ETV Bharat / state

আট মাস ধরে বাংলাদেশে বন্দী মালদার বৃদ্ধ, অভিযোগ মানবাধিকার লঙ্ঘনের - Kadir Sheikh

23 ফেব্রুয়ারি চাঁপাই নবাবগঞ্জ আদালতের স্পেশাল ট্রাইবুনাল ও অতিরিক্ত দায়রা বিচারক মহম্মদ শওকত আলি অভিযুক্ত কাদির শেখ ও আলেকনুর বিবি বেকসুর খালাস করার নির্দেশ দেন । এরপর আলেকনুর বিবি মুক্তি পেলেও আট মাস ধরে বাংলাদেশেই বন্দী কাদির শেখ ।

Malda news
ছবি
author img

By

Published : Oct 19, 2020, 6:11 PM IST

মালদা, 19 অক্টোবর : মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে ৷ বিচারের পর আদালত থেকে মুক্তি পেয়েও প্রায় আট মাস সময় ধরে সেখানকার জেলে বন্দী হয়ে রয়েছেন মালদার এক বাসিন্দা ৷ এই ঘটনায় প্রতিবেশী দেশের সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন ওই ব্যক্তির বিবি-সহ জেলার মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবীরা ৷ সেদেশের জেলে বন্দী ওই ব্যক্তিকে দ্রুত এদেশে ফেরানোর দাবি তুলেছেন তাঁরা ৷

প্রতিবেশী দেশের জেলে বন্দীর নাম কাদির শেখ ৷ বয়স 70 বছর ৷ বাড়ি বৈষ্ণবনগর থানার চকমাইলপুর শ্মশানী গ্রামে ৷ এই গ্রামের মধ্যে দিয়ে গেছে ইন্দো-বাংলা সীমান্তের কাঁটাতার ৷ বেড়ার ওপারে ভারতীয় ভূখণ্ডে কাদির শেখদের পাশাপাশি আরও পাঁচটি পরিবারের বসবাস ৷ অভিযোগ, 2017 সালের 19 সেপ্টেম্বর রাত 1 টা 15 মিনিট নাগাদ সেদেশের ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (RAB) জওয়ানরা বাড়ি থেকে কাদির শেখ ও তাঁর বিবি আলেকনুর বিবিকে গ্রেপ্তার করে ৷ দু’জনের বিরুদ্ধে সেদেশের অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয় ৷

Human Rights Violation
আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় দাসের সঙ্গে কাদির শেখের বিবি আলেকনুর

চাঁপাই নবাবগঞ্জ আদালতে দায়ের হওয়া মামলায় ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের পক্ষে দাবি করা হয়, ঘটনার রাতে কাদির শেখের হাতে থাকা একটি কালো ব্যাগ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, 19 রাউন্ড কার্তুজ ও 6 টি ম্যাগাজ়িন উদ্ধার হয়েছে ৷ আলেকনুর বিবির হেপাজত থেকে উদ্ধার হয় আরও একটি বিদেশি পিস্তল, 8 রাউন্ড গুলি ও দুটি ম্যাগাজ়িন ৷ এরপরেই তাঁদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয় ৷ 23 ফেব্রুয়ারি চাঁপাই নবাবগঞ্জ আদালতের স্পেশাল ট্রাইবুনাল ও অতিরিক্ত দায়রা বিচারক মহম্মদ শওকত আলি এই মামলার রায় দিতে গিয়ে বলেন, কাদির শেখ ও আলেকনুর বিবির বিরুদ্ধে 1878 সালের অস্ত্র আইনের 19A/19 (f) ধারায় যে মামলা রুজু করা হয়েছিল, তার সপক্ষে সন্দেহাতীত কোনও প্রমাণ আদালতে পেশ করতে পারেনি মামলাকারী সংস্থা ৷ তাই অভিযুক্ত দু’জনকেই বেকসুর খালাস করা হল ৷

