মালদা, 29 জুন : কোরোনা সংক্রমিত হয়ে কলকাতায় মৃত্যু হয়েছে জেলার এক ব্যক্তির ৷ অভিযোগ, মৃতের পরিবারের সদস্যদের সোয়াবের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেনি স্বাস্থ্যদপ্তর ৷ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কালিয়াচক 2 ব্লকের মোথাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের আমলিতলা গ্রামের বাসিন্দারা ৷ এদিকে, জেলাজুড়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ৷ সংক্রমিত চিকিৎসক, রেলের উচ্চপদস্থ কর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী, অবসরপ্রাপ্ত BSF জওয়ান ও একাধিক সিভিক পুলিশকর্মী ৷
গত 24 ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে সংক্রমিত 26 জন ৷ এখনও অবধি মোট সংক্রমিতের সংখ্যা 590 ৷ সংক্রমণের গতির দাপটেই ঘুম উড়েছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের ৷ চিন্তায় ইংরেজবাজার পৌর কর্তৃপক্ষ ৷ কারণ, শুধু মালদা শহরেই সংক্রমিত 84 জন ৷ তবে, গতকাল পর্যন্ত 307 জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৷ উত্তরবঙ্গে মালদাতেই কোরোনার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি ৷ গতকাল শহরের এক নার্সিংহোমের মালিক তথা খ্যাতনামা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ কোরোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৷ চিকিৎসার জন্য তাঁকে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷ সিল করে দেওয়া হয়েছে তাঁর নার্সিংহোমটি ৷ সংক্রমিত হয়েছেন রেলের এক উচ্চপদস্থ কর্মী ৷ রেল কলোনি এলাকায় তাঁর একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর রয়েছে ৷ তিনি নিজে বেশ কিছুটা সময় ওই দোকান সামলাতেন ৷ ঘটনার কথা জানার পর ওই কর্মীর দপ্তরের 19 জনকে কোয়ারানটিনে পাঠিয়েছে রেল ৷ এদিকে, পুরাতন মালদার ঝিমুলি গ্রামের বাসিন্দা এক অবসরপ্রাপ্ত BSF জওয়ান সংক্রমিত হয়েছেন ৷ ইংরেজবাজার থানায় কর্মরত 3 সিভিক পুলিশকর্মীরও সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৷ পুলিশ লাইনে নিরপত্তায় নিযুক্ত 4 সিভিক পুলিশকর্মীর কোরোনা পজ়িটিভ বলে জানা গিয়েছে ৷ সব মিলিয়ে পুলিশ লাইনের 50 জন সংক্রমিত ৷ পরিস্থিতি দেখে পুলিশ ব্যারাক অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পুলিশ প্রশাসন ৷ এছাড়াও কোরোনা সংক্রমিত হয়েছেন এক মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী ৷
এদিকে, গত 27 জুন কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে জেলার এক কোরোনা সংক্রমিতের মৃত্যু হয়েছে ৷ মৃতের নাম সমর সাহা ৷ বয়স 55 বছর ৷ বাড়ি কালিয়াচক 2 ব্লকের মোথাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের আমলিতলা গ্রামে ৷ সমরবাবু দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগে ভুগছিলেন ৷ 2007 ও 2015 সালে তাঁর হৃদ্যন্ত্রে অস্ত্রোপচার হয় ৷ গত 20 জুন বুকে ব্যথা অনুভব করায় তাঁকে মালদা শহরের একটি নার্সিংহোমে ভরতি করা হয় ৷ 23 জুন তাঁকে ভরতি করা হয় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ৷ সেখানেই তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষার পর জানা যায় তিনি কোরোনা আক্রান্ত ৷ সেদিন বিকেলেই মারা যান তিনি ৷ এর মধ্যে গতকাল সমরবাবুর ছেলে সহ 4 আত্মীয় জেলায় ফেরেন ৷ তাঁরা জানান, আতঙ্কে রয়েছেন ৷ তাঁরা চান, দ্রুত তাঁদের সোয়াব পরীক্ষা হোক ৷ যদিও স্বাস্থ্যদপ্তর এই বিষয়ে যোগাযোগ করেনি বলে অভিযোগ করেন ৷
এই বিষয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কৌশিক মিস্ত্রি বলেন, "আমরা ঘটনাটি জানতে পেরেছি ৷ ওই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের লালারস সংগ্রহ করা হবে ৷ অন্তত 72 ঘণ্টা পর লালা সংগ্রহ করার নিয়ম ৷ মঙ্গলবারের মধ্যেই সেই কাজ করা হবে ৷ মৃতের সংস্পর্শে আর কারা এসেছিল, খোঁজ চালানো হচ্ছে ৷"