ETV Bharat / state

ফের গঙ্গার ছোবল কালিয়াচকে, নদীগর্ভে একাধিক বাড়ি - গঙ্গার কোপ

কয়েক ঘণ্টার ভাঙনে প্রায় দশ বিঘা জমির সঙ্গে পাঁচটি বাড়ি এখন নদীগর্ভে ৷ এলাকার বাসিন্দা জীবন সরকার জানান, "গতকাল বিকেলের পর থেকেই গঙ্গার ভাঙন শুরু হয় ৷ সবচেয়ে বড় বিষয়, এলাকায় যে দেড় কিলোমিটার এলাকা সেচ দপ্তর বাঁধাই করেছিল, সেই এলাকাও নদীতে কেটে পড়তে থাকে ৷"

malda news
malda news
author img

By

Published : Sep 28, 2020, 11:55 PM IST

মালদা, 28 সেপ্টেম্বর : গঙ্গার কোপ থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লক ৷ বীরনগর এক গ্রাম পঞ্চায়েতের চিনাবাজার ও দুর্গারামটোলার পর এবার গঙ্গার গ্রাসে শোভাপুর পারদেওনাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পার অনুপনগর গ্রাম ৷ গতকাল সন্ধে থেকে এই গ্রামে শুরু হয়েছে গঙ্গা ভাঙন ৷ ইতিমধ্যে নদীগর্ভে চলে গিয়েছে পাঁচটি বাড়ি ৷ এমনকী সেচ দপ্তরের বাঁধাই করা নদীপাড়ও চলে গিয়েছে নদীগর্ভে ৷ ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেছেন প্রশাসনিক কর্তা ও স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্যের প্রতিনিধি ৷ ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গতদের ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন BDO ৷

চলতি মরশুমে গত 30 অগাস্ট গঙ্গা প্রথম ছোবল মারে চিনাবাজার গ্রামে ৷ ঘণ্টা দুয়েকের ভাঙনে তলিয়ে যায় বহু বাড়ি ৷ দু’দিন পর একই ঘটনা ঘটে পাশের দুর্গারামটোলায় ৷ কিছুদিন থেমে থাকার পর ফের নদীর কোপে পড়ে চিনাবাজার ৷ ফের নদীতে চলে যায় প্রচুর বাড়ি ৷ এবার পার অনুপনগরে ছোবল মেরেছে গঙ্গা ৷ কয়েক ঘণ্টার ভাঙনে প্রায় দশ বিঘা জমির সঙ্গে পাঁচটি বাড়ি এখন নদীগর্ভে ৷ এলাকার বাসিন্দা জীবন সরকার জানান, "গতকাল বিকেলের পর থেকেই গঙ্গার ভাঙন শুরু হয় ৷ নদীর জলে ফেনা জমতে শুরু করে ৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই ঝপাঝপ কাটতে থাকে নদীর পাড় ৷ নদীপাড়ে থাকা পাঁচটি বাড়ি ভেঙে সরিয়ে নেওয়ার আগেই ধসে পড়তে শুরু করে ৷ সবচেয়ে বড় বিষয়, এলাকায় যে দেড় কিলোমিটার এলাকা সেচ দপ্তর বাঁধাই করেছিল, সেই এলাকাও নদীতে কেটে পড়তে থাকে ৷ এভাবে ভাঙন চলতে থাকলে গ্রামের প্রাচীন রাধাগোবিন্দ মন্দিরটিও যে কোনও সময় নদীতে চলে যাবে ৷"

উল্লেখ্য, বছর দুয়েক আগেও পারলালপুর, পার অনুপনগরসহ এই গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকটি গ্রাম তীব্র গঙ্গা ভাঙনের কবলে পড়েছিল ৷ সেই সময় গ্রামের প্রাথমিক স্কুল, মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র তলিয়ে যায় নদীতে ৷ এলাকার দুটি বুথই মানচিত্র থেকে মুছে যায় ৷ তারপর থেকে ভাঙন না হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল গ্রামবাসীরা ৷ কিন্তু গতকাল থেকে ফের ভাঙন শুরু হওয়ায় ফের রাত জাগা শুরু হয়েছে পার অনুপনগরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ৷

এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য কবিতা সরকার জানান, "ভাঙনের খবর পেয়েই ওই এলাকায় আমি আমার প্রতিনিধিকে পাঠিয়েছিলাম ৷ গোটা ঘটনা ব্লক প্রশাসনকে জানানো হয়েছে ৷ দুর্গত মানুষজনের যাতে ত্রাণের কোনও সমস্যা না হয়, সেই বিষয়টি ব্লক প্রশাসন দেখছে ৷"

কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের BDO গৌতম দত্ত জানান, "গতকাল থেকে পার অনুপনগরে গঙ্গার ভাঙন শুরু হয়েছে ৷ এখনও পর্যন্ত পাঁচটি বাড়ি নদীতে তলিয়ে গিয়েছে ৷ আজ ভাঙন দুর্গতদের ত্রাণসামগ্রীর ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷"

এদিকে এলাকার গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির পক্ষে মণিরুল ইসলাম বলেন, "এই এলাকায় গঙ্গার ভাঙন রোধের দায়িত্ব ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের ৷ কিন্তু এর আগে যখন এখানে ভাঙন হয়, তখন তাঁরা ভাঙন রোধের কাজ করতে অস্বীকার করে ৷ শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেই প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায় গঙ্গার পাড় বোল্ডার দিয়ে বাঁধা হয় ৷ তবে সেই কাজের মান নিয়ে সেই সময় প্রশ্ন উঠেছিল ৷ শেষ পর্যন্ত সেই প্রশ্নই বড় হয়ে দেখা দিল ৷ এবারের ভাঙনে যেভাবে পাড়ের বোল্ডার ভেঙে পড়েছে, তাতে সেই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক ৷ আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, এলাকাকে বাঁচাতে দ্রুত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হোক ৷ নইলে খুব তাড়াতাড়ি কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের অস্তিত্বই বিলুপ্ত হয়ে যাবে ৷"

