মালদা, 26 অগস্ট: দুপুর 12টা। মালদা মেডিক্যালে তখন পুরোপুরি নিস্তব্ধতা। রাস্তার দিকে চেয়ে রয়েছেন মন্ত্রী, সাংসদ, জেলাশাসক, পুলিশ সুপাররা। মেডিক্যালের নিস্তব্ধতা হঠাৎ ভাঙল অ্যাম্বুলেন্সের শব্দে। মেডিক্যালের মর্গের সামনে অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছতেই মুখে উঠল রুমাল-মাস্ক। অ্যাম্বুলেন্সের গেট খুলতেই দেখা গেল চাপ চাপ রক্ত। নিহত শ্রমিকের ব্যাগে রক্তের পাশাপাশি ঘুরছে পোকা। ছেলের রক্তকে জল দিয়ে ধুতে হচ্ছে বাবাকে। এমনই দৃশ্য দেখে ফের ক্ষোভে ফেটে পড়লেন রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ও রাজ্যসভার সাংসদ।
গত বুধবার মিজোরামে নির্মীয়মান রেলসেতু ভেঙে দুর্ঘটনায় মালদার 23 জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার প্রায় 58 ঘণ্টা পর গতকাল সন্ধ্যায় 18 জন শ্রমিকের মৃতদেহ মালদায় এসে পৌঁছয়। সেই সময় মৃতদেহ সংরক্ষণ নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন শাসকদলের নেতৃত্বরা। আজ, শনিবার সকালে আরও 4 জন শ্রমিকের মৃতদেহ মালদায় এসে পৌঁছয়। ততক্ষণে দুর্ঘটনার 74 ঘণ্টা সময় পেরিয়ে গিয়েছে। ফের মৃত সংরক্ষণ নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ও রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম।
রাজ্যসভার সাংসদ তথা মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার ওয়েলফেয়ার বোর্ডের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম বলেন, "গতকাল সন্ধেয় মিজোরামে নিহত 18 জন শ্রমিকের মৃতদেহ মালদায় এসে পৌঁছয়। গতকালও আমরা লক্ষ্য করেছিলাম মৃতদেহ থেকে রক্ত বেরিয়ে আসছিল। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছিল। আজও সেই একই ছবি দেখলাম আমরা। মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য যতটুকু করা প্রয়োজন তা করা হয়নি। যেভাবে মৃতদেহ পাঠানো হচ্ছে আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি।"
তিনি আরও বলেন, "এই শ্রমিকদের জন্যই রেলের ব্রিজ তৈরি হচ্ছে। অথচ এই শ্রমিকদের সামান্য প্রাপ্য সম্মানটুকু দেওয়া হচ্ছে না। গতকালই আমি রেলের অফিসারদের জানিয়েছিলাম ওই 18 জনের মৃতদেহকে যেভাবে পাঠানো হয়েছিল, সেভাবে যেন বাকি মৃতদেহগুলিকে না-পাঠানো হয়। আমরা এনিয়ে রেলমন্ত্রকে লিখিত অভিযোগ জানাব। সুযোগ পেলে রাজ্যসভাতেও এনিয়ে প্রশ্ন তুলব।"
আরও পড়ুন: 57 ঘণ্টা পর শ্রমিকদের দেহ পৌঁছল মালদায়, সংরক্ষণ নিয়ে রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ শাসকদলের