মালদা, 20 অগস্ট: আড়াই বছরের শিশুকে বিছানায় আছাড় দিচ্ছেন জেঠিমা ৷ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই মালদার একটি ভিডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হয় নেটদুনিয়ায় (যদিও ইটিভি ভারত এই ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি) ৷ যাতে দেখা যাচ্ছে, আড়াই বছরের ঘুমন্ত একটি বাচ্চাকে এক মহিলা বিছানা থেকে তুলে মেঝেতে দু'বার আছাড় দিলেন। তারপর বাচ্চাকে ফের বিছানায় রেখে ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ভিডিয়ো ক্লিপিংসে পরিষ্কার হয় যে, মহিলাটি ওই শিশুর জেঠিমা (Malda Child Torture)। শনিবার অভিযুক্ত জেঠিমাকে গ্রেফতার করার পর আদালতে তোলা হলে বিচারক 14 দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন (Malda District Court) ৷
বাচ্চাটিকে আছাড় দেওয়ার ভিডিয়ো ক্লিপটি (Video Clip) দেখে বৃহস্পতিবার শিউড়ে উঠেছিলেন নেটিজেনরা। তোলপাড় হয়ে যায় পুরাতন মালদার যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের রানির গড় গ্রাম। অভিযুক্ত মহিলা আবার তৃণমূলের প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের স্ত্রী। ঘটনার জেরে গ্রামে বসে সালিশি সভা। সভায় অভিযুক্ত জেঠিমাকে গ্রাম ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়।
অভিযুক্ত জেঠিমা গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য অচিন্ত্য বিশ্বাসের স্ত্রী শিবানী দেবী। ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা মালদা থানায় কোনও অভিযোগ জানাননি। অভিযোগ দায়ের করতে বাধা দেওয়া হয় শিশুটির মা এবং বাবাকেও। কিন্তু অনেক ভাবনাচিন্তা করে শুক্রবার রাতে বড় জায়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শিশুটির মা। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে শিবানী দেবীকে গ্রেফতার করা হয় শনিবার। ভারতীয় দণ্ডবিধির 307 ধারায় খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে এদিনই তাকে জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘুমন্ত শিশুকে আছড়াচ্ছেন জেঠিমা, সালিশি সভার নিদানে গ্রামছাড়া অভিযুক্ত
শিশুটির মা অভিযোগের সুরে বলেন, "এই ঘটনা এক বছর ধরে চলছে। আমার স্বামী মৎস্যজীবী। ও বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরেই এই ঘটনা ঘটত। শেষ পর্যন্ত গত মঙ্গলবার গোটা বিষয়টি পরিষ্কার হয়। শনি আর মঙ্গলবার আমার জায়ের উপর ভূতে ভর করে। সেই অছিলায় সে আমার বাচ্চাকে মারধর করত। এতদিন আমার কথা কেউ বিশ্বাস করত না। গোটা ঘটনা সামনে আসার পরও আমাকে পুলিশে অভিযোগ জানাতে দেওয়া হচ্ছিল না। পরিবারের অমতেই আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। নইলে ছেলের সঙ্গে আমারও ক্ষতি হতে পারত। আমি ওই বাড়িতে আর থাকব না। বড় জা ভবিষ্যতেও আমাদের ক্ষতি করতে পারে।" অন্যদিকে আদালতে যাওয়ার পথে শিবানীদেবী বলেন, "বাচ্চাটাকে কেন যে মারলাম, আমি নিজেই জানি না। ওকে এর আগে কখনও মারিনি। আমার ভুল হয়ে গিয়েছে।"