মালদা, 28 সেপ্টেম্বর : গঙ্গার কোপ থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লক ৷ বীরনগর এক গ্রাম পঞ্চায়েতের চিনাবাজার ও দুর্গারামটোলার পর এবার গঙ্গার গ্রাসে শোভাপুর পারদেওনাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পার অনুপনগর গ্রাম ৷ গতকাল সন্ধে থেকে এই গ্রামে শুরু হয়েছে গঙ্গা ভাঙন ৷ ইতিমধ্যে নদীগর্ভে চলে গিয়েছে পাঁচটি বাড়ি ৷ এমনকী সেচ দপ্তরের বাঁধাই করা নদীপাড়ও চলে গিয়েছে নদীগর্ভে ৷ ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেছেন প্রশাসনিক কর্তা ও স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্যের প্রতিনিধি ৷ ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গতদের ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন BDO ৷

চলতি মরশুমে গত 30 অগাস্ট গঙ্গা প্রথম ছোবল মারে চিনাবাজার গ্রামে ৷ ঘণ্টা দুয়েকের ভাঙনে তলিয়ে যায় বহু বাড়ি ৷ দু’দিন পর একই ঘটনা ঘটে পাশের দুর্গারামটোলায় ৷ কিছুদিন থেমে থাকার পর ফের নদীর কোপে পড়ে চিনাবাজার ৷ ফের নদীতে চলে যায় প্রচুর বাড়ি ৷ এবার পার অনুপনগরে ছোবল মেরেছে গঙ্গা ৷ কয়েক ঘণ্টার ভাঙনে প্রায় দশ বিঘা জমির সঙ্গে পাঁচটি বাড়ি এখন নদীগর্ভে ৷ এলাকার বাসিন্দা জীবন সরকার জানান, "গতকাল বিকেলের পর থেকেই গঙ্গার ভাঙন শুরু হয় ৷ নদীর জলে ফেনা জমতে শুরু করে ৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই ঝপাঝপ কাটতে থাকে নদীর পাড় ৷ নদীপাড়ে থাকা পাঁচটি বাড়ি ভেঙে সরিয়ে নেওয়ার আগেই ধসে পড়তে শুরু করে ৷ সবচেয়ে বড় বিষয়, এলাকায় যে দেড় কিলোমিটার এলাকা সেচ দপ্তর বাঁধাই করেছিল, সেই এলাকাও নদীতে কেটে পড়তে থাকে ৷ এভাবে ভাঙন চলতে থাকলে গ্রামের প্রাচীন রাধাগোবিন্দ মন্দিরটিও যে কোনও সময় নদীতে চলে যাবে ৷"

উল্লেখ্য, বছর দুয়েক আগেও পারলালপুর, পার অনুপনগরসহ এই গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকটি গ্রাম তীব্র গঙ্গা ভাঙনের কবলে পড়েছিল ৷ সেই সময় গ্রামের প্রাথমিক স্কুল, মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র তলিয়ে যায় নদীতে ৷ এলাকার দুটি বুথই মানচিত্র থেকে মুছে যায় ৷ তারপর থেকে ভাঙন না হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল গ্রামবাসীরা ৷ কিন্তু গতকাল থেকে ফের ভাঙন শুরু হওয়ায় ফের রাত জাগা শুরু হয়েছে পার অনুপনগরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ৷

এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য কবিতা সরকার জানান, "ভাঙনের খবর পেয়েই ওই এলাকায় আমি আমার প্রতিনিধিকে পাঠিয়েছিলাম ৷ গোটা ঘটনা ব্লক প্রশাসনকে জানানো হয়েছে ৷ দুর্গত মানুষজনের যাতে ত্রাণের কোনও সমস্যা না হয়, সেই বিষয়টি ব্লক প্রশাসন দেখছে ৷"

কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের BDO গৌতম দত্ত জানান, "গতকাল থেকে পার অনুপনগরে গঙ্গার ভাঙন শুরু হয়েছে ৷ এখনও পর্যন্ত পাঁচটি বাড়ি নদীতে তলিয়ে গিয়েছে ৷ আজ ভাঙন দুর্গতদের ত্রাণসামগ্রীর ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷"

এদিকে এলাকার গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির পক্ষে মণিরুল ইসলাম বলেন, "এই এলাকায় গঙ্গার ভাঙন রোধের দায়িত্ব ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের ৷ কিন্তু এর আগে যখন এখানে ভাঙন হয়, তখন তাঁরা ভাঙন রোধের কাজ করতে অস্বীকার করে ৷ শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেই প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায় গঙ্গার পাড় বোল্ডার দিয়ে বাঁধা হয় ৷ তবে সেই কাজের মান নিয়ে সেই সময় প্রশ্ন উঠেছিল ৷ শেষ পর্যন্ত সেই প্রশ্নই বড় হয়ে দেখা দিল ৷ এবারের ভাঙনে যেভাবে পাড়ের বোল্ডার ভেঙে পড়েছে, তাতে সেই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক ৷ আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, এলাকাকে বাঁচাতে দ্রুত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হোক ৷ নইলে খুব তাড়াতাড়ি কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের অস্তিত্বই বিলুপ্ত হয়ে যাবে ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.