আদালতের রায় ঘোষণার পর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আলেকনুর বিবিকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয় ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত মুক্তি পাননি 70 বছরের বৃদ্ধ কাদির শেখ ৷ আলেকনুর বিবি বলেন, “চকমাইলপুর শ্মশানী গ্রামে কাঁটাতারের বেড়ার 20 নম্বর গেটের ওপারে আমাদের বাড়ি ৷ 2017 সালের 19 সেপ্টেম্বর RAB রাত 1 টা 15 মিনিটে আমাদের বাড়ির দরজায় ধাক্কা দেয় ৷ আমরা দরজা খুলতেই তারা আমাদের হাতে হাতকড়ি লাগিয়ে দেয় ৷ শওহরের মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে ফেলে ৷ আমি সঙ্গে সঙ্গে তাদের বলি, আমরা ভারতীয় ৷ আমাদের বাংলাদেশের পুলিশ কিংবা নিরাপত্তাবাহিনী কেন গ্রেপ্তার করবে ? কোনও দোষ করে থাকলে আমাদের ভারতীয় পুলিশ কিংবা নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে দেওয়া হোক ৷ কিন্তু তারা আমার কোনও কথা শোনেনি ৷ সেদেশের জেলে 19 মাস থাকার পর বিচারকের রায়ে আমি ছাড়া পাই ৷ কিন্তু আমার শওহর আদালত থেকে খালাস হওয়ার পরেও প্রায় আট মাস ধরে সেদেশের জেলে আছে ৷ আমি শওহরকে ঘরে ফেরাতে চাই ৷ তার জন্য আমি ভারতীয় হাই কমিশনে আবেদন জানিয়েছি ৷ হাই কমিশন থেকে একটু তদ্বির করা গেলেই শওহর বাড়িতে ফিরে আসতে পারবে ৷”

কী বলছেন কাদির শেখের বিবি ?

এই পরিস্থিতিতে আলেকনুর বিবির পাশে দাঁড়িয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা৷ এমনই এক মানবাধিকার কর্মী ও মালদা জেলা আদালতের আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় দাস বলেন, “2017 সালে এই দম্পতিকে সীমান্তের তারকাঁটার ওপারে থাকা বাড়ি থেকে বেআইনিভাবে বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থা গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়৷ বিষয়টি জানার পর আমি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে একাধিকবার এনিয়ে আবেদন জানাই৷ সেদেশের আদালতে দীর্ঘদিন ধরে এই মামলা চলে৷ এরই মধ্যে আলেকনুর বিবি জামিন পেয়ে আত্মীয়দের মাধ্যমে এদেশে চলে আসেন৷ গত 23 ফেব্রুয়ারি চাঁপাই নবাবগঞ্জ আদালত থেকে কাদির শেখ ও আলেকনুর বিবি নিঃশর্ত মুক্তি পান৷ এরপর মালদার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, দুই দেশের হাইকমিশন, রাজ্য হোম ফরেনার্স বিভাগে আমি চিঠি দিয়ে কাদির শেখকে দেশে ফিরিয়ে আনার আবেদন জানাই৷ কিন্তু এখনও তাঁকে দেশে ফেরাতে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি৷ এটা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা৷ কাদির শেখকে বেআইনিভাবে নিজেদের জেলে আটকে রেখেছে বাংলাদেশ সরকার৷”

মালদা, 19 অক্টোবর : মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে ৷ বিচারের পর আদালত থেকে মুক্তি পেয়েও প্রায় আট মাস সময় ধরে সেখানকার জেলে বন্দী হয়ে রয়েছেন মালদার এক বাসিন্দা ৷ এই ঘটনায় প্রতিবেশী দেশের সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন ওই ব্যক্তির বিবি-সহ জেলার মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবীরা ৷ সেদেশের জেলে বন্দী ওই ব্যক্তিকে দ্রুত এদেশে ফেরানোর দাবি তুলেছেন তাঁরা ৷

প্রতিবেশী দেশের জেলে বন্দীর নাম কাদির শেখ ৷ বয়স 70 বছর ৷ বাড়ি বৈষ্ণবনগর থানার চকমাইলপুর শ্মশানী গ্রামে ৷ এই গ্রামের মধ্যে দিয়ে গেছে ইন্দো-বাংলা সীমান্তের কাঁটাতার ৷ বেড়ার ওপারে ভারতীয় ভূখণ্ডে কাদির শেখদের পাশাপাশি আরও পাঁচটি পরিবারের বসবাস ৷ অভিযোগ, 2017 সালের 19 সেপ্টেম্বর রাত 1 টা 15 মিনিট নাগাদ সেদেশের ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (RAB) জওয়ানরা বাড়ি থেকে কাদির শেখ ও তাঁর বিবি আলেকনুর বিবিকে গ্রেপ্তার করে ৷ দু’জনের বিরুদ্ধে সেদেশের অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয় ৷

Human Rights Violation
আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় দাসের সঙ্গে কাদির শেখের বিবি আলেকনুর

