মালদা, 18 এপ্রিল : উত্তরপ্রদেশের কানপুর থেকে পুলিশের সাহায্যে ঘরে ফিরলেন জেলার 25 জন পরিযায়ী শ্রমিক। এই শ্রমিকরা উত্তরপ্রদেশ থেকে বিহার হয়ে ঝাড়খণ্ড সীমান্তে পেরিয়ে রাজ্যে ফিরলেন শনিবার। এর মধ্যে পথে একাধিকবার তাঁদের শারীরিক পরীক্ষা করে বিভিন্ন রাজ্য প্রশাসন। এমনকী মাইথনে 16 দিনের কোয়ারানটাইন কাটিয়ে চিকিৎসকের শংসাপত্র নিয়ে তবেই তাঁরা জেলায় ফিরেছেন বলে দাবি করেন শ্রমিকরা। এদিকে উত্তরপ্রদেশের সরকারি থার্মাল প্ল্যান্টে কাজ করা জেলার 25 জন শ্রমিকের ঘরে ফেরা নিয়ে একপ্রস্থ নাটকও হয়ে গেল এদিন। আজ দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার যে বাসে করে তাঁরা মালদায় আসেন৷ সেই বাসের চালক শ্রমিকদের শহরের রথবাড়ি মোড়েই নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে৷ শেষ পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশের সহযোগিতায় বাড়ি ফিরতে সক্ষম হন পরিযায়ী শ্রমিকরা। এক্ষেত্রে সাহায্য করেন জেলার ট্রাফিক OC তরুণ রায়৷
লকডাউনে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়েছেন মালদা জেলার অসংখ্য শ্রমিক৷ জেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, এই মুহূর্তে মালদা জেলার প্রায় সাড়ে 12 হাজার পরিযায়ী শ্রমিক বিভিন্ন রাজ্যে আটকে রয়েছেন৷ সেভাবেই উত্তরপ্রদেশের কানপুরে সরকারি থার্মাল প্ল্যান্টে কাজ করতে গিয়ে আটকে পড়েন এই 25 জন শ্রমিক৷ এদের বাড়ি রতুয়া 1 ব্লকের কাণ্ডারণ এলাকায়। এদিকে, আজ দুপুরে মালদা শহরের রথবাড়ি মোড়ে এসে দাঁড়ায় দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার একটি বাস৷ বাস থেকে নামতে শুরু করেন শ্রমিকরা৷ সেই সময় ঘটনাস্থানেই ছিলেন জেলার ট্রাফিক OC তরুণ সাহা৷ এরপর তিনি এগিয়ে যান বাসটির কাছে। এবং জানতে পারেন, এই শ্রমিকরা কানপুর থেকে আসছেন৷ শ্রমিকরাই তাঁকে জানান, আসার পথে তিন রাজ্যের প্রশাসন তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছে৷ সবশেষে তাঁরা মাইথন এসে পৌঁছান। সেখান থেকে রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দপ্তর উদ্যোগে তাঁদের পশ্চমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার এই বাসটিতে করে মালদায় ফেরানোর ব্যবস্থা কর হয়৷ কিন্তু, বাসচালক রথবাড়ি মোড়েই তাঁদের নামিয়ে দেয়৷ এর ফলে চিন্তায় পড়েছিলেন শ্রমিকরা। যেহেতু লকডাউনে যানবাহন বন্ধ, বাড়ি ফেরার অন্য কোনও উপায় নেই। যদিও জেলার ট্রাফিক OC তরুণ রায়ের সাহায্যে সেই সমস্যার সমাধান হয়৷ তরুণবাবুর নির্দেশে বাস চালক শ্রমিকদের বাড়ির কাছাকাছি সামসী মোড় অবধি পৌঁছে দেয়।
এক পরিযায়ী শ্রমিক গোপাল মুসহর বলেন, “আমরা কানপুর থেকেও কিছুটা দূরে সরকারি থার্মাল প্ল্যান্টে শ্রমিকের কাজ করতাম৷ লকডাউনে কাজ বন্ধ৷ সেখানে পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের 80 জন শ্রমিক ছিলাম৷ আজ বিভিন্ন রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের সাহায্যেই মালদায় ফিরতে পারলাম।“
ওই শ্রমিক আরও বলেন, “বাস চালককে বলা দেওয়া ছিল আমাদের বাড়ি অবধি পৌঁছে দিতে৷ কিন্তু চালক রথবাড়ি মোড়ে নামিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল৷ শেষে ট্রাফিক পুলিশ অফিসার এসে ওই বাসেই আমাদের বাড়ি অবধি যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।“
যদিও বাসচালক সুমন দাসের দাবি, “আমাকে বলা হয়েছিল এদের মালদা শহরের রথবাড়ি মোড়ে নামিয়ে দিতে৷ সেইমতো আমি এদের রথবাড়ি মোড়ে নামিয়ে দিয়েছিলাম৷”