মালদা, 2 নভেম্বর : পারিবারিক বিবাদের জেরে ভাইয়ের পেটে শাবল ঢুকিয়ে দিল আরেক ভাই ৷ শুধু তাই নয়, এনিয়ে বাড়ি ভাঙচুর সহ মহিলাদের শ্লীলতাহানির অভিযোগও উঠেছে ৷ ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদা পৌরসভার 13 নম্বর ওয়ার্ডের সামুণ্ডাই কলোনিতে৷ এই ঘটনায় মালদা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷ ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷ তবে মূল অভিযুক্তের সন্ধান পাওয়া যায়নি ৷
সামুণ্ডাই কলোনির দীর্ঘদিনের বাসিন্দা অশোক চক্রবর্তী ৷ বাড়ি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অশোকবাবুর বিবাদ চলছে ভাই কৃষ্ণ চক্রবর্তীর সঙ্গে ৷ কৃষ্ণবাবুও ওই এলাকাতেই বসবাস করেন ৷ তাঁদের এই ঝামেলা আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে ৷ পুলিশে দায়ের করা অভিযোগপত্রে অশোকবাবু জানান, গতকাল রাতে তাঁর ভাই কৃষ্ণ, ভাতৃবধূ টুম্পা, তাঁদের ছেলে অঙ্কুশসহ বেশ কয়েকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁদের বাড়িতে আসে ৷ ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয় ৷ ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বলে৷ অশোকবাবুর পরিবার যেতে অস্বীকার করলেই তাঁরা বাড়ি ভাঙচুর করে ৷ তাঁর স্ত্রী চন্দনাকে বাঁশ ও লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করে এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে ৷ মারে স্ত্রীর নাক ফেটে যায় ৷ সেই দৃশ্য দেখে তাঁর বড় ছেলে গোপাল মাকে বাঁচাতে গেলে অভিযুক্তরা তাঁর পেটে শাবল ঢুকিয়ে দেয়৷ এরপর অভিযুক্তরা তাঁদের ঘরে থাকা 20 হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় ৷ আজ তিনি গোটা ঘটনা জানিয়ে মালদা থানায় ছয় জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন ৷
অশোকবাবুর এক ছেলে পাপাই চক্রবর্তী বলেন, “গতকাল রাত দশটা নাগাদ কাকা ও তাঁর ছেলে কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের বাড়ির বাইরে ডাকে৷ আমার বাবাকে এই জায়গা ছেড়ে দিতে বলে ৷ এই জায়গা নিয়ে কাকাদের সঙ্গে 2011 সাল থেকে আমাদের মামলা চলছে ৷ আমরা মামলায় জিতেও গিয়েছি ৷ কালীপুজোর পর আদালত এই জায়গার দখল আমাদের দেবে ৷ গতকাল কাকারা আমার বাবা-মাকে বেধড়ক মারধর করে ৷ মায়ের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে ৷ বাড়ি ভাঙচুর করে ৷ অঙ্কুশ দাদার পেটে শাবল ঢুকিয়ে দেয় ৷ দাদা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৷ ওরা আদালতের রায় মানতে চাইছে না ৷ গতকালের ঘটনায় বাবা মালদা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ৷ আমরা ওদের কঠোর শাস্তি চাই৷”
এদিকে কৃষ্ণবাবুর স্ত্রী টুম্পা চক্রবর্তী বলেন, "এটা আমাদের বাড়ি ৷ ভাসুররা জোর করে এই বাড়ির দখল নিয়েছে ৷ গতকাল রাতে ওদের বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে ৷ কে বা কারা ভাঙচুর করেছে আমরা জানি না ৷ আমাদের চক্রান্ত করে ফাঁসানো হচ্ছে ৷ এই ঝামেলা নিয়ে এর আগে এলাকাতেও বিচার বসেছিল৷ কিন্তু বিচারের রায় তারা মানে না৷ ওর ছেলের কিছুই হয়নি ৷ ও এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে ৷ আমরা আমাদের জায়গার দখল চাই ৷ এর বেশি কিছু বলার নেই ৷"
মালদা থানার পুলিশ জানিয়েছে, গোটা ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি ৷