চাঁপাই নবাবগঞ্জ আদালতে দায়ের হওয়া মামলায় ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের পক্ষে দাবি করা হয়, ঘটনার রাতে কাদির শেখের হাতে থাকা একটি কালো ব্যাগ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, 19 রাউন্ড কার্তুজ ও 6 টি ম্যাগাজ়িন উদ্ধার হয়েছে ৷ আলেকনুর বিবির হেপাজত থেকে উদ্ধার হয় আরও একটি বিদেশি পিস্তল, 8 রাউন্ড গুলি ও দুটি ম্যাগাজ়িন ৷ এরপরেই তাঁদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয় ৷ 23 ফেব্রুয়ারি চাঁপাই নবাবগঞ্জ আদালতের স্পেশাল ট্রাইবুনাল ও অতিরিক্ত দায়রা বিচারক মহম্মদ শওকত আলি এই মামলার রায় দিতে গিয়ে বলেন, কাদির শেখ ও আলেকনুর বিবির বিরুদ্ধে 1878 সালের অস্ত্র আইনের 19A/19 (f) ধারায় যে মামলা রুজু করা হয়েছিল, তার সপক্ষে সন্দেহাতীত কোনও প্রমাণ আদালতে পেশ করতে পারেনি মামলাকারী সংস্থা ৷ তাই অভিযুক্ত দু’জনকেই বেকসুর খালাস করা হল ৷

আদালতের রায় ঘোষণার পর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আলেকনুর বিবিকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয় ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত মুক্তি পাননি 70 বছরের বৃদ্ধ কাদির শেখ ৷ আলেকনুর বিবি বলেন, “চকমাইলপুর শ্মশানী গ্রামে কাঁটাতারের বেড়ার 20 নম্বর গেটের ওপারে আমাদের বাড়ি ৷ 2017 সালের 19 সেপ্টেম্বর RAB রাত 1 টা 15 মিনিটে আমাদের বাড়ির দরজায় ধাক্কা দেয় ৷ আমরা দরজা খুলতেই তারা আমাদের হাতে হাতকড়ি লাগিয়ে দেয় ৷ শওহরের মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে ফেলে ৷ আমি সঙ্গে সঙ্গে তাদের বলি, আমরা ভারতীয় ৷ আমাদের বাংলাদেশের পুলিশ কিংবা নিরাপত্তাবাহিনী কেন গ্রেপ্তার করবে ? কোনও দোষ করে থাকলে আমাদের ভারতীয় পুলিশ কিংবা নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে দেওয়া হোক ৷ কিন্তু তারা আমার কোনও কথা শোনেনি ৷ সেদেশের জেলে 19 মাস থাকার পর বিচারকের রায়ে আমি ছাড়া পাই ৷ কিন্তু আমার শওহর আদালত থেকে খালাস হওয়ার পরেও প্রায় আট মাস ধরে সেদেশের জেলে আছে ৷ আমি শওহরকে ঘরে ফেরাতে চাই ৷ তার জন্য আমি ভারতীয় হাই কমিশনে আবেদন জানিয়েছি ৷ হাই কমিশন থেকে একটু তদ্বির করা গেলেই শওহর বাড়িতে ফিরে আসতে পারবে ৷”

কী বলছেন কাদির শেখের বিবি ?

এই পরিস্থিতিতে আলেকনুর বিবির পাশে দাঁড়িয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা৷ এমনই এক মানবাধিকার কর্মী ও মালদা জেলা আদালতের আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় দাস বলেন, “2017 সালে এই দম্পতিকে সীমান্তের তারকাঁটার ওপারে থাকা বাড়ি থেকে বেআইনিভাবে বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থা গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়৷ বিষয়টি জানার পর আমি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে একাধিকবার এনিয়ে আবেদন জানাই৷ সেদেশের আদালতে দীর্ঘদিন ধরে এই মামলা চলে৷ এরই মধ্যে আলেকনুর বিবি জামিন পেয়ে আত্মীয়দের মাধ্যমে এদেশে চলে আসেন৷ গত 23 ফেব্রুয়ারি চাঁপাই নবাবগঞ্জ আদালত থেকে কাদির শেখ ও আলেকনুর বিবি নিঃশর্ত মুক্তি পান৷ এরপর মালদার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, দুই দেশের হাইকমিশন, রাজ্য হোম ফরেনার্স বিভাগে আমি চিঠি দিয়ে কাদির শেখকে দেশে ফিরিয়ে আনার আবেদন জানাই৷ কিন্তু এখনও তাঁকে দেশে ফেরাতে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি৷ এটা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা৷ কাদির শেখকে বেআইনিভাবে নিজেদের জেলে আটকে রেখেছে বাংলাদেশ সরকার৷”

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.