বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কিছু জিনিস গুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে । গতকাল গাজোলের বিধায়ক দীপালি বিশ্বাসের স্বামী, জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত বিশ্বাসের সঙ্গে ফোনে আমার কথা হয়েছে । দলের কিছু ব্যক্তির উপর তাঁর কিছু ক্ষোভ রয়েছে । তিনি আমাকে সেকথা জানিয়েছেন । তাঁকে আমি ডেকেছি । তিনিও আমার সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়েছেন । রাজ্য নেতৃত্বও তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে । তাই তাঁরা বিজেপিতে যাচ্ছেন, একথা বলা ঠিক নয় । এছাড়া মালদা জেলা থেকে আরও যাঁদের বিজেপিতে যাওয়ার কথা উঠছে, সেসবও গুজব ।"
মৌসম এদিন আরও বলেন, "আমাদের দলে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দল থেকে লোকজন এসেছেন । একসঙ্গে তাঁরা কাজ করছেন । সেক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হতেই পারে । কিন্তু তার সমাধানও আমরা করছি । তাঁরা সবাই বিজেপিতে চলে যাবেন বলে যা বলা হচ্ছে, তা অবাস্তব । সময়ের সঙ্গেই সব জানা যাবে । তেমন কেউ আমাদের দল থেকে বিজেপিতে যাবেন না । দু'একজন যে বিজেপিতে যেতে পারে না, তা অবশ্য বলব না । তবে দল ছেড়ে কেউ অন্য দলে যাক, তা কখনই চাইব না । আমরা সবাই দলে থেকে যাতে কাজ করতে পারি, তার সব চেষ্টা করব ।"
বামনগোলা ব্লকের পাঁচ অঞ্চল সভাপতি এবং হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দলনেতা দ্রোণাচার্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ প্রসঙ্গে মৌসমের বক্তব্য,"ওই পাঁচ প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি আগামীতেও তাঁদের সেই পদে নিয়োগের দাবিতে পদত্যাগ করেছেন । হয়তো তাঁদের মনে হয়েছে, এবার তাঁদের সেই পদে নাও রাখা হতে পারে । তাই দর বাড়াতে তাঁরা এই পদক্ষেপ নিয়েছেন । এনিয়ে আমি অন্যদের সঙ্গে কথা বলেছি । ওই পাঁচজনের সঙ্গেও আলোচনায় বসছি । তাঁদের কীভাবে দলের কাজে লাগানো যেতে পারে তা অবশ্যই ভেবে দেখা হবে । দলের কোনও সক্রিয় কর্মী বসে যান, তা কখনই চাইব না । তবে দ্রোণাচার্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও পদত্যাগপত্র আমার কাছে আসেনি । এলে তা ভেবে দেখব । এখনও তেমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যে বিজেপিকে নিয়ে আমাদের দলে বৈঠক করতে হবে । তেমন পরিস্থিতি এলে দেখা যাবে । আমাদের দলের সবাই নেত্রীকে দেখেই দলে রয়েছেন । তাঁকে দেখেই কাজ করছেন । আগামীতেও করবেন । একুশের ভোটে এই জেলায় তৃণমূলের ফলও অনেক ভালো হবে ।"
আরও পড়ুন : "দল বেইমানি করেছে", তৃণমূল ছাড়লেন মালদা জেলার সাধারণ সম্পাদক