মালদা, 5 জুলাই : কাটমানি চাইছেন খোদ ব্লক তৃণমূল সভাপতি । আর তা চাওয়া হচ্ছে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদের কাছেই । কাটমানি না দেওয়ায় ব্লক সভাপতির বাধায় থমকে রয়েছে একাধিক উন্নয়নের কাজ । এমনটাই অভিযোগ উঠেছে হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে । অভিযোগ তুলছেন খোদ শাসকদলের পঞ্চায়েত সদস্যরা । এই নিয়ে আজ তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যরা গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে ঘণ্টা দুয়েক বিক্ষোভ দেখান । তাঁদের দাবি, দ্রুত পদ থেকে সরাতে হবে দলের ব্লক সভাপতিকে । যদিও অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন । এর পিছনে রয়েছে দলেরই একাংশের ষড়যন্ত্র । গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ।
হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লক সভাপতি হজরত আলির বিরুদ্ধে অভিযোগ, পঞ্চায়েতের বিভিন্ন কাজের জন্য তিনি পঞ্চায়েতের দলীয় সদস্যদের কাছে কমিশন চাইছেন । সদস্যরা তা না দিলে তিনি প্রভাব খাটিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ করে দিচ্ছেন । তাঁর নিশানায় রয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধানও । তাঁর কথামতো না চলায় তিনি প্রধানকে পদ থেকে সরানোর চক্রান্ত করছেন। হজরত সাহেবের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এনে আজ দুপুরে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা ।
ওই পঞ্চায়েতের সদস্য ও তৃণমূল নেতা ষষ্ঠীদেব দাস বলেন, “আমাদের দলের ব্লক সভাপতি আমাদের দলেরই প্রধান ও সদস্যদের কাছে বিভিন্ন কারণে তোলা চাইছেন। প্রধান এবং আমরা স্বচ্ছভাবেই পঞ্চায়েতের কাজ করি। কিন্তু ব্লক সভাপতিকে তোলা দিতে না পারায় তিনি বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ প্রভাব খাটিয়ে আটকে দিচ্ছেন। পঞ্চায়েত প্রধানকে হেনস্তা করছেন। তাঁর কাছে মোটা অংকের তোলা চেয়েছেন। শুধু এককালীন নয়, তিনি বিভিন্ন কাজে পার্সেন্টেজও চাইছেন। লোকমুখে শুনছি, তিনি ব্লকের ন’টি পঞ্চায়েত থেকেই তোলা আদায় করছেন। গোটা বিষয়টি আমরা ব্লক থেকে শুরু করে জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছি। মানুষের কাজ করতে না পারলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।”
আরও পড়ুন : দল চালাতে গেলে টাকা নিতে হয়, এটা কাটমানি নয় ; মন্তব্য পঞ্চায়েত প্রধানের
অভিযুক্ত ব্লক তৃণমূল সভাপতি মহম্মদ হজরত আলি বলেন, “ছাগলে কী না খায়, পাগলে কী না বলে। এসব কথা ভিত্তিহীন। আমি ওঁদের কাছে কোনওদিন এক পয়সাও চাইনি। সৎভাবে আছি বলে তিন দফায় ব্লক সভাপতি। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে তার কোনও ভিত্তি নেই। আর ওই পঞ্চায়েত প্রধান আমার আত্মীয়। গতকালও তার সঙ্গে দেখা হয়েছে। এসব কোনও কথাই হয়নি। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল করি। তিনি বলে দিয়েছেন কোনও কাটমানি চলবে না। আমরাও কোনও কাটমানি নিইনি, নেব না ।”
তবে এমন ঘটনায় প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা তৃণমূল। দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান এপ্রসঙ্গে বলেন, “দলের আলোচনা দলের মধ্যেই হওয়া উচিত। তা সংবাদমাধ্যমে আসা উচিত নয়। যে কোনও সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে দলেই সুরাহা করা যায়। দলের জেলা সভানেত্রী মৌসম নুরের সঙ্গেও এবিষয়ে আলোচনা করা যেত। এনিয়ে প্রকাশ্যে বিক্ষোভ দেখানো ঠিক নয়। আমি বিষয়টি নিয়ে মৌসমদির সঙ্গে আলোচনা করব। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতেও যাব।”