মালদা, 3 জুন : বোমাবাজিতে উত্তপ্ত রতুয়া ৷ গতরাতে ঘটনাটি ঘটেছে রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের চাঁদমণি 1 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিট্টাহার গ্রামে ৷ বোমার আঘাতে আহত হয়েছেন এক মহিলা সহ তিনজন ৷ তাঁদের মধ্যে একজনকে রাতেই স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে ৷ ঘটনার প্রেক্ষিতে রতুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্তের পরিবারের লোকজন ৷ তাঁদের দাবি, এর পিছনে রয়েছে তৃণমূলের হাত ৷ তা স্বীকার করে নিয়েছেন ব্লক তৃণমূল সভাপতিও ৷
ঘটনার সূত্রপাত রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ ৷ এখন জমি থেকে বোরো ধান ঘরে তোলা হচ্ছে ৷ সেই ধান তড়িঘড়ি মাড়াই ও সাফাইও করা হচ্ছে ৷ কারণ, একদিনের অতিবৃষ্টিতে জলে ডুবে যাওয়ায় ধানের পরিস্থিতি খারাপ ৷ তাই এখন রাতেও কাজ করছেন চাষি ও শ্রমিকরা ৷ গতকাল রাতে বাড়ির পাশে জমি থেকে ধান ঘরে নিয়ে আসছিলেন সিট্টাহার গ্রামের একটি পরিবারের পুরুষ ও মহিলা সদস্যরা ৷ সেই সময় ধান সাফাই করছিল তাঁদের প্রতিবেশী এক পরিবার ৷ ধানের গুঁড়ো ওড়া নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ বাধে ৷ সেই বিরোধ থেকেই বোমাবাজি শুরু হয়ে যায় ৷
আক্রান্ত পরিবারের তরফে কওসর আলি বলেন, “আমি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির এজেন্ট ছিলাম ৷ সেই সময় থেকেই আমার সঙ্গে আমার পরিবারের উপর নজর ছিল প্রতিবেশী সামসুল হকের ৷ তারা তৃণমূল করে ৷ এর আগেও তারা আমাদের উপর আক্রমণ চালানোর ছক কষেছিল ৷ কিন্তু সফল হতে পারেনি ৷ গতকাল রাতে আমার পরিবারের সদস্যরা বাড়ির পাশের জমি থেকে ধান ঘরে নিয়ে আসছিল ৷ সেই সময় সামসুলরা বাড়ির ছাদে ধান ওড়াচ্ছিল ৷ ধানের গুঁড়ো চোখেমুখে এসে পড়ছিল ৷ তারই প্রতিবাদ করে আমার বাড়ির লোকজন ৷ এনিয়ে বচসা শুরু হয় ৷ হঠাৎ সামসুল, ওবাইদুর আর তসিরুদ্দিন বোমাবাজি শুরু করে দেয় ৷ সামসুল বোমা ও তার মশলা সরবরাহ করে ৷ বোমার আঘাতে আমারক স্ত্রী শাহনওয়াজ় পারভিন, ভাই এমাদুর রহমান ও দাদা মাজহারুল হক আহত হয়েছে৷ দাদার আঘাত গুরুতর৷ তাকে রতুয়া গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে মালদা মেডিকেল রেফার করা হয়েছে৷ অল্প আহত হয়েছে বোন আয়েষা খাতুনও ৷”
আরও পড়ুন : টিকাকরণের জের, রক্তশূন্য মালদা হাসপাতাল; চিন্তা বাড়ছে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে
এই নিয়ে অভিযুক্তদের কোনও প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও রতুয়া 1 নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি ফজলুল হক দাবি করেন, “এর মধ্যে বিজেপির কোনও গল্প নেই ৷ সবাই আমাদের দলেরই লোক ৷ ঘটনাটি পারিবারিক ৷ দুই তুতো ভাইয়ের মধ্যে ঝামেলা ৷ ধান ওড়ানো নিয়ে বোমাবাজি হয়েছে ৷ তৃণমূলের লোকজনই এর সঙ্গে যুক্ত ৷ এতে বিজেপির কোনও যোগ নেই ৷ এর মধ্যে রাজনৈতিক রং দেখা ঠিক নয় ৷ তবে বোমাবাজি করে এরা অন্যায় করেছে ৷ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ আইনমাফিক ব্যবস্থা নেবে ৷”
অভিযোগের ভিত্তিতে গোটা ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে রতুয়া থানার পুলিশ ৷ তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি ৷