মালদা, 8 জানুয়ারি : ভোটের আগে ফের তৃণমূল ও যুব তৃণমূলের সংঘাত গাজোলে৷ বিশাল অঙ্কের তোলা দাবি করে তা না পেয়ে পঞ্চায়েতের এক উপপ্রধানের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ও তাঁর দুই অনুগামীর বিরুদ্ধে৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে গাজোল পঞ্চায়েত সমিতি দপ্তরে৷ বেশি রাতে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে গাজোল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নিগৃহীত পঞ্চায়েত উপপ্রধান৷ অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশি তদন্ত শুরু হলেও অভিযুক্তদের খোঁজ পাওয়া যায়নি৷ ফোন ধরেননি ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি ৷ ফলে এনিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ ফোন ধরেননি সংগঠনের জেলা সভাপতিও৷
নিগৃহীতের নাম ফারুক হোসেন৷ তিনি আলাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান৷ পুলিশে অভিযোগ করে তিনি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধে ৬টা নাগাদ তিনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির ঘরে সভানেত্রী এবং দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করছিলেন৷ সেই সময় রাজকুমার সরকার, অমিত সিংহ ও রামপ্রসাদ রায় সেখানে উপস্থিত হন৷ সবার সামনে তাঁর কাছে প্রচুর টাকা দাবি করা হয়৷ এর প্রতিবাদ করলে তারা তাঁর উপর চড়াও হয়৷ তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় এবং হুমকিও দেওয়া হয় ৷
এদিকে পঞ্চায়েত সমিতি দপ্তরে ঝামেলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে যায় গাজোল থানার পুলিশ৷ পুলিশের সামনেই ফারুক সাহেবকে মারধর করতে দেখা যায় উত্তেজিত যুব তৃণমূল কর্মীদের৷ এক পুলিশকর্মী চেষ্টা করেও ফারুক সাহেবকে বাঁচাতে পারেননি৷ সুযোগ পেয়ে বিডিও দপ্তরে ঢুকে পড়েন ফারুক সাহেব৷ সেখানেও তাঁকে তাড়া করতে দেখা যায় যুব তৃণমূলিদের৷ ফারুক সাহেব বলেন, “আলালে একটি জমির ঝামেলা নিয়ে এসডিওর সঙ্গে বৈঠক ছিল৷ সেই বৈঠক শেষ হলে পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী আমাকে তাঁর কক্ষে ডেকে পাঠান৷ সেখানে ব্লক যুব তৃণমূল রাজকুমার সরকার আমাকে মারধর করে৷ দীর্ঘদিন ধরেই তিনি আমার কাছে অন্যায় দাবি করছিলেন৷ আমি তাঁর সেসব দাবিকে আমল দিইনি৷ আমি আজকের গোটা ঘটনা দলকেও জানাব৷ ঘটনার পর আমি প্রথমে হাসপাতালে যাই৷ পরে গাজোল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি৷ মনে রাখতে হবে, আমার আব্বাও আলাল অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি৷”
গোটা ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে রাজকুমারবাবুকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি৷ ফোন ধরেননি জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি প্রসেনজিৎ দাসও৷ তবে জেলা তৃণমূলের কোঅর্ডিনেটর ও গাজোল ব্লকের দায়িত্বে থাকা দুলাল সরকার বলেন, “আলালের উপপ্রধান ও ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতির মধ্যে কিছু ঝামেলা হয়েছে৷ তবে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে কিনা জানি না৷ তবে তারা দু’জনেই তৃণমূলের৷ দু’জনই দলের সম্পদ৷ আমরা বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছি ৷ নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে৷ আলোচনা করে এসব মিটিয়ে নেওয়া হবে৷ তবে দল কারোর একার নয়৷”